যুক্তরাষ্ট্রে অগ্নিকাণ্ডে এক বাংলাদেশি কিশোরীর মৃত্যু

আগের সংবাদ

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভা : সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে মেরিনা ১০ পৌরসভায়ও প্রার্থী চূড়ান্ত

পরের সংবাদ

ই-কমার্সের ফাঁদে পড়ে জনগণ নিঃস্ব

প্রকাশিত: অক্টোবর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৭, ২০২১ , ১:৩০ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশের অনলাইনভিত্তিক ব্যবসা-বাণিজ্য দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু তার সঙ্গে প্রতিষ্ঠানগুলোর বিভিন্ন প্রতারণার বিষয়ও ফুটে উঠেছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে এ খাতের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্যোক্তারা নিজেরাও চিন্তিত।
বাংলাদেশে ই-কমার্সের যাত্রা শুরু হয়েছে এক দশকেরও কম সময় হয়েছে। তবে ২০১৪ সালের পর থেকে তা জনপ্রিয় হতে শুরু করে। অনলাইনে মাসে প্রায় ৭০০ কোটি টাকার বেচাকেনা হচ্ছে। তবে করোনার সময়ে তা প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। পচনশীল পণ্য থেকে শুরু করে ওষুধ, ইলেকট্রনিক ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যও কিনছেন মানুষ। সংশ্লিষ্টদের অনুমানে প্রায় ১ লাখ অর্ডার প্রতিদিন আসছে। যদিও এর বড় অংশ ঢাকাভিত্তিক।
কিন্তু এসব ব্যবসার পেছনে আরো একটা প্রতারণামূলক গল্পও আছে। যেটা হলো সাধারণ জনগণকে ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নেয়ার পদ্ধতি। ফটকা ব্যবসায়ীরা ধারাবাহিক নাটকের মাধ্যমে এসব কাজ সম্পূর্ণ করেছে। যা সাধারণ জনগণ আজো বুঝতে পারেনি এদের প্রতারণা। এদের নাটকের শুরু হয় অবিশ্বাস্য মূল্যছাড় দিয়ে। এরপর ধারাবাহিকভাবে ক্যাশব্যাক ও গিফট ভাউচারের প্রলোভনে গ্রাহকের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে কোটি কোটি টাকা। আবার ‘করোনা মহামারিতে’ অতিরিক্ত বিক্রির আশা দেখিয়ে পণ্য সরবরাহ করানো হয়েছে মার্চেন্টদের। মাঝে তৈরি হয়েছে বিস্তর ফারাক। বিপুলসংখ্যক গ্রাহক অগ্রিম টাকা দিয়ে পাননি পণ্য। আবার অনেক মার্চেন্ট পণ্য দিয়ে পাননি টাকা। ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জ, ধামাকা শপিং, সিরাজগঞ্জ শপ, এসপিসি ওয়ার্ল্ড, নিরাপদ ডটকমসহ আরো অন্তত ১২টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে তৈরি হয়েছে এ অবস্থা। এসব লোভনীয় কথা বলে সাধারণ জনগণ থেকে তারা কোটি কোটি টাকা বিদেশে নিয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক ই-অরেঞ্জ এবং রিং আইডি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন দুর্নীতিতে এসব ফটকাবাজির পদ্ধতি উঠে আসছে। তারা কীভাবে, কোন পরিকল্পনা করে এদেশে এসব ব্যবসা খুলছে এবং জনগণকে বোকা বানিয়ে তাদের কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচারের পরিকল্পনা করেছে- এসব তথ্য বের হয়ে এলো ই-কমার্স নামক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে।
সম্প্রতি রিং আইডি নামক ই-কমার্স ৩ মাসে ২১৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে গেছে। এরা কখনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এসব ব্যবসা চালু করেনি। এরা নিজেদের পকেট উন্নয়নের জন্য এসব ব্যবসা চালু করেছে। নিজেরা পরিকল্পনা করে কীভাবে সাধারণ জনগণের টাকা হাতিয়ে নিজের পকেটে আনা যায় এই চিন্তা নিয়ে এসব ফটকাবাজ ব্যবসা খুলে আজকে সাধারণ জনগণকে রাস্তায় বসিয়েছে। অন্যদিকে দেশের কোটি কোটি লগ্নী বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের মালিকরাও হতাশায় ভুগছেন। কারণ এদের জন্য ব্যবসার সুনাম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মানুষের বিশ্বাস উঠে যাচ্ছে।
এসব ফটকা ব্যবসায়ীর জন্য আজ দেশের অন্যান্য ব্যবসা খাত পুরোটা ধ্বংসের দিকে চলে যাচ্ছে। বর্তমান বিশ্ব হলো প্রতিযোগিতার বিশ্ব। যেখানে আমরা প্রতিনিয়ত এসব ফটকাবাজের দ্বারা প্রতারণার শিকার হয়ে রাস্তায় বসতে হচ্ছে। একটা সময় দেখা যাবে বিদেশি বিনিয়োগকারী তো দূরের কথা, বাংলাদেশিরাও আর বিনিয়োগ করবে না। কারণ তারা সারাজীবন কষ্ট করে টাকা জমিয়ে লাভের আশায় ব্যবসায় খাটায়। আর কিছু ফটকাবাজ এ টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যাবে। আর তখন সাধারণ মানুষের কী হবে। এসব ফটকাবাজ কখনো সত্যিকার অর্থে দেশের স্বার্থে ব্যবসা করতে আসেনি। এরা নিজের পকেটের স্বার্থে ব্যবসা করতে আসছে। তাই এখনি এসব ফটকা ব্যবসায়ীকে ধরে আইনের আওতায় এনে দেশে এবং বাইরে যত সম্পদ নামে-বেনামে আছে সব সরকারি মালিকানায় এনে সাধারণ জনগণের টাকার ক্ষতিপূরণ দেয়া প্রয়োজন। জনগণ বাঁচলে ব্যবসা বাঁচবে।

মাজহারুল ইসলাম শামীম : শিক্ষার্থী, ফেনী সরকারি কলেজ।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়