তরুণীরাই মূল টার্গেট : একটি চক্রের হাতে ২ হাজার নারীর অ্যাকাউন্ট হ্যাক

আগের সংবাদ

সিসিটিভির আওতায় আসছে রাজধানী : এ মাসেই হতে পারে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন

পরের সংবাদ

সরবরাহে ঘাটতি নেই : একদিনেই পেঁয়াজের দাম কেজিতে বাড়ল ৩০ টাকা

প্রকাশিত: অক্টোবর ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৫, ২০২১ , ১২:৪১ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন খুচরা বাজারে হঠাৎ করেই বেড়েছে পেঁয়াজের ঝাঁঝ। গত শুক্রবার রাজধানীর বাজারগুলোতে প্রকার ভেদে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। রবিবার ১০ টাকা বেড়ে দাঁড়ায় ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। গতকাল সোমবার একলাফে কেজিপ্রতি পেঁয়াজের দাম বেড়ে এলাকাভেদে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হয়। ঢাকার বাইরে কোথাও কোথাও কেজিপ্রতি ৩০-৩৫ টাকা বাড়িয়ে বিক্রির খবরও পাওয়া গেছে। সরবরাহে ঘাটতি নেই। চাহিদাও স্বাভাবিক। তারপরও বাড়ছে এ নিত্যপণ্যের দাম। বরাবরের মতোই একজন আরেক জনের উপরে দোষ চাপাচ্ছেন। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, আমদানি বন্ধ থাকায় পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। এতে খুচরা বাজারেও বেড়েছে। আর পাইকারি ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা বলছেন, কাঁচামাল যখন আমদানি (সরবরাহ) ভালো হয় তখন দাম কম থাকে, যখন আমদানি কমে যায় তখন দাম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক।
রাজধানীর খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে দেশি জাতের যে পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে, গতকাল সেগুলোই ৬৫ থেকে ৭০ টাকা হাকাচ্ছেন বিক্রেতারা। এ ছাড়া আমদানির পেঁয়াজ দুদিন আগেও বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকা কেজি। গতকাল খুচরা বিক্রেতারা সেই পেঁয়াজের দাম চাইলেন ৬০ টাকা কেজি।
জানতে চাইলে রাজধানীর শান্তিনগর কাঁচাবাজারের বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, পাইকারি বাজারে গতকাল যে পেঁয়াজ কিনেছি ৫৫ টাকা কেজি, আজ সেগুলোই ৬০ টাকা কেজি। দিন গেলেই দাম বাড়ছে। গত পরশু এসব পেঁয়াজের দাম ছিল ৩৮ থেকে ৪০ টাকা কেজি। বর্ডার দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হওয়ায় দাম বেড়েছে। রাজধানীর কাওরানবাজারের ব্যবসায়ী মনির হোসেন জানিয়েছেন, পাইকারি বাজারেই দাম বেড়েছে।

তাই আমরাও বাড়িয়ে বিক্রি করছি। এছাড়া আমাদের উপায় কী? তবে খুচরা পর্যায়ে হয়তো ৫ টাকা বেড়েছে। কারণ, তারও তো পরিবহন খরচ রয়েছে।
এ বিষয়ে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, পেঁয়াজের দাম বাড়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাজার মনিটরিং টিম প্রতিনিয়তই বাজারে কাজ করছে। অস্বাভাবিকভাবে কেউ যদি মনোপলি করে তবে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ সময় পেঁয়াজের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই বলেও জানান তিনি।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, দেশের অন্যতম বৃহত্তর পেঁয়াজের আড়ত শ্যামবাজারে গত সপ্তাহের শেষ দিকে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা কেজি। গতকাল সেই পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫৪ থেকে ৫৬ টাকা কেজি। আমদানির পেঁয়াজ গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজি। গতকাল তা ৪৭ থেকে ৪৮ টাকা কেজিতে উঠে গেছে। জানতে চাইলে শ্যামবাজার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজি আবদুল মাজেদ বলেন, সরবরাহের ওপরে কাঁচামালের বাজার নিয়ন্ত্রিত হয়। সরবরাহ কমে গেলে দাম বাড়ে। বাজারে এখন পেঁয়াজ কম তাই দামও বেশি। হঠাৎ দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন আমদানি কম। ভারতেও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। এছাড়া গত বছর আমি পেঁয়াজে লোকসান গুনেছি তিন কোটি টাকা।
জানা গেছে, হিলি বা বেনাপোল কোনো বন্দর দিয়েই পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়নি। তবে কয়েক দিন ধরে ভারতে বৃষ্টি হওয়ায় পরিবহনে থাকা পেঁয়াজে পচন ধরেছে। এতে ভালো পেঁয়াজ আসছে কম। এ ছাড়া যেগুলো আসছে সেগুলোর দামও কেজিতে ১০ টাকা বেশি। এ বিষয়ে শ্যামবাজারের পেঁয়াজ আমদানিকারক মোসলেম উদ্দিন বলেন, আর এক থেকে দেড় মাস পরেই নতুন পেঁয়াজ উঠবে। সরবরাহ পরিস্থিতিও ভালো। আমদানিও স্বাভাবিক। এমন সময় দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই বলে জানান তিনি।
এদিকে হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি গ্রুপের সভাপতি হারুন-উর রশিদ স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, ভারতে বন্যার কারণে পেঁয়াজের উৎপাদন নষ্ট হয়ে গেছে, যে কারণে ভারতেই পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। আমদানি করতে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হচ্ছে, ফলে দেশের বাজারে কিছুটা দাম বেড়েছে।
উল্লেখ্য, প্রতি বছর দেশে পেঁয়াজের চাহিদা ২৫ লাখ মেট্রিক টন। ২০১৯-২০ অর্থবছর দেশে উৎপাদন হয়েছে ২৫ লাখ ৫৭ হাজার মেট্রিক টন। উৎপাদিত পেঁয়াজের ২৫ শতাংশ পচে যায়। তাই প্রকৃত উৎপাদন ১৯ লাখ ১১ হাজার মেট্রিক টন। চাহিদার বাকি ঘাটতি মেটাতেই আমদানি করা হয়েছে ৪ লাখ ৫৯ হাজার টন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়