ঢাকা সেনানিবাসে এনআইডি বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন

আগের সংবাদ

যশোর বোর্ডের হিসাব থেকে আড়াই কোটি টাকা উত্তোলন : জালিয়াতির অভিযোগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

পরের সংবাদ

ফাইনালে ফ্রান্স-স্পেন

প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : উয়েফা নেশন্স লিগের সেমিফাইনালে গতকাল রোমাঞ্চকর জয় পেয়েছে ফ্রান্স। বেলজিয়ামের বিপক্ষে ম্যাচের প্রথমার্ধে ২-০ গোলে পিছিয়ে থাকা এমবাপ্পেরা ঘুরে দাঁড়ায় ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে। একে একে প্রতিপক্ষের জালে তিনবার বল জড়িয়ে তারা জয় তুলে নেয় ৩-২ গোল ব্যবধানে। একই সঙ্গে ফরাসিরা পৌঁছে যায় উয়েফা নেশন্স লিগের ফাইনালে। শিরোপার লড়াইয়ে তারা ফাইনালে মুখোমুখি হবে স্পেনের। এর আগে উড়তে থাকা ইতালিকে গত বৃহস্পতিবার ২-১ গোল ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে স্পেন। ফলে ইতালির আন্তর্জাতিক ম্যাচে টানা অপরাজিত থাকার রেকর্ডের যাত্রা ৩৭-এ স্থির হয়ে যায়।
এর আগে দ্বিতীয় সেমিফাইনাল ম্যাচে বল দখলে ফ্রান্স এগিয়ে থাকলেও আক্রমণে আধিপত্য করে ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দল বেলজিয়াম। বল দখলে প্রায় সমতার ম্যাচে গোলের উদ্দেশ্যে ১৬টি শট নেয় ফ্রান্স, যার ছয়টি থাকে লক্ষ্যে। আর বেলজিয়ামের ১১ শটের ছয়টি ছিল লক্ষ্যে। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ের এক ও চার নম্বর দলের মধ্যে লড়াইটা প্রত্যাশিতভাবেই শুরু হয়। চলতে থাকে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ।
ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে প্রথম সুযোগ পায় বেলজিয়াম, তবে কেভিন ডে ব্রুইনের শট দারুণ রিফ্লেক্সে ঝাঁপিয়ে ঠেকান ফরাসি গোলরক্ষক উগো লরিস। ৩ মিনিট পর পাল্টা আক্রমণে দ্রুত গতিতে বিপদসীমায় ঢুকে পড়েন এমবাপ্পে। তার প্রচেষ্টা অবশ্য রুখে দেন ডিফেন্ডার জেসন দিনায়ার। শুরুর গতি কিছুক্ষণ পর কমে আসে। তবে মাঠের উভয় দিকে আক্রমণ চলতে থাকে সমানতালে। আক্রমণে বেলজিয়াম এগিয়ে থাকলেও প্রতিপক্ষের জমাট রক্ষণে নিশ্চিত সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না তারা। ডেডলক অবশেষে ভাঙে ৩৭তম মিনিটে। ডে ব্রুইনের পাস ধরে বাঁ দিক দিয়ে ডি-বক্সে ডুকে নিখুঁত শটে প্রতিপক্ষের দুই জনের মাঝ দিয়ে বল জালে পাঠান কারাসকো। আগেই অন্যদিকে ঝুঁকে পড়া লরিস পোস্ট ঘেঁষে যাওয়া বল ঠেকানোর সুযোগই পাননি।
ধাক্কা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর আগেই দ্বিতীয় গোল হজম করে ফ্রান্স। ডে ব্রুইনের পাস দুই পায়ের মাঝ দিয়ে ছেড়ে দেয়ার ফাঁকেই সঙ্গে লেগে থাকা প্রতিপক্ষকে ফাঁকি দেন লুকাকু। এরপর ক্ষিপ্র গতিতে বলের পিছু নিয়ে দুরূহ কোণ থেকে বুলেট গতির শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন চেলসি ফরোয়ার্ড। প্রথমার্ধে বিবর্ণ অতোয়ান গ্রিজম্যান ৫৮তম মিনিটে যে সুযোগ মিস করেন, নিশ্চিতভাবেই সেই হতাশা অনেক দিন তাড়া করবে তাকে। ডান দিক দিয়ে একজনকে কাটিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে এমবাপ্পে পাস দেন গোলমুখে।
তিন গজ দূরে বল পেয়েও শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে পোস্টের বাইরে মারেন গ্রিজম্যান। মরিয়া ফ্রান্সের মুখে চার মিনিট পর হাসি ফোটান এমবাপ্পে-বেনজেমা জুটি। পিএসজি তারকা এবার বাঁ দিক দিয়ে একজনকে কাটিয়ে ডি-বক্সে বেনজেমাকে খুঁজে নেন। প্রতিপক্ষের চারজনে ঘিরে থাকা অবস্থায় ঠাণ্ডা মাথায় গোলপোস্ট পেছনে রেখে বল ধরে শরীর ঘুরিয়ে নিচু শটে গোলটি করেন রিয়াল মাদ্রিদ স্ট্রাইকার। গত জুনে ইউরোর শেষ ষোলোয় সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে টাইব্রেকারে শেষ শট নিয়ে মিস করেছিলেন এমবাপ্পে, ছিটকে গিয়েছিল ফ্রান্স। কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন তিনি। ৬৯তম মিনিটে বুলেট গতির স্পট কিকে সেই হতাশায় প্রলেপ দেন এমবাপ্পে। ডি-বক্সে গ্রিজম্যানকে বেলজিয়ান মিডফিল্ডার ইউরি টিলেমানস পেছন থেকে ফাউল করলে ভিএআরের সাহায্যে পেনাল্টি দেন রেফারি। সমতায় ফিরে আরো চাপ বাড়ায় ফরাসিরা। ৭৮তম মিনিটে এগিয়েও যেতে পারত তারা, কিন্তু তাদের প্রথম প্রচেষ্টা রক্ষণে প্রতিহত হওয়ার পর তরুণ মিডফিল্ডার ওহেলিয়ার শট ঠেকিয়ে দেন কোর্তোয়া। ৮৭তম মিনিটে প্রতি-আক্রমণে লুকাকু আবারো জালে বল পাঠালে উল্লাসে মাতে বেলজিয়াম। কিন্তু অফসাইডে ছিলেন তিনি। ২ মিনিট পরই ফ্রি কিকে পোস্ট কাঁপান পল পগবা। এর পরের মিনিটেই থিও এরনঁদেজের গোল। বেলজিয়ামের রক্ষণ বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে ডি-বক্সে পেয়ে যান এসি মিলানের এ ডিফেন্ডার। তার দারুণ শটে বল জালে জড়ালে উল্লাসে ফেটে পড়ে ফ্রান্স। আগামী রবিবার নেশন্স লিগের দ্বিতীয় আসরের শিরোপার লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে ফ্রান্স ও স্পেন। একই দিনে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি হবে ইতালি ও বেলজিয়াম।
এর আগে উয়েফা নেশন্স লিগের প্রথম সেমিফাইনালে উড়তে থাকা ইতালিকে মাটিতে নামিয়ে এনে প্রতিশোধ নেয় স্পেন। তিন মাস আগে ইউরোর সেমিফাইনালেও ইতালিকে প্রায় বোতলবন্দি করেই রেখেছিল স্পেন। কিন্তু দলের তথৈবচ ফিনিশিং জয়ের পথ আগলে দাঁড়িয়েছিল সেদিন। তা না হলে ‘প্রতিশোধের’ কথাই আসত না উয়েফা নেশন্স লিগের সেমিফাইনালে। ইতালির কাছে সেবার টাইব্রেকারে হেরে ইউরো যাত্রা শেষ হয়েছিল স্পেনের। তবে সেই সেমিফাইনালে যা-ই হোক, তার পুনরাবৃত্তি ঘটল না নেশন্স লিগের শেষ চারে। বৃহস্পতিবার তাদের ২-১ গোলে হারিয়ে নিজেদের ইতিহাসে ষষ্ঠ ফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলেছে কোচ লুইস এনরিকের দল। তাতে নিজেদের মাঠেই বিশ্বরেকর্ড ৩৭ ম্যাচের অপরাজেয় যাত্রা শেষ হয়ে গেল ইউরো চ্যাম্পিয়ন ইতালির।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়