যুক্তরাষ্ট্রে অগ্নিকাণ্ডে এক বাংলাদেশি কিশোরীর মৃত্যু

আগের সংবাদ

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভা : সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে মেরিনা ১০ পৌরসভায়ও প্রার্থী চূড়ান্ত

পরের সংবাদ

কারাগারে মোবাইল বাণিজ্য ঠেকাবে স্মার্টকার্ড : ল্যান্ডফোন ছাড়া কারাগারে থাকবে না নেটওয়ার্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ইমরান রহমান : কারাগারে বন্দিদের মোবাইলে কথা বলার সুযোগ করে দিয়ে কারারক্ষিদের অবৈধ বাণিজ্য করার অভিযোগ পুরনো। এই বাণিজ্যের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শীর্ষ জঙ্গি নেতাসহ শীর্ষ সন্ত্রাসীরা বাইরে নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। এতে ঝুঁকির মুখে পড়ছে দেশের সামগ্রীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তাই কারাগারের মোবাইল ফোন ব্যবহার বন্ধ করতে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে কারা অধিদপ্তর। ইতোমধ্যে কারাবন্দিদের জন্য চালু করা মোবাইল বুথকে একটি নির্দিষ্ট কাঠামোর মধ্যে আনতে চায় কারা সংশ্লিষ্টরা। এজন্য সাধারণ বন্দিসহ যারা মোবাইল ফোনে কথা বলার সুযোগ পান, তাদের সবাইকে করে দেয়া হবে একটি বিশেষ স্মার্টকার্ড। একজনের স্মার্টকার্ড আরেকজন ব্যবহার করতে পারবেন না। আবার একটি কার্ডে সপ্তাহে ১০ মিনিটের বেশি কথা বলা যাবে না। ফলে কারাগারে মোবাইল ফোন ব্যবহার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
কারা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, কারাগারগুলোতে থেকে যাতে বন্দিরা কোনোভাবেই বাইরে যোগাযোগ করতে না পারে সেজন্য ইতোপূর্বে জ্যামার স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু বেশিরভাগ জ্যামার অকেজো হয়ে যাওয়ায় এবং কিছু অসাধু কারারক্ষির কারণে মোবাইল বাণিজ্য অব্যাহত রয়েছে। এজন্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে এবং একটি সঠিক সিস্টেম দাড় করিয়ে কীভাবে মোবাইলের নেটওয়ার্ক বন্ধ করা যায়, সেজন্য কারা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। মোবাইল বাণিজ্য ঠেকাতে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে কারাগার এলাকায় নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণ করায়। এজন্য দেশের ৬৮ কারাগারেই নতুন করে জ্যামার স্থাপন করা হবে। ফলে কারাগারের মধ্যে কারোই মোবাইল ফোনে কথা বলার সুযোগ থাকবে না। আর সাধারণ কারাবন্দিদের কথা বলার জন্য যে মোবাইল বুথ স্থাপন করা হয়েছে, সেখানে আনা হবে নতুনত্ব।
বর্তমানে মোবাইল বুথে সাধারণ মোবাইল ব্যবহার করা হলেও সেখানে স্থাপন করা হবে ল্যান্ড ফোন। শুধু ল্যান্ড ফোনগুলো জ্যামারের আওতামুক্ত থাকবে। প্রত্যেক বন্দিকে আলাদা আলাদা স্মার্টকার্ড দেয়া হবে। ওই স্মার্টকার্ড দিয়ে নির্দিষ্ট ব্যক্তি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারবেন। এরপর আর ওই কার্ড কাজ করবে না। অর্থাৎ, একজন বন্দি সপ্তাহে যে ১০ মিনিট কথা বলার সুযোগ পান, শুধু ওই সময়টুকুর জন্যই কাজ করবে স্মার্টকার্ড।
একজনের স্মার্টকার্ড আরেকজন ব্যবহার করতে পারবেন না। ফলে কারাগারে প্রভাবশালী বন্দিরা এক্ষেত্রে কোনো প্রভাব বিস্তার করতে পারবেন না।
সূত্র আরো জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে, বন্দিদের হতাশা কমার পাশাপাশি সব বন্দি কথা বলার জন্য সমান অধিকার পাবেন। কথা বলার জন্য মিনিট প্রতি গুনতে হবে ১ টাকা করে। এতে করে, কমে আসবে কারাগারে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। কমে যাবে দর্শনার্থীদের ভোগান্তিও। অনেকে ফোনে কথা বলতে পেরে কারাগারের সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করা থেকে বিরত থাকবেন। তবে, কারাবন্দিরা নির্দিষ্ট দুটি ফোন নম্বরের বেশি নম্বরে কথা বলার সুযোগ পাবেন না। যে নম্বরে কথা বলা হবে, তাও নজরদারিতে রাখা হবে। কোনো ফোন নম্বর নিয়ে সন্দেহ হলে তাৎক্ষণিক সেটি যাচাই করে দেখার সুযোগ সুবিধা রাখা হবে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে সদ্য সাবেক আইজি প্রিজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোমিনুর রহমান মামুন দায়িত্বে থাকাকালে ভোরের কাগজকে বলেন, কারাগারকে সাংগঠনিক কাঠামো ঠিক করার উদ্দেশ্যেই এ ধরনের একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। প্রকল্পটি নিয়ে বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ করে সফলতা পাওয়া গেছে। পরে এ বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে। দ্রুতই প্রস্তাবটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয় সাড়া দিলে আগামী ৮-১০ মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন সম্ভব। এছাড়াও বিকল্প উপায়ের কথাও চিন্তা করা হচ্ছে। অনেক উন্নত দেশে টেলিকম কোম্পানিগুলোর মাধ্যমেই কারাগার এলাকায় নেটওয়ার্ক জিরো করে রাখা হয়। আমরা টেলিটকসহ অন্যান্য বেসরকারি টেলিকম ও বিটিআরসির সঙ্গে যোগাযোগ করে এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়া যায় কিনা সেটিও ভেবে দেখছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়