ঢাকা সেনানিবাসে এনআইডি বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন

আগের সংবাদ

যশোর বোর্ডের হিসাব থেকে আড়াই কোটি টাকা উত্তোলন : জালিয়াতির অভিযোগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

পরের সংবাদ

বিদ্যালয় খুলেছে প্রায় এক মাস : অনেক প্রাথমিক শিক্ষার্থী এখনো ফেরেনি ক্লাসে

প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে ১৭ মাস ধরে বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পর প্রায় এক মাস হয়ে গেছে। কিন্তু এখনো হাওর-বাঁওড়ের জেলা সুনামগঞ্জের অনেক শিক্ষার্থী ক্লাসে ফেরেনি।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, যারা আসছে না তাদের অভিভাবকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও বিভিন্ন অজুহাত দিচ্ছেন তারা। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের দেয়া তথ্য অনুযায়ী জেলায় গড়ে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী উপস্থিতি ৭৭.১৭ এবং প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের গড় উপস্থিতি ৭৪.৯২ শতাংশ।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) সুনামগঞ্জ সদর উপজোলায় প্রথম শ্রেণির মোট ৫ হাজার ১৯৯ জন শিক্ষার্থীর উপস্থিতি ছিল ৩ হাজার ৬৩৯ জন, পর্যায়ক্রমে দোয়ারাবাজারে ৪ হাজার ৫০১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩ হাজার ৪৮৮, বিশ্বম্ভরপুরে ১ হাজার ৬৩৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১ হাজার ২১৮, ছাতকে ১৬ হাজার ৫৪৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১০ হাজার ৭৫৪, তাহিরপুরে ১০ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে ৮ হাজার ৭৫০, জামালগঞ্জে ৬ হাজার ১৫০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৪ হাজার ১০৭, ধর্মপাশায় ৫ হাজার ৮৩৬ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩ হাজার ৯১০, শাল্লায় ২ হাজার ৯৬০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ২ হাজার ২৪২, দিরাইয়ে ৬ হাজার ১৬৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩ হাজার ৫১১, জগন্নাথপুরে ৮ হাজার ৩৫৪ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৭ হাজার ৮২৩, দক্ষিণ সুনামগঞ্জে ৩ হাজার ৪২১ শিক্ষার্থীর মধ্যে ২ হাজার ৫৭৫ জন উপস্থিত ছিল।
প্রাথমিকের প্রথম শ্রেণি ও দ্বিতীয় শ্রেণির পাঠদান সপ্তাহে একদিন হয়। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পাঠদান সপ্তাহে ২ দিন হয়। তবে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলে প্রতিদিন। পুরো জেলায় একই দিনে (মঙ্গলবার) পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল পর্যায়ক্রমে সুনামগঞ্জ সদরে ৫ হাজার ১৮৭ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩ হাজার ৭২২ জন, দোয়ারাবাজারে ৫ হাজার ১৮০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৪ হাজার ৬, বিশ্বম্ভরপুরে ৩ হাজার ৬৮০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ২ হাজার ৭২৩, ছাতকে ৯ হাজার ৫৩৭ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৬ হাজার ৮৭০, তাহিরপুরে ৬ হাজার ৮০৭ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫ হাজার ৬৫৭, জামালগঞ্জে ৩ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ২ হাজার ৬৯৫, ধর্মপাশায় ৪ হাজার ৯৬১ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩ হাজার ৫২২, শাল্লায় ১ হাজার ৭১০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১ হাজার ৩৩৩, জগন্নাথপুরে ৬ হাজার ৮৯২ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৬ হাজার ২৮৩ ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ ৩ হাজার ৩২৯ শিক্ষার্থীর মধ্যে ২ হাজার ৬৩২ জন উপস্থিত ছিল।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নে অচিন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দূরত্ব উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে দুই কিলোমিটার। মহামারি করোনার জন্য অন্যান্য বিদ্যালয়ের মতো প্রায় ১৭ মাস বন্ধ ছিল বিদ্যালয়টিও। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী খুলে দেয়ায় শিক্ষার্থীদের পদচারণায় বিদ্যালয়টি মুখরিত হয়েছে। তবে খুলে দেয়ার পর ২৬ দিন পার হলেও অনেক শিক্ষার্থী এখনো বিদ্যালয়ে আসছে না।
অচিন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অর্চনা রানী মজুমদার বলেন, ৬০ থেকে ৭০ ভাগ শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে। নিয়মিত বিদ্যালয় না থাকায় এরকম হয়েছে। শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসছে না। যারা আসছে না তাদের অভিভাবকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা বিভিন্ন অজুহাত দিচ্ছেন। কেউ বলছেন বাড়িতে নেই, বেড়াতে গেছে। আবার কেউ বলছেন, অসুস্থ রয়েছে। সুস্থ হলে বিদ্যালয়ে ফিরবে।
ধর্মপাশা উপজেলার চামরদানী ইউনিয়নের কায়েতকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রমা সান্যাল বলেন, গড়ে প্রতিদিন ৮৫ ভাগ শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে। বাকি শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। তিনি আরো বলেন, করোনাকালে অনেক পরিবার কাজ হারিয়ে শহরে চলে গেছে। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। বলেছে শিক্ষার্থীকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেবে। আশা করি আগামী ১০ দিনের ভেতর শিক্ষার্থীদের কাক্সিক্ষত উপস্থিতি পাব।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এস এম আব্দুর রহমান বলেন, অনেক শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসছে না। সিজনাল জ¦রের অজুহাত দিচ্ছে তারা। অনেক শিক্ষার্থীর পরিবার কর্মসংস্থানের জন্য বাইরে চলে গেছে। কিছু শিক্ষার্থী মাদ্রাসাতেও চলে গেছে। তবে তাদের বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনতে কাজ করছি আমরা। এজন্য উপবৃত্তি ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পরিবারকে সরকারি বিভিন্ন সাহায্যের আওতায় আনতে বলেছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়