তরুণীরাই মূল টার্গেট : একটি চক্রের হাতে ২ হাজার নারীর অ্যাকাউন্ট হ্যাক

আগের সংবাদ

সিসিটিভির আওতায় আসছে রাজধানী : এ মাসেই হতে পারে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন

পরের সংবাদ

সবুজে পরিণত বরেন্দ্র এলাকা : সোনালি ফসলের অপার সম্ভাবনা

প্রকাশিত: অক্টোবর ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আকবর হোসেন, সাপাহার (নওগাঁ) থেকে : রাজাশাহীর বরেন্দ্র এলাকা ১৯৯০ সালের আগেও ছিল মরুর মতো। এখন সব পাল্টে সবুজে পরিণত হয়েছে। বিরানভূমিতে সোনালি ফসলের অপার সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) উদ্যোগে।
সেচে ভূপরিস্থ এবং ভূগর্ভস্থ পানি সম্পদের উন্নয়ন ও যথাযথ ব্যবহার, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, বীজ উৎপাদন, সরবরাহ শস্যের বহুমুখীকরণ, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গাছ রোপণ ও সংরক্ষণ, সীমিত আকারে সংযোগ সড়ক নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ, সেচযন্ত্র স্থাপন এবং লোকালয়ে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ, গবেষণা ও প্রশিক্ষণ দেয়ার উদ্দেশ্যে কার্যক্রম শুরু করে বিএমডিএ। নওগাঁর সাপাহার উপজেলার শিতল ডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আব্দুল লতিফ বলেন, ‘১৯৮৫ সালের আগে আমাদের এলাকায় বছরে একটি ফসল হতো। একরে ১৫-২০ মণ ধান হতো। তবে যে বছর বৃষ্টি কম হতো, সে বছর কোনো ফসলে ঘরে আসত না। এখন একরে ৮০-৯০ মণ পর্যস্ত ধান হচ্ছে।’ উপজেলার রামরামপুর (জঙ্গলি মাঠ) গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সাপাহারে শত শত হেক্টর এলাকাজুড়ে আমের চাষ হয়। পানির সঠিক সেচ ব্যবস্থা থাকায় আম পুষ্ট এ সুমিষ্ট হয়। এই সাফল্যের দাবিদার কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় ও বিএমডিএ।’
বিএমডিএর সাপাহার কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘উপজেলায় ৩২৩টি নলকূপসহ, এলএলপি, সৌর শক্তিচালিত এলএলপি, খাল পুনঃখনন, খাবার পানি সরবরাহের জন্য ওভারহেড ট্যাংক নির্মাণ, বনায়নসহ পানির সঠিক ব্যবহারে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। এসব কাজ শেষ হলে এলাকার মানুষ আরো সুফল পাবে।’
বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালক মো. আব্দুর রশিদ বলেন, ‘বরেন্দ্র এলাকার উন্নয়ন কৃৃষি ও কৃষি পরিবেশে এবং সেচ অবকাঠামো উন্নয়নসহ সেচ এলাকা ও আবাদি জমি স¤প্রসারণ, মানসম্পন্ন বীজ উৎপাদন ও বিপণন এবং পরিবেশ উন্নয়নে ফলদসহ অন্যান্য বৃক্ষ রোপণে কাজ শুরু করে কৃষি সেক্টরে সফলতার সঙ্গে এগিয়ে চলছে বিএমডিএ।’
বরেন্দ্র এলাকার উন্নয়নের জন্য ১৯৯২ সালের ১৫ জানুয়ারি রাজশাহী, নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ২৫টি উপজেলাকে অন্তÍর্ভুক্ত করে বিএমডিএ নামে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে আলাদা একটি প্রতিষ্ঠান গঠন করা হয়।
বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ জানান, ১৯৮৫ সালের আগে লাল কংকরময় মাটির উঁচু নিচু টিলা, ছায়াহীন এক রুক্ষ প্রান্তর ছিল বরেন্দ্র অঞ্চল। চোখের দৃষ্টিসীমায় রোদে পোড়া বিরান ফসলের মাঠ। কোথাও পানির ছিটেফোঁটাও নেই। চৈত্রের কাঠফাটা রোদে প্রাণ ওষ্ঠাগত শীর্ণকায় কৃষক, তার চেয়ে অধিক শীর্ণকায় তার হালের বলদ। দূরে বহু দূরে তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে, মাঝে মাঝে বাবলা আর ক্যাকটাসের বেড়া। তবে ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় প্রাচীনকালে বরেন্দ্র ভূমির চিত্র ভিন্ন ছিল। খ্রিস্টপূর্ব ৩০০ অব্দ থেকে শুরু করে বৌদ্ধ ধর্ম ও কৃষ্টির প্রসারকালে এ অঞ্চল কৃষি ও শিল্প সমৃদ্ধ এলাকা হিসেবে পরিচিত ছিল। এ অঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশও সে সময় বেশ চমৎকার ছিল।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়