তরুণীরাই মূল টার্গেট : একটি চক্রের হাতে ২ হাজার নারীর অ্যাকাউন্ট হ্যাক

আগের সংবাদ

সিসিটিভির আওতায় আসছে রাজধানী : এ মাসেই হতে পারে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন

পরের সংবাদ

রেলওয়ের ফিশপ্লেট চুরি : মামলার অগ্রগতি নেই হয়নি আসামি গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: অক্টোবর ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ফেরদৌস জুয়েল, গাইবান্ধা থেকে : গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়ায় বাংলাদেশ রেলওয়ের সিনিয়র উপসহকারী প্রকৌশলীর (ওয়ে) ই-৬৭-এ নম্বর গোডাউন থেকে ১৩ লাখ ২৯ হাজার ৯০০ টাকা মূল্যের ফিশপ্লেট চুরির মামলার কোনো অগ্রগতি নেই। আসামি গ্রেপ্তারেও উদ্যোগ নেই পুলিশের। এদিকে জড়িত রেল কর্মচারীদের বিরুদ্ধে রেল কর্তৃপক্ষ বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
রেলওয়ে অফিস সূত্রে জানা যায়, বামনডাঙ্গার জ্যেষ্ঠ উপসহকারী প্রকৌশলী (ওয়ে) দীপক কুমার সিংহ গত ২০১৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর থেকে ২০১৫ সালের ১০ আগস্ট পর্যন্ত বোনারপাড়া জ্যেষ্ঠ উপসহকারী প্রকৌশলী (ওয়ে) হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০১৫ সালের ১৮ আগস্ট থেকে এ বছর ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মো. আফজাল হোসেন, মহেন্দ্রনাথ, মো. আকবর আলী, আবারো আফজাল হোসেন ও মো. আকবর আলী এবং সর্বশেষ মাজেদুল ইসলাম ধারাবাহিকভাবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন।
দীপক কুমার সিংহ ২০১৫ সালের ১৮ আগস্ট দায়িত্ব বুঝে দেয়ার সময় মো. আফজাল হোসেনকে বগুড়ায় বদলি করা হয়। যে কারণে কাগজেকলমে সম্পূর্ণ দায়িত্ব হস্তান্তর করা সম্ভব হয়নি। এরপর জ্যেষ্ঠ উপসহকারী প্রকৌশলী (ওয়ে) দীপক কুমার সিংহ লালমনিরহাট, তিস্তা, পার্বতীপুর এবং সর্বশেষ বগুড়ার সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে ২০১৮ সালের ৩১ আগস্ট অবসরে যান। দীপক কুমার সিংহ ২০১৫ থেকে মো. আফজাল হোসেন, মহেন্দ্রনাথ ও আকবর আলীকে দায়িত্ব বুঝে দেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাদের ঘনঘন বদলির কারণে কেউ সম্পূর্ণ দায়িত্ব বুঝে নেন নাই। অবশেষে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তরফে বর্তমানে কর্মরত মাজেদুল ইসলামকে দায়িত্ব বুঝে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু তিনি নানা অজুহাতে কাগজেকলমে মালামালের দায়িত্ব বুঝে নেয়া থেকে বিরত থাকছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বোনারপাড়ার সিনিয়র উপসহকারী প্রকৌশলীর (ওয়ে) গোডাউনে রেলপথ মেরামতের কাজে ব্যবহৃত প্রায় ১৪ হাজার ফিশপ্লেট রক্ষিত ছিল। গত ১০ আগস্ট সিনিয়র উপসহকারী প্রকৌশলী মাজেদুল ইসলামকে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন অবসরে যাওয়া সিনিয়র উপসহকারী প্রকৌশলী দীপক কুমার সিংহ। ওইদিন দায়িত্ব হস্তান্তরের পর গোডাউন খুলে গুনে গুনে ফিশপ্লেট বুঝে দেয়ার সময় দেখা যায়, ৮ হাজার ৮৬৭ পিস ফিশপ্লেট নেই। এসবের ওজন প্রায় ৪৪ দশমিক ৩৩ টন। যার আনুমানিক মূল্য ১৩ লাখ ২৯ হাজার ৯০০ টাকা।
সাবেক সিনিয়র উপসহকারী প্রকৌশলী (ওয়ে) দীপক কুমার সিংহ বিষয়টি তাৎক্ষণিক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় রেলওয়ে থানার পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীকে অবহিত করেন। রেলওয়ে থানার পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ফিশপ্লেট চুরির বিষয়টি নিশ্চিত হন। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ১০ আগস্ট বোনারপাড়া রেলওয়ে থানায় মামলা করা হয়। দীপক কুমার সিংহ বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। মামলায় গোডাউনের দায়িত্বে নিয়োজিত নিরাপত্তাকর্মী (রেল কর্মচারী) সবুজ মিয়া, রব্বানী মিয়া, রাজু মিয়া, সামিদুল ও মুকুল মিয়াকে আসামি করা হয়।
এদিকে মামলা দায়েরের পর গত (২৮ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত এক মাস ১৮ দিন পেরিয়ে যায়। কিন্তু মামলার কোনো অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশের কোনো তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এমনকি জড়িত রেল কর্মচারীদের বিরুদ্ধে রেল কর্তৃপক্ষ বিভাগীয় ব্যবস্থাও গ্রহণ করেনি।
মামলার বাদী দীপক কুমার সিংহ বলেন, রেলওয়ে পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে। তারপরও নিরাপত্তা প্রহরীদের গ্রেপ্তার করছে না। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে না। রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা প্রহরীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় চুরির বিষয়টি ধামাচাপা পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে রেলওয়ে থানার ওসি তাপস কুমার পণ্ডিত বলেন, অগ্রগতি নেই, অভিযোগটি সঠিক নয়। কারণ ঘটনার পর থেকে তদন্ত অব্যাহত আছে। এজাহার নামীয় আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কিন্তু তারা রেলের কর্মচারী। তাদের সংগঠন শক্তিশালী। তথ্যপ্রমাণ ছাড়া গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না। সেগুলো সংগ্রহ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, রেল কর্তৃপক্ষ বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে পারে। কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দিলেও পুলিশ আসামিদের ধরতে পারে। তবে নিরাপত্তাকর্মী রাজু মিয়া বলেন, চুরির সঙ্গে তারা জড়িত নন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়