তরুণীরাই মূল টার্গেট : একটি চক্রের হাতে ২ হাজার নারীর অ্যাকাউন্ট হ্যাক

আগের সংবাদ

সিসিটিভির আওতায় আসছে রাজধানী : এ মাসেই হতে পারে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন

পরের সংবাদ

অসহায় স্কুল শিক্ষকের প্রশ্ন : পা হারানো ছেলের ভবিষ্যৎ কী?

প্রকাশিত: অক্টোবর ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় পা হারানো নাসিমুল মোহাইমেন ফিরোজী মিতুর (৩৩) চোখে মুখে এখন অন্ধকারের ছাপ। বাবা-মাসহ তার পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসা ব্যয় বহন ও ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তার কুলকিনারা করতে পারছেন না। ১০ দিন পেরুলেও দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বাস ও চালক এখনো চিহ্নিত হয়নি। দুর্ঘটনার দায় কার মিলছে না এ প্রশ্নের সদুত্তর। দুই ভাইয়ের মধ্যে বড় মিতুর বাড়ি সাভার পৌর এলাকার গেণ্ডা মহল্লায়। তার বাবা সাভার অধর চন্দ্র সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রভাতী শাখার সহকারী প্রধান শিক্ষক খোরশেদ উজ্জামান ফিরোজী। মিতু চার বছর ধরে নারায়ণগঞ্জের ভুলতায় আল রাজি স্পিনিং মিলে স্টোর অফিসার হিসেবে চাকরি করেন।
ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, ২৩ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মিতু কর্মস্থল থেকে তার রুমমেট জাফরের সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। অল্প কয়েক কিলোমিটার চলার পর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ মহাসড়কের রূপগঞ্জ থানার অন্তর্গত এলাকায় বিপরীতমুখী এক বাস রং সাইড দিয়ে এসে তাদের মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এতে মিতু ও জাফর রাস্তার দুপাশে ছিটকে পড়েন। মিতু ডান পায়ে মারাত্মকভাবে আঘাত পান। উপস্থিত লোকজন তাদের উদ্ধার করলেও চালক বাস নিয়ে পালিয়ে যায়। তাদের স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নেয়া হলেও অবস্থা ছিল বেগতিক। এর মধ্যে মিতুর সহকর্মীরা খবর পেয়ে তাদের অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। রাতে মিতুকে ঢাকার জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বসান প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) নেয়া হয়। জাফরকে পাঠানো হয় ট্রমা সেন্টারে। খবর পেয়ে মিতুর বাবা খোরশেদ উজ্জামান ফিরোজীসহ পরিবারের সদস্যরা নিটোর পৌঁছেন। নিরুপায় মিতুর পরিবার সেখানে দ্রুত চিকিৎসাসেবা পেতে কয়েকজনকে ‘বখশিশ’ দেন। এরপর পরীক্ষার জন্য তাকে নেয়া হয় জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে। প্যাথলজি পরীক্ষার পরও নিটোরে সুফল না পেয়ে ভোর রাতে মিতুকে নেয়া হয় ট্রমা সেন্টারে। সেখানে অপারেশনের নিশ্চয়তা না পেয়ে নেয়া হয় মিরপুর হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতালে। সেখানেও অপারেশনের নিশ্চয়তা না পেয়ে ইবনে সিনা ও সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে। এরপর তাকে ফিরিয়ে আনা হয় ট্রমা সেন্টারে। অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে দুদিন ধরে অ্যাম্বুলেন্সে শুয়ে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ছুটে বেড়ান মিতু ও তার বাবা-মা। এর দুদিন পর রবিবার রাতে ট্রমা সেন্টারে অপারেশন করে তার ডান পা হাঁটুর উপর থেকে কেটে ফেলা হয়। এরপর থেকে তিনি ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অছেন। এ ঘটনায় মিতুর বাবা খোরশেদ উজ্জামান ফিরোজী বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় ৩০ সেপ্টেম্বর মামলা দায়ের করেছেন। ফিরোজী জানান, মহাসড়কে পুলিশের সিসিটিভি রয়েছে। এর সূত্র ধরে রং সাইড দিয়ে এসে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে যাওয়া বাস ও চালক শনাক্ত করা যাবে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, তার ছেলে চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেল, অনিশ্চিত হয়ে পড়ল তার ভবিষ্যৎ। এর চিকিৎসাও ব্যয়বহুল। এরই মধ্যে খরচ হয়েছে কয়েক লাখ টাকা। হাসপাতালের পাওনা বাড়ছে। কে নিবে মিতুর দায়িত্ব, দুর্ঘটনার দায় কার- এমন অনেক প্রশ্ন নিয়ে বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়