বাংলাদেশকে জমি লিজ দিতে চায় আফ্রিকা

আগের সংবাদ

যে কারণে সাংসদদের বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত শেষ হয় না

পরের সংবাদ

হলে ফিরল শিক্ষার্থীরা : প্রাণ ফিরে পেয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশিত: অক্টোবর ৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : এ যেন ঈদ উৎসব। দেড় বছরেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টায় হলের দরজা খুলতেই ভেতরে হুমড়ি খেয়ে পড়েন আগে থেকেই গেটের সামনে অপেক্ষায় থাকা শিক্ষার্থীরা। এ সময় ফুল মিষ্টি, চকোলেট দিয়ে তাদের বরণ করেন হলের হাউস টিউটর ও কর্মকর্তারা। দীর্ঘদিন পর হলে উঠতে পারায় শিক্ষার্থীদের চোখে ছিল আনন্দের বন্যা।
আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হলে আপাতত প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়েছে অনার্স চতুর্থ বর্ষ ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের। এসব শিক্ষার্থীকে অন্তত করোনারোধী একডোজ টিকা নেয়ার সনদ দেখাতে হচ্ছে। এদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, স্যার এ এফ রহমান হল, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, বিজয় একাত্তর হল, কবি জসীমউদদীন হল, জগন্নাথ হল, শামসুন নাহার হল, রোকেয়া হল, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলসহ ১০টিরও বেশি হল পরিদর্শন করে দেখা যায় শিক্ষার্থীরা ট্রাক, রিকশায় করে আসবাবপত্র নিয়ে হলে প্রবেশ করছেন। দীর্ঘ ১৮ মাসের বেশি সময় পরে দেখা হওয়ায় একে অপরকে জড়িয়ে ধরছেন বুকে। একে অপরের সঙ্গে তুলছেন ছবি। পুরনো চিত্রে ফিরে এসেছে বটতলা, সামাজিক বিজ্ঞান চত্বর, মল চত্বরসহ অন্যান্য এলাকা। আড্ডায় মেতে উঠেছেন শিক্ষার্থীরা।
সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হল পরিদর্শনে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। হল পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আজকে আমাদের জন্য একটি আনন্দের দিন, একেবারে ঈদের দিনের মতো। প্রতিটি হলে সবাই আন্তরিকতার সঙ্গে উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিচ্ছে। এই হল, ক্যাম্পাস শিক্ষার্থীদের জন্য, তাদের পেয়ে শিক্ষকদের মধ্যেও একটি প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এর মাধ্যমে দীর্ঘদিনের স্থবিরতার অবসান ঘটল। উপাচার্য বলেন, আমি একটি কক্ষ দেখলাম, সেখানে শিক্ষার্থী উঠেছে। এক শিক্ষার্থী বলল, সে চতুর্থ বর্ষের এবং দুই ডোজ টিকা নিয়েছে। শুনে এত ভালো লাগল, তাকে আন্তরিকতার সঙ্গে অভিনন্দন জ্ঞাপন করলাম। আর এটিই মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অসাধারণ

বৈশিষ্ট্য। কীভাবে শৃঙ্খলা মানতে হয়, নিজেদের নেতৃত্বের জন্য তৈরি করতে হয়, সেই দৃষ্টান্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাখে।
চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী হৃদয় আহমেদ বলেন, সকাল সকাল হলে উঠতে পেরে খুবই আনন্দ লাগছে। হলের স্যাররাও অনেক আন্তরিক। দীর্ঘদিন পর হলে আসলাম। কতটা আনন্দ লাগছে বোঝাতে পারব না। মাস্টার্সের শিক্ষার্থী শোভন হোসেন বলেন, অসাধারণ অনুভূতি। আমরা দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলাম। এখানে এসে মনে হচ্ছে আমরা পুনর্জীবিত হলাম। আমাদের জীবনের যে কলরব ছিল, তা আবার ফিরে পেয়েছি।
শিক্ষার্থীদের বরণ করতে পেরে আনন্দিত হলের প্রাধ্যক্ষ ও হলের আবাসিক শিক্ষকরাও। স্যার এ এফ রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই হল খুলে দেয়ার জন্য। শিক্ষার্থীদের বরণ করতে পেরে আমরাও আনন্দিত। আমাদের বিশ্বাস ছাত্রছাত্রীদের কলরবে হল আবার সরব হয়ে উঠবে।
জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ মিহির লাল সাহা বলেন, সকালেই আমি হলে চলে এসেছি। আমার প্রাণপ্রিয় শিক্ষার্থীদের আগমন আমাকে অনেক আনন্দিত করেছে। আমরা শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ সময় রাখতে চাই। তাই সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান করেন মিহির লাল।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আকরাম হোসেন বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের স্বার্থকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের হলের সব স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারী এ ব্যাপারে আলাদাভাবে নির্দেশনা দিয়ে রেখেছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়