তরুণীরাই মূল টার্গেট : একটি চক্রের হাতে ২ হাজার নারীর অ্যাকাউন্ট হ্যাক

আগের সংবাদ

সিসিটিভির আওতায় আসছে রাজধানী : এ মাসেই হতে পারে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন

পরের সংবাদ

শৈলকুপা মহিলা অধিদপ্তর : কিশোর-কিশোরী ক্লাবের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

প্রকাশিত: অক্টোবর ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মনিরুজ্জামান সুমন, শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) থেকে : শৈলকুপায় কিশোর-কিশোরী ক্লাবের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। শৈলকুপা মহিলা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা রেশমা খানমের বিরুদ্ধে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে সরকার পৌরসভাসহ ১৪টি ইউনিয়নে একটি করে কিশোর-কিশোরী ক্লাব গঠনের নির্দেশ দেয়। সে মোতাবেক প্রতিটি ক্লাবে ৬ থেকে ১৫ বছর বয়সি ৩০ জন শিক্ষার্থী সংগ্রহ করা হয়। ক্লাবে নাচ, গান-কবিতা আবৃতি শেখানোর জন্য পৌরসভাসহ ১৪টি ইউনিয়নে বিভিন্ন পর্যায়ে লোকবল নিয়োগ করা হয়। প্রতি ৫টি সেন্টারের জন্য একজন করে তিনজন কো-অর্ডিনেটর, প্রতিটি ক্লাবে একজন করে কবিতা আবৃতি ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়। এছাড়া সংরক্ষিত মহিলা আসনের স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ওই ক্লাবের সম্মানিত সদস্য হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। ১৫ জন সম্মানী ভাতাপ্রাপ্ত জনপ্রতিনিধির অভিযোগ উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা রেশমা খানম তাদের প্রকৃত সম্মানী কত টাকা, কোন মাস থেকে প্রকল্প শুরু, সম্মানীর টাকা উত্তোলনের প্রক্রিয়া কিছুই জানাননি। বরং কেউ জিজ্ঞেস করলে তাদের হুমকি-ধমকি-ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে।
পৌরসভার কাউন্সিলর আঞ্জুমান আরা তার লিখিত অভিযোগে জানান, সম্মানী ভাতার প্রকৃত হিসাব চাওয়ায় তাকে আজ অবধি একটি টাকাও দেয়া হয়নি বরং অত্যন্ত খারাপ ব্যবহার করে অফিস থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। উপায়ন্তর না পেয়ে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তর ও উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। মডেল স্কুল সেন্টারের নিয়োগপ্রাপ্ত একজন শিক্ষক জানান, প্রকল্পটি শুরু থেকেই আর্থিক অনিয়মে চলছে। শুরু থেকেই প্রতিদিন ছাত্রদের জন্য নাশতা খরচ ছিল মাথাপিছু ১৫ টাকা, সে হিসাবে প্রতি ক্লাবে ৩০ জনের ৪৫০ টাকা প্রতিদিন। এই হিসাবে প্রতি মাসে একটি ক্লাবের মাসিক নাশতা খরচ ৩ হাজার ৬০০ টাকা। অর্থাৎ ১৫টি ক্লাবে মাসে ৫৪ হাজার টাকা শুধু নাশতা খরচের বরাদ্দ রয়েছে। ২০১৯ সালের নভেম্বর থেকে অদ্যবধি ২৪ মাসের হিসাবমতে ১২ লাখ ৯৬ হাজার টাকার নাশতা খরচের বরাদ্দ হওয়ার কথা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৩ বছর একই কর্মস্থলে থাকার বিধান থাকলেও বিগত ১০ বছর একই উপজেলায় কর্মরত থাকার সুবাদে গড়ে তুলেছেন ব্যক্তিগত সিন্ডিকেট। নিজ জেলা/উপজেলায় প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তাদের পদায়নের বিধিনিষেধ থাকলেও তিনি অধিদপ্তরের অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে নিজ উপজেলায় পদায়ন বাগিয়ে নিয়েছেন। তবে ২২-১২-২০১৪ তারিখে অন্যত্র বদলি হয়ে ৬ মাস পর আবারো ফিরে আসেন শৈলকুপায়। দিনে দিনে বিভিন্ন পন্থায় অর্জন করেছেন সম্পদের পাহাড়। মনোহরপুর ইউনিয়নের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি নার্গিস পারভীন জানান, মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা রেশমা খানম মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড করার জন্য ৮-১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ গ্রহণ করেন এবং ইউনিয়ন পর্যায়ের বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে সখ্যতা তৈরি করে প্রচুর কার্ড বিক্রি করে থাকেন। বছরের পর বছর একই উপজেলায় চাকরির সুবাদে তিনি তৈরি করেছেন শক্ত অবস্থান, সে কারণেই ধরাকে সরাজ্ঞান করে দাপটের সঙ্গে অফিস চালিয়ে যাচ্ছেন। তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অর্থের অনুসন্ধান করলেই বেরিয়ে আসবে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।
এ বিষয়ে উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা রেশমা খানম প্রকল্পটির অর্থনৈতিক বিষয়ে জানার জন্য জেলা কর্মকর্তা/প্রকল্প কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলার অনুরোধ জানান। এ ব্যাপারে প্রকল্পের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা লিজা জানান, একাধিক সদস্যদের কাছ থেকে রেশমা খানমের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ এসেছে, যা তদন্ত করে দেখা হবে। তবে শুরু থেকে তিনি ছিলেন না বলে পূর্বের বিষয়টি তার জানা নেই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়