ঢাকা সেনানিবাসে এনআইডি বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন

আগের সংবাদ

যশোর বোর্ডের হিসাব থেকে আড়াই কোটি টাকা উত্তোলন : জালিয়াতির অভিযোগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

পরের সংবাদ

কাশিয়ানীতে ভাঙনের কবলে বাজার : এক রাতেই মধুমতির পেটে ২৫ দোকান

প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : এক রাতেই গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ভাটিয়াপাড়া বাজারের অন্তত ২৫টি দোকান মধুমতির গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গতকাল শুক্রবার রাত ৩টার দিকে এ ভাঙন শুরু হয়। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হারিয়ে এখন দিশাহারা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা। কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ভাটিয়াপাড়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতি। ভাঙনরোধে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এখনো ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করতে পারেনি প্রশাসন। তবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা বলছেন, এর পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি টাকা।
জানা গেছে, ব্রিটিশ আমলে মধুমতি নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠে ভাটিয়াপাড়া বাজার। বাজারে ভুসিমাল, পশুখাদ্য, পাটের গুদাম, রাখি মালের গুদাম, মিষ্টির দোকান, মোবাইলের দোকান, ওষুধের দোকানসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
প্রতিদিনই গোপালগঞ্জসহ আশপাশের জেলার ব্যবসায়ীরা এখানে মালামাল কিনতে আসেন। এর আগে বেশ কয়েকবার ভাঙনের শিকার হয়েছেন বাজারের ব্যবসায়ীরা। ১৯৯৬ সালে ভাঙনকবলিত এলাকায় নদীর পাড় ব্লক দিয়ে বাঁধাই করা হয়। কিন্তু সতী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে পুনরায় ভাঙন শুরু হয়েছে বলে স্থানীয়দের ধারণা। ব্যাবসায়ী আশরাফউদ্দিন তারা মোল্লা জানান, তার গোডাউন নদীগর্ভে চলে গেছে। এতে তার গোডাউনে থাকা পাট ও বাদাম নদীতে ভেসে গেছে। খবর শুনে এসে কিছুই রক্ষা করতে পারেননি। আনুমানিক দুই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান।
বীজ ব্যবসায়ী রমিজ মোল্লা জানান, তার দোকানে ৫ বস্তা ধনিয়া বীজ, ২ মণ খেসারি কলাই বীজ, ২ মণ মসুর ডাল বীজ, মাষকলাই, কালোজিরা ও শস্য বীজ নদীতে ভেসে গেছে। এতে তার দুই লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বাবলু ঠাকুর রাখি মালের ব্যবসা করেন। তার গোডাউনে থাকা ১১০ মণ পাট, ২২ বস্তা ধনিয়া, ৪১ বস্তা কলাই, ৩১ বস্তা বাদাম নদীগর্ভে চলে গেছে। ভাটিয়াপাড়া বাজার সমিতির সাধারণ সম্পাদক খোকন কাজী বলেন, গভীর রাতে হঠাৎ ভাটিয়াপাড়া বাজার এলাকায় মধুমতি নদীতে তীব্র ভাঙন দেখা দেয়। এতে বাজার রক্ষা বাঁধ ভেঙে মুহূর্তের মধ্যে অন্তত ২৫টি দোকান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। তিনিসহ অনেক ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
ভাটিয়াপাড়া বাজার সমিতির সভাপতি জাহিদুর রহমান দাবি করেছেন, ভাঙনে দোকানঘর, মালামাল ও জমিসহ অন্তত ২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, পানি উন্নয়ন

বোর্ডের এই বাজার রক্ষা বাঁধটি প্রতি বছর রক্ষণাবেক্ষণ করার কথা। এর জন্য বরাদ্দও রয়েছে। বাঁধটি আগে থেকে ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড এখানে কোনো রক্ষণাবেক্ষণ কাজই করেনি। এতে ব্যবসায়ীদের কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রথীন্দ্রনাথ রায় জানিয়েছেন, হঠাৎ করে ভাটিয়াপাড়া বাজারের নদী সংক্ষরণ বাঁধে ভাঙন শুরু হয়। মুহূর্তেই ২০-২৫টি দোকান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। একটি মসজিদসহ আরো বেশ কিছু দোকানঘর ভাঙনের মুখে রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙনকবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলছে। আমরা চেষ্টা করছি ভাঙন রোধে।
তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা ও ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয়ে কাজ করা হচ্ছে।
গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফইজুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ভাঙনকবলিত এলাকায় ছুটে গিয়েছি। বাঁধের আনুমানিক আধা কিলোমিটার এলাকায় আকস্মিকভাবে প্রবল ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। চেষ্টা করছি আর কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যেন নদী গ্রাস করতে না পারে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়