বিজিএমইএ সভাপতি : বন্ধ মিল চালু হলে ফেব্রিক্সের চাহিদা মেটানো সম্ভব

আগের সংবাদ

খাদ্য নিরাপত্তাই প্রধান চ্যালেঞ্জ : সরকারি হিসাব মতে, দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, তবুও চালসহ খাদ্যপণ্য আমদানি করতে হয়

পরের সংবাদ

ডলফিন সুরক্ষায় সচেতনতা জরুরি

প্রকাশিত: অক্টোবর ৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

হালদা নদীতে প্রতিকূল নানা পরিবেশ হুমকিতে ফেলছে ডলফিনের জীবন। মাত্র চার বছরে ৩১ ডলফিনের মৃত্যু আমাদের জন্য অশনিসংকেত। আঘাতজনিত কারণে সর্বশেষ দুটি ডলফিন প্রাণ হারিয়েছে মাত্র ৫ দিনের ব্যবধানে। ডলফিন নিধন এভাবে অব্যাহত থাকলে জীববৈচিত্র্যে বিরূপ প্রভাব পড়বে। এর আগে আমরা দেখেছি চট্টগ্রামের হালদা নদীতে ডলফিন হত্যার ঘটনা। দুর্ভাগ্যের বিষয়, চট্টগ্রামের হালদা নদীদূষণ, মাত্রাতিরিক্ত শিকার, আবাসস্থল বিনষ্ট, মাত্রাতিরিক্ত যান চলাচল ও বিষ প্রয়োগ করে মাছ ধরার কারণে ডলফিন হুমকির মুখে পড়েছে। জানা গেছে, ২০১৮ সালের জরিপ অনুযায়ী, হালদা নদীতে ডলফিন ছিল ১৬৭টি। ২০২০ সালে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুনরায় জরিপ করা হালদায়। তখন ডলফিন পাওয়া যায় ১২৭টি। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাত্র ৬ মাসে হালদায় ১৮টি মৃত ডলফিন পাওয়া যায়। ২০১৮ সালের মার্চ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ১০টি মৃত ডলফিন পাওয়া যায়। চলতি বছরের ৬ জুলাই, ৩০ সেপ্টেম্বর ও ৪ অক্টোবর এই নদীতে তিনটি ডলফিনের মৃত্যু হয়। এছাড়া কর্ণফুলী নদীতে চলতি বছর দুটি মৃত ডলফিন মৃত্যুর রেকর্ড করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরি। কর্ণফুলী নদীর অন্যতম আকর্ষণ ‘গেঞ্জেস ডলফিন’ বা গাঙ্গেয় ডলফিন। কর্ণফুলীতে মাত্রাতিরিক্ত দূষণের পরও এ প্রজাতির ডলফিনগুলো এখনো টিকে আছে। কর্ণফুলীতে প্রজনন শেষে এ ডলফিন বিচরণ করে শাখা নদী হালদা ও সাঙ্গুতে। দক্ষিণ এশিয়ায় কার্প জাতীয় মাছের অন্যতম বড় প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র হালদা। নদীতে মা মাছের আনাগোনা বাড়ার সঙ্গে বেড়েছে চোরা শিকারিদের উৎপাত। জালে ডলফিন আটকালে আর মাছ ধরা পড়ে না বলে হালদা পাড়ে কুসংস্কার আছে। এভাবে ডলফিন হত্যার ধারণা যদি চোরা শিকারিদের মধ্যে ছড়ায় তাহলে হালদার ডলফিন রক্ষা কঠিন হবে। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) গাঙ্গেয় ডলফিনকে বিপন্ন হিসেবে লাল তালিকায় রেখেছে। ২০১২ সালের বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুসারে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত। আমরা চাই, কেবল ডলফিন নয়, সার্বিক অর্থে জলজ জীববৈচিত্র্য সুরক্ষায় কর্তৃপক্ষকে সক্রিয় হতে হবে। অন্যথায় জলজ প্রতিবেশের বিলোপ পরিস্থিতি স্থলেও সম্প্রসারিত হবে। পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রাণী রক্ষা করতে হলে এর টিকে থাকার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে আমাদের মনোযোগী হতে হবে। তাহলে আশা করা যায় দেশের নদীগুলো ডলফিনের বসবাস উপযোগী হবে। এতে আমাদের জলজ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা পাবে। পাশাপাশি জেলেদের সচেতনতায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। নির্দিষ্ট এলাকায় সৈকতে স্থায়ীভাবে জাল পাতা বন্ধ ও অপসারণ করতে হবে। প্রয়োজনে জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও গ্রহণ করা যেতে পারে। সংশ্লিষ্ট এলাকায় নিয়মিত টহলের জন্য বন বিভাগের নৌযান ও জনবল বাড়ানোসহ স্থানীয়দেরও ডলফিন সুরক্ষায় সচেতন করা দরকার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়