বিজিএমইএ সভাপতি : বন্ধ মিল চালু হলে ফেব্রিক্সের চাহিদা মেটানো সম্ভব

আগের সংবাদ

খাদ্য নিরাপত্তাই প্রধান চ্যালেঞ্জ : সরকারি হিসাব মতে, দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, তবুও চালসহ খাদ্যপণ্য আমদানি করতে হয়

পরের সংবাদ

বিপর্যয় ঠেলে ঘুরে দাঁড়িয়েছে আবাসন খাত : রিহ্যাব সভাপতি

প্রকাশিত: অক্টোবর ৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : করোনায় ব্যবসা-বাণিজ্যের সব খাতেই বিপর্যয় নেমে আসলেও আবাসন খাত সেই বিপর্যয় থেকে বের হয়ে আসতে শুরু করেছে। করোনার টিকাদান, বিনা প্রশ্নে অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগের সুযোগ রাখা, ফ্ল্যাটের নিবন্ধন ফি হ্রাস এবং কম সুদে ঋণ সুবিধা থাকায় ফ্ল্যাট বিক্রি বেড়েছে, নতুন বুকিংও বেড়েছে। গত বছরের প্রথম নয় মাসে আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলো যে ব্যবসা করেছে, এখন পর্যন্ত এ বছর একই সময়ে তার চেয়ে বেশি বিক্রি বেড়েছে। সরকারের কাছে আবাসন মালিকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ফ্ল্যাটের নিবন্ধন ব্যয় কিছুটা কমানো হয়েছে।
এ কারণে আবাসন খাতের উদ্যোক্তারা পাইপলাইনে থাকা প্রকল্পে বিনিয়োগ বাড়িয়েছেন। হাত দিয়েছেন নতুন প্রকল্পেও। এ সবকিছুর পেছনে আবাসন খাতের সবচেয়ে বড় সংগঠন রিয়েল এস্টেট এন্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) এর বর্তমান সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন (কাজল) এর ভূমিকা অনেক। ২০১৪ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথমবার দায়িত্ব নেন এ সভাপতি। এরপর ২০১৬ দ্বিতীয় বার এবং ২০১৮ সালে ৩য়বারের মতো দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘ সাত বছর ধরে সভাপতির দায়িত্ব পালনের সময় নানা সমস্যায় জর্জরিত এ খাতে বেশ কিছু সাফল্যও অর্জন করে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ। বর্তমান কমিটির সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন (কাজল) বলেন, আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ও অব্যাহত চেষ্টার ফলে গত বাজেটে আবাসন খাতে কোনো প্রশ্ন ছাড়াই অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেয়া হয়। এতে বড় ধরনের ধসের হাত থেকে রক্ষা পায় আবাসন শিল্প। এর ফলে গত অর্থবছরে বিশ হাজার ছয় শ’ কোটি টাকার উপরে মূল অর্থনীতিতে ফিরে এসেছে। যার মাধ্যমে সরকার ট্যাক্স পেয়েছে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার উপরে। চলতি অর্থবছরে বিনা প্রশ্নে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগে অন্যান্য ক্ষেত্রে জরিমানার পরিমাণ বাড়ানো হলেও আবাসন খাতে আগের মতোই সুবিধা বহাল রেখেছে বর্তমান সরকার। এটাও এ খাতের জন্য সুখকর। শামসুল আলামিন বলেন, আমাদের কমিটির তৎপরতায় নিজস্ব ২৪ কাঠা জায়গায় রিহ্যাব ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের জন্য সর্বাধুনিক ১৫ তলা ভবন নির্মাণের কার্যক্রম আমরা শুরু করেছি। যেটা আবাসন খাতের অনেক বড় একটি অর্জন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিভিন্ন সময় বৈঠক করে সিঙ্গেল ডিজিটে হাউজিং লোন কার্যকর করা হয়েছে। আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বসুন্ধরা সিটি কর্তৃপক্ষ রিহ্যাব মেম্বারদের জন্য ২০ শতাংশ ছাড়ের ব্যবস্থা করে। ইতোমধ্যে ৮০টি মেম্বার কোম্পানি বার শ’ কাঠার বেশি জমিতে এই ছাড়ের সুযোগ নিয়েছেন। করোনাকালীন সময়ে আবাসন সেক্টরের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ, মেম্বারদের জন্য অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, করোনা শনাক্ত করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ২৫ লক্ষ টাকাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করেছি।
রিহ্যাব এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও সুইস এজেন্সী ফর ডেভেলপমেন্ট এন্ড কো-অপারেশন (এসডিসি) কর্তৃক অর্থায়নকৃত অর্থমন্ত্রণালয়ের প্রকল্প স্কিল ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইআইপি) এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। রিহ্যাব ট্রেনিং ইনস্টিটিউট এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে আউটসোর্সিং করা ইনস্টিটিউটসমূহের মাধ্যমে ৫টি ট্রেডে ২১ হাজার নির্মাণ শ্রমিককে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। রিহ্যাবের একক প্রচেষ্টায় গৃহায়ণ শিল্পে ঋণ প্রবাহ সচল রাখার প্রয়োজনে বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ক নীতিমালা সময়ে সময়ে পরিবর্তন করেছে। রিহ্যাবে ‘কার্যনির্বাহী পরিষদ’ ছিল। এফবিসিসিআই-এর আলোকে এটাকে ‘বোর্ড অব ডিরেক্টরস্’ এ রূপান্তর এর মাধ্যমে রিহ্যাবের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা হয়েছে। বর্তমানে রিহ্যাব দেশের রিয়েল এস্টেট সেক্টরে একমাত্র জাতীয় বাণিজ্যিক সংগঠন হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছে।
বর্তমান সভাপতি দায়িত্ব নেয়ার পর ‘রিহ্যাব উইন্টার ফেয়ার-২০১৪’, ‘রিহ্যাব সামার ফেয়ার-২০১৫’সহ ধারাবাকিভাবে সারাদেশে ও দেশের বাইরে মেলা পরিচালনা করা হয়। চলতি বছরের নভেম্বরে চট্টগ্রাম ফেয়ার এবং ডিসেম্বরে ঢাকায় ফেয়ার করবে বলে জানান এ সভাপতি। শামসুল আলামিন বলেন, রিহ্যাব সদস্যদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় পর্যটনে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। কক্সবাজারে বিপুল পরিমাণ হোটেল মোটেল তৈরি হওয়ায় প্রতি বছর বিপুলসংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটে কক্সবাজারে। পর্যটনের সমস্যা ও সম্ভাবনা বিষয়ে জনগণ এবং প্রশাসনকে আরো সচেতন করতে পর্যটননগরী কক্সবাজারে মতবিনিময় ও সেমিনার আয়োজন করা হয়েছে। আমাদের দীর্ঘদিনের আন্তরিক প্রচেষ্টায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে পরিপত্র জারি হয়েছে, যাতে উল্লেখ রয়েছে রিহ্যাব মেম্বার ছাড়া কেউ রিয়েল এস্টেট ব্যবসা করতে পারবে না। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় একটা অর্জন। সবাইকে একটি ছাতার নিচে নিয়ে এসে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতার পরিবেশ নিশ্চিত করতে এটা বড় ভূমিকা পালন করবে বলে আমাদের বিশ্বাস। তিনি বলেন, আমরা ভোলা এবং কুড়িগ্রামে ভূমিহীনদের প্রায় শতাধিক ‘টেকসই ঘর’ তৈরি করে দিয়েছি। যা সরকারসহ বিভিন্ন মহলে ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছে। রিহ্যাব-এর ভাবমূর্তি বৃদ্ধিসহ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা সুনিশ্চিত করার মহৎ লক্ষ্যে ২০০৪ সালে ‘রিহ্যাব মেডিয়েশন সেল’ গঠন করা হয়, এ ছাড়া রিহ্যাব মেডিয়েশন এন্ড কাস্টমার সার্ভিস সাব-কমিটি, চট্টগ্রাম রিজিয়নও অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠা লগ্ম থেকে অদ্যাবধি ‘রিহ্যাব মেডিয়েশন সেল’ ১১০০ (এগারশত) এর অধিক ‘রিয়েল এস্টেট’ বিরোধ সুষ্ঠু ও চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তিতে সফলকাম হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়