বাংলাদেশকে জমি লিজ দিতে চায় আফ্রিকা

আগের সংবাদ

যে কারণে সাংসদদের বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত শেষ হয় না

পরের সংবাদ

একটি ঐতিহাসিক পত্র

প্রকাশিত: অক্টোবর ৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

পরাধীন ব্রিটিশ-ভারত থেকে পাকিস্তানের কালো অধ্যায় পেরিয়ে জন্ম হয় বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট্রের। এই মহান অর্জনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ইতিহাসের মোড় ঘোরানো নানা ঘটনা, যার কারিগর হিসেবে কেউ আখ্যায়িত হয়েছেন নায়কের অভিধায়; কেউবা আবির্ভূত হয়েছেন খলনায়কের চরিত্রে। ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে সেসব ঘটনা ও তার নায়ক-খলনায়কদের কার কী ভূমিকা, তাই নিয়েই অধ্যাপক আবু সাইয়িদের গ্রন্থ ‘যেভাবে স্বাধীনতা পেলাম’। স¤প্রতি ভোরের কাগজ প্রকাশন থেকে বের হয়েছে বইটি। এ বই থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রতিদিন কিছু অংশ তুলে ধরা হচ্ছে ভোরের কাগজের পাঠকদের জন্য।
১৫ ডিসেম্বর ১৯৭১। বাংলাদেশ সবেমাত্র স্বাধীন হতে যাচ্ছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নিক্সনকে একটি অতি জরুরি বার্তা পাঠান। ওই বার্তায় শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী বলেন : ‘আমি এমন এক সময় আপনাকে চিঠি লিখছি, যখন ভারত-আমেরিকার মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে কিছুটা অসুবিধাজনক অবস্থা তৈরি হয়েছে। সেহেতু আমি আপনাকে ধৈর্যের সঙ্গে গোড়া থেকেই পুরো ব্যাপারটি নিয়ে ভাবতে অনুরোধ করেছি। এমন কিছু কিছু সময় আসে যখন বর্তমানের গভীর সংকটকে অতীতের কিছু মহৎ ঘটনাবলি দিয়ে আলোকিত করতে হয়। তেমনি একটি ঘটনা আমেরিকা কর্তৃক তার ঐতিহাসিক স্বাধীনতার ঘোষণার জন্য লাখ লাখ মানুষ মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হয়েছিল। সেই ঘোষণায় বলা হয়েছিল, যখন কোনো সরকার তার জনগণের অধিকারের ক্ষেত্রে ক্ষতিকর বিবেচিত হয়, তাকে ধ্বংস করার ক্ষমতা সেদেশের জনগণের রয়েছে।
বিশ্বের সব মানবিক দেশ ২৫ মার্চের ভয়াবহ ঘটনাকে সাড়ে সাত কোটি মানুষের বিদ্রোহ বলে দেখছেন। যারা সারাজীবন কেবল উপেক্ষা আর বঞ্চনাকে সহ্য করেছে। বিশ্বের প্রায় সব প্রচার মাধ্যমে ২৬ মার্চের ভয়াবহতাকে তুলে ধরেছে, যা আপনি অবগত। আমেরিকার বোদ্ধা জনগণও বিষয়টিকে, পূর্ববাংলার মানুষের দাবিগুলোকে, উপস্থাপন করেছেন তাদের বিশ্লেষণে। আমেরিকা যদি এক্ষেত্রে তার প্রভাব ও কর্তৃত্ব দিয়ে অন্তত শেখ মুজিবকে মুক্তি প্রদানের ব্যবস্থা করত, তাহলে অন্তত যুদ্ধ এড়ানো যেত।
মি. প্রেসিডেন্ট, আমি গভীর আন্তরিকতা নিয়ে আপনাকে একটি প্রশ্ন করতে চাই, একজন মানব শেখ মুজিবুর রহমান তাকে মুক্তি দিলে কিংবা তার সঙ্গে গোপনে সমঝোতা করার চাইতে একটি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া কি ভয়ানক বিপর্যস্ত অবস্থা সৃষ্টি করেনি?’
শেখ মুজিবের মুক্তির জন্য

মহাশক্তিধর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে অভিযুক্ত করে লেখা এ ধরনের একটি পত্র সমকালীন ইতিহাসে বিরল।
বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও শেখ মুজিবের মুক্তি সমার্থক হয়ে ওঠে। প্রবাসীদের মিছিল, মিটিং এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সর্বদা প্রচারিত হয় বিশ্ব গণমাধ্যমে। বিশ্ব কূটনীতি, জনমত এবং পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর অসহায় আত্মসমর্পণ তার মুক্তি ত্বরান্বিত করে তুলেছিল।

আগামীকাল প্রকাশিত হবে
‘অন্তহীন জটিলতা ও ষড়যন্ত্র
এবং অন্যান্য প্রসঙ্গ’
‘যেভাবে স্বাধীনতা পেলাম’- বইটি পাওয়া যাচ্ছে ভোরের কাগজ প্রকাশনে (ভোরের কাগজ কার্যালয়, ৭০ শহীদ সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা)। এছাড়া সংগ্রহ করা যাবে bhorerkagojprokashan.com থেকেও।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়