তেজগাঁওয়ে বাসায় রহস্যজনক বিস্ফোরণে দুই শিক্ষার্থী দগ্ধ

আগের সংবাদ

১৫ সদস্যের দলে আট নতুন মুখ : আত্মবিশ্বাস নিয়ে বিশ্বকাপ মিশনে টাইগাররা

পরের সংবাদ

হাঁটু পানি মাড়িয়ে স্কুলে যায় ওরা

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক, নাটোর : অপরিকল্পিতভাবে পুকুর কাটায় পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হওয়ায় নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের ৭০ নম্বর খিদির গরিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকরা প্রতিদিন এক হাঁটু থেকে মাজা পানি পাড়ি দিয়ে স্কুলে যাতায়াত করছেন। মানবসৃষ্ট এই জলাবদ্ধতা প্রায় ৮ বছর ধরে চলছে। এখন স্কুলের এমন পরিবেশের কারণে এলাকার সচেতন অভিভাবকরা আর ওই স্কুলে তাদের সন্তানদের পাঠাতে চান না। এতে প্রতি বছর কমছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। জলাবদ্ধতার কারণে নেই বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা। এলাকাটি জলমগ্ন থাকায় একটি মাত্র শৌচাগার ব্যবহার করেন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানিয়েছেন, অবস্থার পরিবর্তন না হলে করোনার কারণে বন্ধ থাকা শিক্ষকদের বদলি পদ্ধতি চালু হলেই এখানে কর্মরত শিক্ষকরা গণহারে বদলির আবেদন করবেন। স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি মহির উদ্দিন মোল্লা জানান, আগে চাপিলা, মহরাজপুর ও গরিলা গ্রামের বৃষ্টির পানি চলনবিলে নেমে যাওয়ার জন্য একটি খাল ছিল। এলাকার মানুষ মাছ চাষ করার জন্য একের পর এক পুকুর কাটার সময় খালটি বন্ধ হয়ে গেছে। এখন খালটির আর কোনো চিহ্ন অবশিষ্ট নেই। ফলে পানি নিষ্কাশনের পথ না থাকায় বর্ষা মৌসুমের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত স্কুলটি জলাবদ্ধ থাকে। বর্ষার পানি এখন শুধু স্কুল মাঠে নয় অনেক পুকুর মালিকের শোবার ঘরও জলমগ্ন করতে শুরু করেছে।
প্রধান শিক্ষক হুমায়ন কবির বলেন, প্রতিষ্ঠানটি তার নিজের এলাকায় হওয়ায় এখানে যোগদানের আগে থেকেই তারা এই জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য মানববন্ধনসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করলেও কোনো প্রতিকার পাননি। কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে শিক্ষার্থীর পরিমাণ কমতে থাকলে প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংস হয়ে যাবে।
ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীর সংখ্যা একশর নিচে চলে এসেছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে অনুরোধ করলেও অভিভাবকরা এমন পরিবেশে তাদের সন্তানকে আর পাঠাতে চান না। তাদের অনেকেই অন্য গ্রামের স্কুল ও মাদ্রাসায় তাদের সন্তানদের ভর্তি করেছেন।
মতিয়ুর রহমান, কামরুন্নাহারসহ এলাকাবাসী জানান, রাস্তা থেকে স্কুল পর্যন্ত উঁচু করে ঢালাই রাস্তা নির্মাণ এবং মাটি দিয়ে স্কুল মাঠ উঁচু করলেই এ সমস্যার সমাধান পাওয়া যেতে পারে।
স্থানীয় চাপিলা ইউপি চেয়ারম্যান আলাল উদ্দিন ভুট্টু বলেন, স্কুলের চারপাশে প্রভাবশালীরা অপরিকল্পিতভাবে পুকুর কাটায় বছরের ৭ মাস স্কুলটি জলাবদ্ধ থাকে। এটা এই ইউনিয়নের ৭৫ ভাগ এলাকার সমস্যায় পরিণত হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষে এত বড় সমস্যার সমাধান সম্ভব হয়।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এরশাদ উদ্দিন আহমেদ জানান, তিনি নিজে স্কুলটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার সব ধরনের চেষ্টা করবেন। জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, বিষয়টি জানা ছিল না। খবর নিয়ে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকরা যেন সুস্থ সুন্দর পরিবেশে স্কুলে যাতায়াত করতে পারেন তার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়