গঙ্গা-যমুনা নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব : শিল্পকলায় দ্বিতীয় দিনে ছিল দর্শকদের উপচে পড়া ভিড়

আগের সংবাদ

জাতিসংঘ থেকে ফিরে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা : রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হওয়ার নেপথ্যে আন্তর্জাতিক নিষ্ক্রিয়তা

পরের সংবাদ

নেই স্বাস্থ্য সরঞ্জাম ও আবাসিক সুবিধা : সেন্টমার্টিনে থাকতে চান না কোনো চিকিৎসক!

প্রকাশিত: অক্টোবর ৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জাবেদ ইকবাল চৌধুরী, কক্সবাজার থেকে : সাত বছরের বেশি সময় ধরে অনুপস্থিত সেন্টমার্টিনে নিয়োগ পাওয়া চিকিৎসক ডা: মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন। তিনি ২০১৪ সালের ২১ আগস্ট টেকনাফে যোগদান করে সাত দিনের ছুটি নিয়ে এ পর্যন্ত অনুপস্থিত রয়েছেন তিনি। এমন চিত্র দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বঙ্গোপসাগরের প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের লোকসংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার। লোকজনের স্বাস্থ্যসেবার জন্য দ্বীপে ১৩ বছর আগে ১০ শয্যার একটি সরকারি হাসপাতাল ভবনের নির্মাণকাজ শেষ করা হয়। কিন্তু এখনো হাসপাতালটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হয়নি। চিকিৎসক ও নার্সদের থাকার আবাসিক ভবনগুলো ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তাই এখানে ডাক্তার নিয়োগ পেলেও থাকতে চান না। তাছাড়া সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করে প্রতি বছর অন্তত ১০/১২ লাখ দেশি-বিদেশি পর্যটক। ভ্রমণে গিয়ে কোনো পর্যটক দুর্ঘটনা কিংবা বিপদে পড়লে পর্যাপ্ত চিকিৎসা পাওয়ার উপায় থাকে না। হাসপাতাল সূত্র জানায়, ২০০৮ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধনের পর তিনজন চিকিৎসক, ছয়জন নার্স, দুজন ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান, দুজন ফার্মাসিস্ট, ছয়জন ওয়ার্ডবয়, চারজন এমএলএসএস, তিনজন আয়া, একজন পিয়ন, একজন স্টোরকিপার, চারজন ঝাড়ুদার নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু কয়েক দিনের মাথায় সবাই হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান। হাসপাতালে ৭৪ লাখ টাকার একটি জেনারেটর থাকলেও সেটিও অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। ২৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দায়িত্বশীল কাউকে খোঁজে পাওয়া যায়নি। যদিও এখানে রোস্টার অনুযায়ী উপস্থিত থাকার কথা ছিল স্বাস্থ্য সহকারী চঞ্চল সরকার, রেজিস্ট্রার হাসান আল মামুন ও গার্ড সালাহউদ্দিনের। তবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে এ অবস্থা বলে জানান গার্ড সালাহউদ্দিন।
এ প্রসঙ্গে টেকনাফের চিকিৎসক প্রনয় রুদ্র বলেন, হাসপাতালটি উদ্বোধন হয়েছে ঠিকই তবে এখানে বিদ্যুৎ ও পানি নেই। নেই জনবল ও স্বাস্থ্য সরঞ্জাম। পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল চালু না হওয়ায় ভবন, জেনারেটরসহ অনেক কিছু নষ্ট হতে চলেছে। তাছাড়া চিকিৎসক ও স্টাফ থাকার পরিবেশ নেই বলেও জানান তিনি। সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর আহমদ বলেন, টেকনাফ সদরে গিয়ে চিকিৎসাসেবা নেয়া দ্বীপের মানুষের পক্ষে অনেক দুরূহ। বর্ষা মৌসুমে এ অবস্থা আরো চরম আকার ধারণ করে। এ সময় অধিকাংশ সময় টেকনাফের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এই দ্বীপের। নেই নৌ-অ্যাম্বুলেন্স। কেউ অসুস্থ হলে বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন। চেষ্টা তদবির করেও হাসপাতালটি চালু করা যাচ্ছে না। আবাসিক সুযোগ-সুবিধা না থাকায় কোনো চিকিৎসক-নার্স হাসপাতালে থাকতে রাজি হন না। টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: টিটু চন্দ্র শীল বলেন, ১৩ বছর ধরে নামমাত্র ১০ শয্যার একটি হাসপাতাল থাকলেও লোকবল, যন্ত্রপাতি ও ওষুধের কোনো বরাদ্দ নেই। হাসপাতালের ভবনটিতে ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সেবা দেয়া হচ্ছে। একজন ডাক্তার ও একজন স্বাস্থ্য সহকারী দিয়ে সেন্টমার্টিনের চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে। লোকবল নিয়োগ দিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে কয়েকবার চিঠি পাঠানো হয়েছে। ডা: মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষয়টি উচ্চপর্যায়ে অবহিত করা হয়েছে। অচিরেই একটি ব্যবস্থা নিবেন বলে স্বাস্থ্যের মহাপরিচালক আশা দিয়েছেন। স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, সেন্টমার্টিন যেন চিকিৎসক শূন্য না থাকে সেবিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়