বিজিএমইএ সভাপতি : বন্ধ মিল চালু হলে ফেব্রিক্সের চাহিদা মেটানো সম্ভব

আগের সংবাদ

খাদ্য নিরাপত্তাই প্রধান চ্যালেঞ্জ : সরকারি হিসাব মতে, দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, তবুও চালসহ খাদ্যপণ্য আমদানি করতে হয়

পরের সংবাদ

রৌদ্রোজ্জ্বল আহমদ কবির

প্রকাশিত: অক্টোবর ৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আহমদ কবির (জন্ম ১৯৪৪) ছিল আমার ভাইয়ের মতো। আমার আপন ভাইদের একজন চলে গেছে এই করোনাকালে; তার অল্প পরেই চলে গেল আহমদ কবির। এইসব মৃত্যু মেনে নেই কী করে?
কবিরের সঙ্গে আমার এই ভ্রাতৃপ্রতিম সম্পর্কের সূত্র ওর জ্যেষ্ঠ ও একমাত্র ভ্রাতা আবু জাফর আহমদ সাঈদ। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা সহপাঠী ছিলাম। এক বিভাগে পড়িনি, জাফর ছিল ইতিহাস বিভাগে, আমি ইংরেজি সাহিত্যের। তবে দুজনেরই সাবসিডিয়ারি ছিল একই- পলিটিক্যাল সায়েন্স ও ইকনমিক্স। সেখানেই দেখা। এবং একেবারে প্রথম দিন থেকেই বন্ধুত্বের সূত্রপাত। কেবল বন্ধু নয়, কখনো কখনো মনে হতো জাফর আমার অভিভাবকও। আমার ভালো-মন্দের দিকে খেয়াল রাখতো; আমাকে নানা বিষয়ে জ্ঞান দিত। জাফরও চলে গেছে; তা বেশ কয়েক বছর হলো। জাফরের কাছেই শুনতাম ওর ছোট ভাইটির কথা। বলতো চট্টগ্রাম কলেজে ইন্টারমিডিয়েট পড়ে, বিজ্ঞানে; কিন্তু ভারি সাহিত্যমনস্ক। তারপরে এক সময়ে কবির যখন ঢাকায় এসেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে, তখন দেখা হয়েছে। আমাকে সে ভাই বলে ডেকেছে প্রথম সাক্ষাতেই। তখন থেকেই সে আমার ভাইদের একজন।
এরপর বহু সময় কেটে গেছে। ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে। কবির এবং তার স্ত্রী নিলুফার আমাদের পরিবারেরই প্রায় অংশ হয়ে গেছে। আমার স্ত্রী নাজমা জেসমিন কবিরের ভাবী ছিলেন; নিলুফারের আপা। নাজমার মৃত্যুতে তারা দুজনই অত্যন্ত মুষড়ে পড়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটে যে গত ত্রিশ বছর ধরে নিয়মিত ‘নাজমা জেসমিন স্মারক বক্তৃতা’ অনুষ্ঠিত হতে পেরেছে তার পেছনে একটি কারণ আহমদ কবিরের আগ্রহ। সে নিজেও একটি অসাধারণ বক্তৃতা দিয়েছে, নজরুল সাহিত্যের মূল্যায়নের ওপর। করোনার কারণে দুই বছর ধরে বক্তৃতা স্থগিত রয়েছে। আগামীতে যদি হয় তাহলে সেটা আগের মতো হবে না, কারণ কবির থাকবে অনুপস্থিত। আর আবু জাফরের ওপর আমি যেমন নির্ভর করতে পারতাম তেমন একটি নির্ভরশীলতা ছিল আহমদ কবিরের ওপরও। শেষের দিকে তো নিয়মিতই দেখা হতো। ছুটির দিন বাদ দিয়ে নিয়মিত আসতো সে আমার কামরায়। আমি তো বটেই, আমার সহকর্মীরাও ভারি খুশি হতেন। সকালের রোদের মতো ছিল তার উপস্থিতি। প্রসন্ন এবং উজ্জ্বল।
আমার বিশেষ শখ ও সুখ ছিল পত্রিকা সম্পাদনায়। এখনো আছে। অনেক বছর ধরে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পত্রিকা সম্পাদনা করেছি। সে পত্রিকায় কবির লিখেছে। তাই অনেকেই লিখেছেন; কিন্তু কবির যে দুটি প্রবন্ধ লিখেছিল প্রমথ চৌধুরীর ওপর প্রবন্ধ দুটির কথা আমার এবং অনেকেরই মনে আছে। প্রথম প্রবন্ধটি প্রমথ চৌধুরীর সেই সাহিত্যচিন্তা নিয়ে; দ্বিতীয়টি তার ভাষাচিন্তা বিষয়ে। প্রথম প্রবন্ধটিতে প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যচিন্তার নানা দৃষ্টান্ত দিয়ে আহমদ কবির এই সিদ্ধান্তে পৌঁছে ছিল যে, ‘রবীন্দ্রনাথের কবিতাকে চরম আর্ট বললেও তিনি রবীন্দ্রনাথের সব গদ্যলেখা এবং ছোট-বড় গল্পগুলোকে উদ্দেশ্যমূলক বলেছেন। অর্থাৎ আর্টের প্রমথ চৌধুরীর অন্বিষ্ট, যে আর্ট কোনো উদ্দেশ্য সাধন করবে না, কোনো শিক্ষা দেবে না, রাজনীতিতে জড়াবে না এবং কোনো লোকহিতকর বা প্ররোপকার বৃত্তি অবলম্বন করবে না।’ কবিরের বক্তব্যটা ছিল পরিষ্কার। তার মতে প্রমথ চৌধুরী অত্যন্ত উচ্চমানের লেখক, কিন্তু রীতির দিক থেকে তিনি আলংকারিক ও কলাকৈবল্যবাদী। বিশ্ববিদ্যালয়ে পত্রিকার পরের সংখ্যাতে অধ্যাপক সাঈদ-উর রহমানের প্রতিক্রিয়ায় আরেকটি প্রবন্ধ লেখেন। এই ব্যাপারটা তখন ঘটতো; গুরুত্বপূর্ণ রচনা সাড়া জাগাতো, প্রতিক্রিয়া পাওয়া যেত, আমরাও উৎসাহিত করতাম প্রতিক্রিয়াকে। সাঈদের বক্তব্য ছিল এই যে কবিরের সিদ্ধান্ত একপেশে। কারণ সাহিত্যকে প্রমথ চৌধুরী শখ হিসেবে বিবেচনা করেননি, জাতীয় জীবন গঠনের সর্বশ্রেষ্ঠ উপায় বলেই গণ্য করেছেন।
প্রমথ চৌধুরীর ভাষা চিন্তা নিয়ে লেখা প্রবন্ধটিও ছিল প্রথম প্রবন্ধটির মতোই গবেষণা-সমৃদ্ধ, এবং বক্তব্যে সুস্পষ্ট। এটিতে তার সিদ্ধান্ত ছিল, ‘বাংলা গদ্যে সাধু ভাষার পাশাপাশি কথ্যভাষার যে দ্বিধাপূর্ণ দুর্বল স্রোতটি প্রবাহিত ছিল তার মধ্যে তিনি প্রাণগঙ্গা বইয়ে দিলেন। মাতৃভাষার প্রতি মমত্ববোধ ও কর্তব্যবোধ ছিল বলেই তিনি জীবনের সকল পর্যায়ে বাংলা ভাষার স্বত্বস্বামিত্ব কামনা করেছিলেন। প্রমথ চৌধুরীর ভাষাচিন্তার উজ্জ্বল দিক এটাই।’
কবিরের প্রিয় লেখকদের একজন ছিলেন প্রমথ চৌধুরী। প্রমথ চৌধুরীর রচনার বৈশিষ্ট্য যে স্পষ্টতা, কৌতুকবোধ ও বৈদগ্ধ কবিরের নিজের লেখাতেও তা আমরা দেখেছি। কবিরকে আমি তাগাদা দিতাম প্রমথ চৌধুরীর ওপর একটা বই লিখতে। সে বই লেখা হয়নি। লেখা হলে সেটা একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ যে হতো তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
কবির পড়তো অনেক, লিখতো সে তুলনায় কম। কিন্তু যা-ই লিখতো তার পেছনে অনুসন্ধান ও চিন্তা থাকতো। দায়িত্ব নিয়ে, গভীর মনোযোগে লিখতো সে। কৈশোরে সে যে বিজ্ঞান পড়েছে তার ছাপ থাকতো তার সাহিত্যিক রচনাতে। সাহিত্যমনস্কতার সঙ্গে বিজ্ঞানমনস্কতাকে একত্র করেছিল সে। নিজস্ব একটা রচনারীতি তৈরি করে নিয়েছিল। সেটিকেও মনে হতো তার ব্যক্তিত্বের মতোই উজ্জ্বল। বাক্যগঠন ছিল সুশৃঙ্খল ও সুষমামণ্ডিত; এবং একই সঙ্গে প্রবহমান। আহমদ কবিরের ছাত্র-ছাত্রীরা, এবং সহকর্মীরাও প্রশংসা করতো তার ছন্দজ্ঞানের। ছন্দের বোধটা দেখতাম নীরবে উপস্থিত রয়েছে তার লেখার রীতিতে। কবির আমাদের নতুন দিগন্ত পত্রিকায় লিখেছে, আশা ছিল আরো লিখবে।
শেষবর্ষ এমএ পড়ার সময় কবির গবেষণা করেছিল রবীন্দ্রনাথের কাব্যে উপমা ও রূপকের ব্যবহার নিয়ে। গবেষণাপত্রটি পরে বই হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে; এবং সংস্করণও হয়েছে একাধিক। এই বইটিতে তার গবেষণামনস্কতা যেমন তেমনি নান্দনিক বোধেরও প্রকাশ আছে। রবীন্দ্রকাব্যে উপমার ব্যবহার বিষয়ে ওই আগ্রহই হয়তো তার প্রথম সন্তানকে উপমা কবির নাম রাখার ভেতরে প্রতিফলিত হয়েছে। কবিরদের তিন সন্তানই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্সের অধ্যাপক। কবিরের নিজের ভেতর নান্দনিকতার সঙ্গে বৈজ্ঞানিকতার যে ঐক্য ঘটেছিল সেটাই বুঝি বা তার সন্তানরা পেয়ে গেছে, উত্তরাধিকারসূত্রে। এই প্রাপ্তির পেছনে মাতা নিলুফারও আছেন। খুব ভালোভাবেই। প্রসঙ্গত বলি আমরা যারা তাদেরকে ব্যক্তিগতভাবে জানি তারা সকলেই মানি যে এই দম্পতির ভেতর যে পরস্পরনির্ভরতা ও বন্ধুত্ব দেখেছি তা যথার্থই বিরল।
আহমদ কবির দায়িত্ব পালনে ছিল একনিষ্ঠ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থ সংস্থার এবং উচ্চতর মানববিদ্যা গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালকের কাজ করেছে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে। সম্পাদনা করেছে আহমদ শরীফ রচনাবলী। আমরা সবাই জানি অধ্যাপক আহমদ শরীফের সে ছিল অতি আপনজন।
মৃত্যুর অল্পদিন আগে কবির আমাকে সাহিত্য সমালোচনা নামে তার সম্পাদিত একটি বড় সংকলনের এক কপি উপহার দিয়েছে। এই সংকলনে বঙ্কিমচন্দ্র থেকে শুরু করে আবু সয়ীদ আইয়ুবের গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্য সমালোচনাগুলো রয়েছে। কবির এর জন্য বিস্তারিত যে ভূমিকাটি লিখেছে সেটিতে বাংলা ভাষায় সাহিত্যালোচনার উদ্ভব ও বিকাশের একটি ইতিহাস আছে, এবং সমালোচকদের নিজস্বতার চমৎকার বিশ্লেষণ রয়েছে। সেটি আমি আগ্রহের সাথে পড়েছি; এবং আবারো, নতুন করে, কবিরের সাহিত্যরুচির সাথে পরিচিত হয়ে আনন্দ পেয়েছি। ওই রুচি, বলাবাহুল্য, তার সংকলিত বইটিতে বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ সমালোচকদের রচনা-নির্বাচনেও প্রতিফলিত।
তা কবিরের রুচি যে কেবল সাহিত্যপাঠে কাজ করেছে তা নয়; তার জীবনযাপনে, আচার-আচরণে, কথাবার্তায়, চলাফেরায়, এমনকি জামাকাপড়েও সেটা সমানভাবে কার্যকর ছিল। তার মতো বিনয়ী, সংযতবাক, সর্বার্থে সুশিক্ষিত মানুষ আমি কম দেখেছি। অথচ ভেতরে অত্যন্ত দৃঢ় ছিল সে। আপস করতে জানতো না।
এমনকি খাবারদাবারের ব্যাপারেও তার রুচিতে আমরা প্রীত ছিলাম। উপকৃতও হয়েছি। ঢাকা শহরে কোথায় কোন উপাদেয় খাদ্য-উপকরণ পাওয়া যায়, কবির তার নির্ভুল সন্ধান রাখত। এবং সংগ্রহও করতো। ওই কাজে অন্যদেরকেও সঙ্গী করতে পছন্দ করতো সে। মনে আছে এক সকালে, অতিপ্রত্যুষে, মোহাম্মদ আবু জাফর, সাঈদ-উর রহমান ও আমি গিয়ে হাজির হয়েছিলাম বাদামতলি ঘাটে। আয়োজন ও নেতৃত্ব কবিরের। সেখান থেকে পছন্দ মতো বড়সড় একটি রুই মাছ কেনা হলো, সেটিকে নিয়ে যাওয়া হলো মৌলবী বাজারে। সেখানকার এক মৎস্যবিক্রেতার সাহায্যে মাছটি নিপুণভাবে খণ্ডিত করে নিখুঁত চার ভাগ করে থলিতে ভরে বাসায় নিয়ে-আসা। সমস্ত পরিকল্পনাটা ছিল কবিরের। মাছের অংশ পেয়ে প্রফুল্লচিত্তে নাজমা বলেছিল, ‘কবির ভাই, ভাগ্যিস আপনি ছিলেন।’ কথাটা এখনো কানে বাজে।
ভাগ্যিস কবির ছিল, এটা আমিও অনেক সময় টের পেয়েছি। জানতাম সে আছে, তার ওপর ভরসা করা যাবে। এই কিছুদিন ধরে আমরা ভাবছিলাম একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা বের করবো। আগেও উদ্যোগ নিয়েছিলাম; একবার নয় দুই দুইবার। পত্রিকা বের হয়েছিল, কিন্তু টেকেনি। এবার চেষ্টা ছিল আঁটসাঁট বেঁধে বের করার, যাতে টেকে; এবং যাতে লিটল ম্যাগাজিন নয়, একটি জনপ্রিয় এবং বহুল-প্রচারিত সাপ্তাহিক হয়। আমরা ঠিক করেছিলাম সম্পাদক হবে আহমদ কবির। কারণ ওই একই। তার ওপর ভরসা করা যেত। সাপ্তাহিক সময় নামে আগে যে একটা পত্রিকা বের করেছিলাম, তার ছাড়পত্র ছিল আমার নামে; সেটিকে পুনরুজ্জীবিত করা যায় কিনা এই চিন্তা থেকে পত্রিকার একটি ছায়াসংখ্যা ছাপিয়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের দপ্তরে জমা দেয়া যাক, এমন পরামর্শ দিয়েছিলেন অভিজ্ঞ এক বন্ধু। তদনুযায়ী একটা সংখ্যা বের করা হলো। সম্পাদকীয় লেখার দায়িত্ব দেয়া হলো আহমদ কবিরকে। চমৎকার একটি সম্পাদকীয় সে লিখে দিলো। সেই পত্রিকার ওই ছায়াসংখ্যায় ছাপাও হয়েছিল। কিন্তু পরে জানা গেল আমাদের পত্রিকার নামটি অন্য এক প্রকাশক ইতিমধ্যে দখল করে নিয়েছেন। বিন্দুমাত্র নিরুৎসাহিত না হয়ে আমরা ঠিক করলাম নতুন নামে আবেদন করবো। নাম ঠিক হয়েছিল সামনে সময়। নামটি কবিরের খুব পছন্দের ছিল। সে স্মরণ করেছিল যে ওই নামে নাজমার একটি উপন্যাস আছে। পরিকল্পনাটি কার্যকর হয়নি। ইতিমধ্যে করোনা এসে গেল, ওদিকে কবির পড়লো অসুস্থ হয়ে।
অসুস্থ অবস্থাতেও কবির কিন্তু নিজেকে মোটেই অসুস্থ মনে করতো না। আগেও নয়, শেষবারেও নয়। তার অসুখ নিয়ে উদ্বিগ্ন হলে, উল্টো সে-ই অন্যদেরকে ভরসা দিত। মৃত্যুর কয়েকদিন আগেও তার সাথে কথা হয়েছে, ফোনে। বলেছে, ‘ভাই, আমি সেরে উঠছি। বিছানায় নয়, সোফায় বসে কথা বলছি।’ ভরসা দিচ্ছিল, আগে যেমন দিত- কেবল তার নিজের ব্যাপারে নয়, আমাদের ব্যাপারেও।
ওই যে সম্পাদকীয়টির কথা বললাম ওটি সে লিখেছিল, ফুটবলের বিশ্বকাপের ওপর। খেলাধুলায় ভীষণ আগ্রহ ছিল আহমদ কবিরের। রাত জেগে খেলা দেখতো; বিশেষ করে ফুটবল। তা খেলাতো অনেকেই দেখে। কিন্তু সেখানেও কবিরের একটি নিজস্ব অবস্থান ছিল। খুব মনে পড়ে সে বলতো, সবসময়েই সে থাকে খেলার পক্ষে, কোনো দলের পক্ষে নয়। দলের প্রতি পক্ষপাতের দোষ ঘটলে, খেলার সৌন্দর্য উপভোগ বিঘিœত হয় বলে তার বিশ্বাস। এই রকমেরই পরিচ্ছন্ন ও রুচিসম্পন্ন ছিল আমার এই ভাইটি।
রৌদ্র হয়তো প্রতিদিনই পাওয়া যাবে, কোনো না কোনো ভাবে; কিন্তু সকালের রোদের মতো উজ্জ্বল আমার এই ভাইটির সঙ্গে আর যে কোনো দিন দেখা হবে না, এই সত্যটাকে মেনে নিই কীভাবে? মেনে নেয়াটা শুধু কঠিন নয়, মনে হচ্ছে অসম্ভবই। প্রাকৃতিক শূন্যতার কথা স্বতন্ত্র, মানবিক শূন্যতা কি পূরণ হয় কখনো? হয় না। হবে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়