গঙ্গা-যমুনা নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব : শিল্পকলায় দ্বিতীয় দিনে ছিল দর্শকদের উপচে পড়া ভিড়

আগের সংবাদ

জাতিসংঘ থেকে ফিরে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা : রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হওয়ার নেপথ্যে আন্তর্জাতিক নিষ্ক্রিয়তা

পরের সংবাদ

হ্যাকার থেকে বাঁচব কীভাবে

প্রকাশিত: অক্টোবর ৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৩, ২০২১ , ১০:১২ অপরাহ্ণ

বাংলাদেশের স্কুল-কলেজের যেসব শিক্ষার্থী উপবৃত্তি পান তাদের OTP-এর (One Time Password) ছলচাতুরির মাধ্যমে নিয়ে বিকাশ প্রতারকরা অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তাছাড়া যারা বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতাসহ বিভিন্ন ভাতা পান তাদের বিভিন্ন রকম পরিচয় দিয়ে ছলচাতুরির মাধ্যমে পিন নম্বর এবং ওটিপি নিয়ে টাকা তুলে নিচ্ছে। যারা উপবৃত্তির জন্য আবেদন করছেন বিভিন্ন সংগঠনের কাছে, যেমন ইসলামী ব্যাংক, ডাচ্ বাংলা ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বা কর্মচারীর মাধ্যমে ফরমগুলো প্রতারকদের হাতে চলে যাচ্ছে এবং তারা বিশ্বস্ততা অর্জনের জন্য প্রথমে উপবৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের কাছে প্রফেসর পরিচয় দিয়ে তাদের বাবার নাম, মায়ের নাম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কলেজ রোল, পরীক্ষার রোল, রেজিস্ট্রেশন নম্বর বলছে। আরো বলছে ইসলামী ব্যাংক, ডাচ্ বাংলা ব্যাংক এবং ব্র্যাক ব্যাংকের মাধ্যমে তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা পাঠিয়েছে যেমন- ৩ হাজার ৪০০, ১০ হাজার ২০০ এ রকম।
তারপর বিকাশ প্রতারক বলছে আপনার মোবাইলে একটি মেসেজ যাবে, মেসেজটি ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে বললে ৬৪ জেলায় একযোগে টাকা চলে যাবে। এর মাধ্যমে প্রতারকরা অন টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি-৬ সংখ্যার কোড) নিয়ে অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে দিচ্ছে এবং টাকা তুলে নিচ্ছে। সারাদেশে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তারা এ রকম প্রতারণা করছে, এমনকি যাদের বিকাশ অ্যাকাউন্ট আছে তাদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে অ্যাকাউন্ট ও টাকা মেরে দিচ্ছে।
প্রতারকরা সুমিষ্ট এবং সুমধুর কণ্ঠ দিয়ে মানুষের মস্তিষ্ককে বশে আনছে। গ্রামের অনেক শিক্ষার্থী এবং সিনিয়র সিটিজেনদের আইটি জ্ঞান কম থাকায় তারা এসব প্রতারকের ফাঁদে পড়ছে এবং সর্বস্বান্ত হচ্ছে অর্থ হারিয়ে। কেনিয়া, ইন্ডিয়া, চায়না, কোরিয়া, নাইজেরিয়ার হ্যাকারদের সঙ্গে এদেশের ধূর্ত হ্যাকারদের যোগসাজশে এহেন নিকৃষ্ট অসৎ কর্ম সংঘটিত হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে এ রকম প্রতারণা ঘটেই চলেছে। এক্ষেত্রে বিকাশ, রকেট, উপায়, নগদ ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের সিকিউরিটি সিস্টেম স্ট্রং করতে হবে। উচ্চশিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থান করতে হবে।
বিকাশের পিন নম্বর হ্যাক করার জন্য তারা বিভিন্ন ট্রিকস ব্যবহার করে যেমন- প্রথমে বলছে ৭২২০০৩১, তারপর আপনার গোপন নম্বরটি লিখুন, তারপর সব অঙ্ক বা সংখ্যা বলুন। সাধারণ শিক্ষার্থী বা ব্যক্তি যখন সব সংখ্যা বলবেন তার থেকে ৭২২০০৩১ বাদ দিলেই তো পিন নম্বর চলে যাবে প্রতারকের কাছে।
দ্বিতীয় আরেকটি ট্রিকস হলো- প্রতারক বলবে আপনার মোবাইলে ক্যালকুলেটর নিন, তারপর বসান বিভিন্ন মেয়াদে দেয়া টাকা যেমন ৩,৪০০ + ৭,২০০ + (আপনার গোপন নম্বর [পিন]) =? তারপর মোট কত হয়েছে বলুন। ভিকটিম বা সাধারণ ব্যক্তি টোটাল কত হয়েছে বললে তার থেকে ৩ হাজার ৪০০ এবং ৭ হাজার ২০০ টাকা বিয়োগ করলেই তার পিন নম্বর প্রতারকের কাছে চলে যাবে।
তৃতীয়ত তারা বলবে আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্টে ব্যক্তিভেদে অ্যামাউন্ট ৫০০০০ বা ১০২০০ বা দুই লাখ বা সাত হাজার- এ রকম টাকা দেয়া হয়েছে আপনার কাছে একটি মেসেজ যাবে, সেটি ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে বললে (অন টাইম পাসওয়ার্ড- ওটিপি) আপনার টাকা বিকাশ অ্যাকাউন্টে চলে যাবে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে শিক্ষার্থী বা ভিকটিম ব্যক্তির বিকাশ অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে অপরিচিত ব্যক্তিদের ফোন কল রিসিভ না করাই উত্তম।
সবাই সচেতন হয়ে এই সচেতনতা সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে, যাতে কোনো শিক্ষার্থী বা খেটে-খাওয়া গরিব অসহায় ব্যক্তির টাকা প্রতারক চক্র হ্যাক করতে না পারে। প্রতারক চক্রের ডেরা সমূলে উপড়ে ফেলতে হবে। সাধারণ মানুষকে প্রতারকের কবল থেকে বাঁচাতে হবে।
মো. ওসমান গনি
শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়