ঢাকা সেনানিবাসে এনআইডি বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন

আগের সংবাদ

যশোর বোর্ডের হিসাব থেকে আড়াই কোটি টাকা উত্তোলন : জালিয়াতির অভিযোগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

পরের সংবাদ

বাঙালি সামরিক অফিসারদের স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণ

প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

পরাধীন ব্রিটিশ-ভারত থেকে পাকিস্তানের কালো অধ্যায় পেরিয়ে জন্ম হয় বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট্রের। এই মহান অর্জনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ইতিহাসের মোড় ঘোরানো নানা ঘটনা, যার কারিগর হিসেবে কেউ আখ্যায়িত হয়েছেন নায়কের অভিধায়; কেউবা আবির্ভূত হয়েছেন খলনায়কের চরিত্রে। ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে সেসব ঘটনা ও তার নায়ক-খলনায়কদের কার কী ভূমিকা, তাই নিয়েই অধ্যাপক আবু সাইয়িদের গ্রন্থ ‘যেভাবে স্বাধীনতা পেলাম’। স¤প্রতি ভোরের কাগজ প্রকাশন থেকে বের হয়েছে বইটি। এ বই থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রতিদিন কিছু অংশ তুলে ধরা হচ্ছে ভোরের কাগজের পাঠকদের জন্য।
দু’একজন ব্যতিক্রম ব্যতীত সামরিক বাহিনীর অধিকাংশ অফিসার বিশেষ করে অধিনায়করা যারা বিভিন্ন স্থানে সামরিক নেতৃত্বের দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন তারা সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণে ব্যর্থ হন।
বস্তুত বাঙালি সেনাবাহিনীকে ‘বিভক্ত করো ও আঘাত করো’ নীতিতে পাকিস্তানি কার্যক্রম শুরু হলে বাঙালি সেনা অফিসাররা আত্মরক্ষামূলক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু সেদিনের অগ্নিগর্ভ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সংগ্রামী জনতার প্রচণ্ড চাপে ও জনগণের আকাক্সক্ষার সঙ্গে সঙ্গতি রক্ষার্থে কার্যক্ষেত্রে তাদের কিছু ক্ষেত্রে যুদ্ধ অংশগ্রহণ ব্যতীত বিশেষ কোনো উপায় ছিল না।
পাকিস্তানি সেনা কাঠামোর মধ্যে বেড়া ওঠা বাঙালি সেনা অফিসার ও অধিকাংশ সদস্যের মনে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর নৃশংসতা, শক্তিক্ষমতা সম্পর্কে কোনোই অস্পষ্টতা ছিল না, ফলে ধরতে গেলে অসম যুদ্ধের পরিণতি সম্পর্কে তারা ছিলেন সতর্ক। ফলে সীমান্তের দিকে দ্রুত গতিতে ধাবিত হতে তাদের সিদ্ধান্তে অস্পষ্টতা ছিল না।
চট্টগ্রামের জনগণ, রাজনৈতিক নেতৃত্ব, স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী, বিএলএফ সদস্য, ইপিআর, পুলিশ, আনসার, প্রাক্তন সামরিক বাহিনীর সদস্যরা যখন সশস্ত্র যুদ্ধে লিপ্ত, তখন চট্টগ্রামে সব ইউনিট ও অফিসাররা একযোগে ঐক্যবদ্ধ কমান্ডে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হননি। বিচ্ছিন্নভাবে প্রতিরোধ বা আত্মরক্ষায় তারা ব্যস্ত ছিলেন। মেজর জিয়া বুঝতে পেরেছিলেন ছিন্ন ভিন্ন মানসিকতা নিয়ে প্রতিরোধ সংগ্রামে বিজয়ী হওয়া যাবে না। ফলে কালুরঘাট হয়ে রামগড়ে যে বিক্ষিপ্ত প্রতিরোধ চলছিল তা পাশ কাটিয়ে তিনি ভারত সীমান্তে ঢুকে পড়েন।
মেজর কে. এম. শফিউল্লাহ জয়দেবপুরে সশস্ত্র প্রতিরোধ দৃঢ়তর না করে, রাতারাতি টাঙ্গাইল হয়ে ময়মনসিংহ এবং ময়মনসিংহ থেকে ঢাকা আগমনের বীরোচিত অথচ হঠকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণে এবং তার নিস্ফল পরিসমাপ্তির মধ্যেই সামরিক কৌশল ও নেতৃত্বের স্বাক্ষর নিঃশেষিত করলেন। খালেদ

মোশাররফ অত্যন্ত সতর্ক ও সচেতন থাকা সত্ত্বেও পূর্বাহ্নে বিদ্রোহী সেনাসদস্যদের সংগঠিত করতে ব্যর্থ হলেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ট্রাপে নিজস্ব সেনাবাহিনী হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে প্রতিরোধ কার্যক্রমে বলিষ্ঠ ভূমিকা গ্রহণে অপারগ হয়ে পড়লেন।
মেজর ওসমান চৌধুরীর ধারণাই ছিল না পাকিস্তান সামরিক বাহিনী কী করতে যাচ্ছে, কুষ্টিয়ায় যুদ্ধ শুরু হয়েছে অথচ যুদ্ধ সম্পর্কে তার না ছিল কোনো পরিকল্পনা না ছিল উদ্যোগ।
তবে এ কথা স্পষ্টভাবেই বলতে হয় সামরিক অফিসারদের মধ্যে ক্যাপ্টেন হারুন আহমদ চৌধুরী, ক্যাপ্টেন এম এস এ ভুঁইয়া, লে. মাহফুজুর রহমান, মেজর মীর শওকত আলী, মেজর রফিক-উল-ইসলাম, মেজর শাফাতাত জামিল, ক্যাপ্টেন আবদুল গাফফার, ক্যাপ্টেন আইনুদ্দিন, লেফটেন্যান্ট ইমামুজ্জামান, লে. গোলাম হেলাল মোরশেদ খান, ক্যাপ্টেন এম এ মতিন, মেজর চিত্তরঞ্জন দত্ত, ক্যাপ্টেন আবদুর রব, ক্যাপ্টেন এ আর আর আজম চৌধুরী, ক্যাপ্টেন হাফিজ উদ্দিন, মেজর আবদুল হালিম, ক্যাপ্টেন আনোয়ার হোসেন, লে. আবদুস সালাম, ক্যাপ্টেন গিয়াস, ক্যাপ্টেন মেহেদী আলী ইমামসহ বাঙালি সামরিক অফিসাররা মাত্রাভেদে যথারীতি প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। তবে তাদের মধ্যে অধিকাংশই প্রস্তুতিহীন অবস্থা এবং পারিপার্শ্বিকতার চাপে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন।
আগামীকাল প্রকাশিত হবে
‘রাজনৈতিক নেতৃত্বকে তোয়াক্কা
না করার মনোভাব’
‘যেভাবে স্বাধীনতা পেলাম’- বইটি পাওয়া যাচ্ছে ভোরের কাগজ প্রকাশনে (ভোরের কাগজ কার্যালয়, ৭০ শহীদ সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা)। এ ছাড়া সংগ্রহ করা যাবে নযড়ৎবৎশধমড়লঢ়ৎড়শধংযধহ.পড়স থেকেও।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়