বাংলাদেশকে জমি লিজ দিতে চায় আফ্রিকা

আগের সংবাদ

যে কারণে সাংসদদের বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত শেষ হয় না

পরের সংবাদ

পদ্ম ফুলেই পা হারানো আমজাদের জীবিকা

প্রকাশিত: অক্টোবর ৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. মাজেম আলী মলিন, গুরুদাসপুর (নাটোর) থেকে : ভোর রাতে সাত বছরের শিশু আশিককে নিয়ে বিলের পানিতে পদ্ম ফুল তুলতে নামেন ষাটোর্ধ্ব আমজাদ হোসেন। সকাল পর্যন্ত ফুল সংগ্রহ করেন তিনি। ছোট্ট শিশুটিকে নিয়ে ক্র্যাচে ভর করে স্কুল-কলেজ আর রাস্তায় ঘুরে ফেরি করে বিক্রি করেন সেই ফুল। তাতে আয় হয় ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। এক পা হারানো আমজাদের বেঁচে থাকা সংগ্রামের এ চিত্র প্রতিদিনের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আমজাদের বাড়ি নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পোয়ালশুড়া গ্রামে। সেখানে আব্দুল মান্নান নামের এক ব্যক্তির দুই শতাংশ জায়গায় একটা খুপরি ঘরে কোনোরকমে বসবাস করছেন। পরিবারে স্ত্রী রাশিদা (৫৫) ও শিশুসন্তান আশিক রয়েছেন। ফুল বিক্রি করে যে আয় হয় তাতেই কোনোরকমে দিনাতিপাত করছেন। টাকার অভাবে ছোট্ট শিশুকে লেখাপড়া করাতে পারছেন না। বড় তিন ছেলে বিয়ে করে অনেক আগেই পৃথক সংসার করছেন।
পঙ্গু আমজাদ জানান, আশির দশকে বাম পায়ে পক্ষাঘাত হওয়ায় তা কেটে ফেলতে হয়। তারপর থেকে কোনো কাজ করতে পারেন না তিনি। অন্যের সহযোগিতায় কোনো রকমে দিন পার করছেন। গত প্রায় এক যুগ ধরে সিধুলী বিলের পদ্ম ফুলেই তার জীবিকা অর্জন হয়। বর্ষায় পদ্ম ফুল বিক্রি আর অন্য মৌসুমে মেম্বার, চেয়ারম্যান ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় কাটে জীবন।
৩৬ বছর হলো পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন তিনি। কিন্তু এখন পর্যন্ত সমাজসেবা অফিস থেকে তাকে কোনো প্রতিবন্ধী কার্ড দেয়া হয়নি। সরকারি-বেসরকারি কোনো অনুদানও পাননি তিনি। প্রতিবেশীদের সহায়তায় একটি কৃত্রিম পা দিয়ে ক্র্যাচে ভর করে কোনোরকমে হাঁটা চলা করেন। ফলে আয় না থাকায় অনাহারে অর্ধাহারে দিন পার করতে হচ্ছে ওই অসহায় পরিবারের।
স্ত্রী রাশিদা বেগম জানালেন, তাদের নিজস্ব কোনো জমি নেই। অন্যের জমিতে খুপরি ঘরে কোনোরকমে বসবাস করছেন। এক সময় তার স্বামীর শক্তি ছিল। যে কোনো কাজ করতে পারতেন। কিন্তু পা হারানোর পর থেকে তার পক্ষে জটিল কোনো কাজ করা সম্ভব নয়।
ধারাবারিষা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন বলেন, আমজাদ দীর্ঘদিন ধরেই পদ্ম ফুল বিক্রি করছেন। তার অসহায়ত্ব দেখে পরিষদ থেকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতাও করা হয়েছে। নতুন বরাদ্দ এলে তাকে স্থায়ীভাবে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়