ঢাকা সেনানিবাসে এনআইডি বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন

আগের সংবাদ

যশোর বোর্ডের হিসাব থেকে আড়াই কোটি টাকা উত্তোলন : জালিয়াতির অভিযোগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

পরের সংবাদ

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাঁচ ফেভারিট

প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : দিন যত গড়াচ্ছে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ততই এগিয়ে আসছে। ১৭ অক্টোবর বাছাই পর্বের মাধ্যমে শুরু হবে বিশ্বকাপ। দিনের হিসাবে আর মাত্র ১১ দিন বাকি। বিশ্বকাপ শুরু হতে আরো বেশ কয়েক দিন বাকি থাকলেও এখনই হিসাব-নিকাশ চলছে কে জিতবে এবারের বিশ্বকাপ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সর্বশেষ আসর হয়েছিল ২০১৬ সালে। বছরের হিসাবে দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর পর হতে যাচ্ছে চার-ছক্কার লড়াই। তাই তো এবারের বিশ্বকাপ নিয়ে উন্মাদনাটা একটু বেশি।
এবারের আসরটি হতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সপ্তম আসর। এর আগে ছয়টি আসরের মধ্যে ২০০৭ সালে ভারত, ২০০৯ সালে পাকিস্তান, ২০১০ সালে ইংল্যান্ড, ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কা ও সর্বশেষ ২০১৬ সালে দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জয় করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এখন প্রশ্ন উঠছে কোন দেশ এবার বিশ্বকাপ জিতবে? আগেই শিরোপা জয় করা কোনো দেশই কি নেবে বিশ্বকাপ? নাকি সপ্তম বিশ্বকাপের শিরোপা যাবে নতুন কোনো দেশের কাছে। এ আলোচনাই চলছে এখন সর্বত্র। বাংলাদেশের সমর্থকরা এবার স্বপ্ন দেখছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা শিরোপা জয় করবেন। এবার যাদের নিয়ে বাংলাদেশ স্কোয়াড সাজিয়েছে, তাদের নিয়ে আশা করাই যায়।
তবে নির্দিষ্ট কয়েকটি দেশ শিরোপার জন্য ফেভারিট। সে দেশগুলো হলো- ভারত, পাকিস্তান, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রতিটি দেশই শিরোপা জয়ের মতো দল গড়েছে। কিন্তু এ পাঁচটি দেশ অন্যদের চেয়ে এগিয়ে আছে।
ভারত আইসিসির নির্দিষ্ট ওভারের সর্বশেষ দুটি ইভেন্টের সেমিফাইনালে খেলেছে। তারা নিজ ঘরের মাঠে ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলে। এরপর ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে হওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিতে খেলে। তাছাড়া সর্বশেষ আইসিসির টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলেছে। ফলে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তারা অনেকটাই এগিয়ে আছে। ভারত তাদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্কোয়াড সাজিয়েছে তরুণ ও অভিজ্ঞদের মিশেলে। যারা তরুণ আছে, তারা আবার আইপিএলে খেলে থাকেন। ভারতের প্রত্যেকটি ব্যাটসম্যান টি-টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট। আরব আমিরাত পাকিস্তানের হোম গ্রাউন্ড হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তাই অনেকে বাবর আজমদের অন্যতম ফেভারিট হিসেবে দেখছে।
এরপর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা আছে বর্তমানে ৫০ ওভারের খেলার চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের। ২০১৯ সালে শক্তিশালী এক দল নিয়ে পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে রোমাঞ্চকর বিশ্বকাপ ফাইনাল জেতে ইংল্যান্ড। তারা ফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে হারায়। বিশ্বকাপ জয়ের পর ইংল্যান্ড আরো শক্তিশালী হয়েছে। অন্য দেশগুলোকে নিয়মিত হারিয়েছে তারা।
এরপর আছে নিউজিল্যান্ড। কিউইরা ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলার পর এ বছর ভারতকে হারিয়ে জয় করেছে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা। নিউজিল্যান্ড এখন যে কোনো দেশের জন্য হুমকি। অন্য দেশগুলোকে হেসেখেলে হারায় তারা। আর যেহেতু তারা এ বছরই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয় করেছে, ফলে এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপাও জিতে নিতে পারে কিউইরা। তিন-চার বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে ভালো ক্রিকেট খেলছে নিউজিল্যান্ড।
বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম হট ফেভারিট হলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বছরব্যাপী ওয়েস্ট ইন্ডিজ খুব ভালো না খেললেও বিশ্বকাপে এলে তারা হয়ে ওঠে অপ্রতিরোধ্য। ওয়েস্ট ইন্ডিজই বিশ্বে এখন পর্যন্ত একমাত্র দল হিসেবে দুবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জয় করেছে। প্রথমবার যখন ২০১২ সালে তারা শিরোপা জয় করে, তখনো ফেভারিট ছিল না ক্যারিবীয়রা। কিন্তু ফাইনালে তৎকালীন সময়ে শক্তিশালী ও স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে প্রথম শিরোপার স্বাদ পায় তারা। এরপর ২০১৬ সাল যখন তারা শিরোপা জিতল, তখনই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে শিরোপার দাবিদার ধরেনি কেউ। এমনকি বিশ্বকাপের আগেও দ্বিপক্ষীয় সিরিজগুলোয় তারা হেরেছে একের পর এক ম্যাচে। কিন্তু বিশ্বকাপে বদলে যায় তারা এবং শেষ পর্যন্ত রোমাঞ্চকর ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওয়ানডে বিশ্বকাপে তারা তেমন ভালো না করতে পারলেও টি-টোয়েন্টিতে তাদের ধারেকাছেও কেউ নেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটারদের প্রতিভার সঙ্গে আছে পেশিতে আছে প্রচণ্ড জোর। এ দুই মিলিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হয়ে যায় অপ্রতিরোধ্য। এবারো তাদেরকে সমীহ করতে হবে অন্য দেশগুলোকে।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সপ্তম আসর দরজায় কড়া নাড়ছে। ১৭ অক্টোবর ওমানে বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব এবং ২৩ অক্টোবর সংযুক্ত আরব আমিরাতে শুরু হবে মূল পর্বের খেলা। এদিকে আসরটিকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে ১৬ জন শীর্ষস্থানীয় আম্পায়ার ও চার অভিজ্ঞ ম্যাচ রেফারিকে বাছাই করেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা (আইসিসি)। রাউন্ড ওয়ান ও সুপার টুয়েলভের ম্যাচ পরিচালনার জন্য ২০ জন ম্যাচ অফিসিয়ালের নাম গতকাল ঘোষণা করেছে আইসিসি। সে তালিকায় নেই বাংলাদেশের কোনো আম্পায়ারের নাম। ম্যাচ অফিসিয়ালরা আসরে মোট ৪৫টি ম্যাচ পরিচালনা করবেন। একই সঙ্গে এদিন জানা গেছে বাংলাদেশ দলের ম্যাচে কারা দায়িত্ব পালন করবেন। বাছাইপর্বের ম্যাচে অংশ নিতে এরই মধ্যে ওমানে অবস্থান করছে বাংলাদেশ দল। ১৭ অক্টোবর স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের বিশ্বকাপ মিশন।
এদিকে ম্যাচ অফিসিয়ালদের মধ্যে তিনজন অভিজ্ঞ আম্পায়ারও থাকছেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সপ্তম আসরে। পাকিস্তানের আলীম দার, দক্ষিণ আফ্রিকার মারাইস এরাসমুস ও অস্ট্রেলিয়ার রড টাকার তাদের ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আম্পায়ারিং করতে যাচ্ছেন। কোভিড মহামারি শুরুর পর প্রথমবার ক্রিকেটের কোনো ম্যাচে নিরপেক্ষ আম্পায়ার মাঠে দাঁড়াবেন। ১৬ দলের এ টুর্নামেন্ট ১৭ অক্টোবর থেকে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে ওমানের মাস্কট এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবি, শারজা ও দুবাইয়ে। ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালের অনফিল্ড আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচেই দায়িত্ব পাচ্ছেন। নিউজিল্যান্ডের ক্রিস গ্যাফানি তার সঙ্গে থাকবেন ওমান-পাপুয়া নিউগিনি ম্যাচে। আরেক শ্রীলঙ্কান রঞ্জন মাদুগালে হবেন ওই খেলার ম্যাচ রেফারি। রিচার্ড কেটেলবোরো টিভি আম্পায়ার ও আহসান রাজা চতুর্থ আম্পায়ার। আলীম ও এরাসমুসকে বাছাই করা হয়েছে সুপার টুয়েলভে ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের জন্য। ওই ম্যাচে ম্যাচ রেফারি অস্ট্রেলিয়ান গ্রেট ডেভিড বুন। প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ক্রিস ব্রাউন থাকবেন ওই ম্যাচের টিভির দায়িত্বে। সেমিফাইনাল ও ফাইনালের ম্যাচ অফিসিয়ালদের নাম পরে ঘোষণা করা হবে।
চার ম্যাচ রেফারিরা হলেন ডেভিড বুন, জেফ ক্রো, রঞ্জন মাদুগালে ও জাভাগল শ্রীনাথ। ১৬ আম্পায়ারের তালিকায় আছেন ক্রিস বাউন, আলীম দার, কুমার ধর্মসেনা, মারাইস এরাসমুস, ক্রিস গ্যাফানি, মাইকেল গফ, আদ্রিয়ান হোল্ডস্টোক, রিচার্ড ইলিংওর্থ, রিচার্ড কেটেলবোরো, নিতিন মেনন, আহসান রাজা, পল রেইফেল, ল্যাংটন রুসেরে, রড টাকার, জোয়েল উইলসন ও পল ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়