গঙ্গা-যমুনা নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব : শিল্পকলায় দ্বিতীয় দিনে ছিল দর্শকদের উপচে পড়া ভিড়

আগের সংবাদ

জাতিসংঘ থেকে ফিরে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা : রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হওয়ার নেপথ্যে আন্তর্জাতিক নিষ্ক্রিয়তা

পরের সংবাদ

একটি প্রার্থনার ফল

প্রকাশিত: অক্টোবর ৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রায়হান চৌধুরী একটি প্রাইভেট হাসপাতালের মালিক। মালিকের কথামতো তার হাসপাতালের ডাক্তাররা রোগীদের এতো এতো অপ্রয়োজনীয় টেস্ট লিখে দেন যে, তার হাসপাতালে এসে সৎপথে উপার্জনকারী রোগীরা অনেকটাই অহসায় হয়ে পড়েন।
একদিন রায়হান চৌধুরী সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করলেন, ‘হে সৃষ্টিকর্তা, অসুস্থতা বড়ই কষ্টের ব্যাপার। তুমি সকলকে সুস্থ ও নিরোগ রাখো। যাতে কেউ রোগশোকে না ভোগে।’
পরের দিন সকাল থেকেই দেখা গেলো রায়হান চৌধুরীর হাসপাতালে আর নতুন কোনো রোগী ভর্তি হচ্ছে না। বিকেল থেকেই ডাক্তাররা যার যার চেম্বারে বসে আছেন। রাত বাড়তে থাকে অথচ কোনো রোগী নেই। বিষয়টি হাসপাতালের সবাইকে ভাবিয়ে তোলে। ম্যানেজার বিষয়টি নিয়ে ফোন করেন মালিক রায়হান চৌধুরীকে। সবকিছু শুনে মালিক দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। তার মনে পড়ে যায়, গতকালের তার প্রার্থনার কথা। তিনি তো এ রকমটি প্রায়ই বলেন। কিন্তু মন থেকে কোনোদিনই বলেন না। কারণ এ রকম প্রার্থনা ফলে গেলো তো হাসপাতাল আর টেস্ট ব্যবসা করা যাবে না। যেখানে রোগ আর রোগীদের নিয়েই খেলতে হয়। এসব ভাবতে ভাবতে রায়হান চৌধুরী মনে করেন, এতোদিন প্রার্থনা মঞ্জুর না হলেও সেদিন নিশ্চয়ই তার প্রার্থনা সৃষ্টিকর্তার দরবারে স্থান পেয়ে গেছে।
এখন কী হবে! তিনি হাসপাতালের স্টাফদের বিপদে ধৈর্যহারা না হতে বলেন। নিশ্চয়ই তিনি এর সমাধান করার চেষ্টা করবেন। রাতে ঘুম হলো না রায়হান সাহেবের। প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার টেস্ট-কমিশন!
পরের দিন তিনি ভোরে ঘুম থেকে উঠে সৃষ্টিকর্তার কাছে হাত তুলে প্রার্থনা করতে লাগলেন, হে সৃষ্টিকর্তা, আমি তো তোমার কাছে মন থেকে চাইনি যে, মানুষ যেনো আর রোগশোকে না ভোগে। সবাই বলেছে, তাই আমিও সবার সঙ্গে হাত তুলে বলেছি। তুমি আমার এ প্রার্থনা তুলে নাও আর আমার হাসপাতালে রোগী পাঠাও। কারণ আমি জানি রিজিকের মালিক তুমি।
সৃষ্টিকর্তার দরবারে রায়হান চৌধুরী মানে হাসপাতালের মালিকের প্রার্থনা মঞ্জুর হলো। পরের দিন থেকে তার হাসপাতালে রোগীরা আসতে লাগলো। দেখা গেলো, রোগীদের মধ্যে সকলেই অতীতে কিংবা বর্তমানে কোনো না কোনো অন্যায়কারী, প্রতারক, ঘুষেখোর, নির্যাতনকারী, দুর্নীতিবাজ ছিলেন বা এখনো আছেন। তিনি অনেক রোগীকেই চেনেন। কারণ তারা তার মতোই অনেক অনেক টাকার মালিক। তার হাসপাতালে আসা রোগীদের কারো সারা শরীর প্যারালাইজড, কেউ কেউ কঠিন ব্যাধিতে আক্রান্ত। তাদের চেহারায় অপরাধ বোধ আর তীব্র কষ্টের ছাপ রায়হান চৌধুরীর বুকে আঘাত করে। তিনি মনে মনে ভাবেন, সৃষ্টিকর্তা সকল খারাপ মানুষদের আমার কাছে রোগী হিসেবে পাঠিয়েছেন। নিশ্চয়ই আমাকে খারাপ ও অন্যায় পথ থেকে ফিরে আসবার কথাই শেখাতে চাইছেন।
পার্থ সারথী দাস
মণিপুরীপাড়া, ঢাকা

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়