নলডাঙ্গা : আ.লীগ-বিএনপি নেতাসহ আটক ১১ জুয়াড়ি

আগের সংবাদ

উন্নয়নের ভোগান্তি আর কত : কোনো প্রকল্পই শেষ হয় না নির্ধারিত সময়ে, বছরজুড়েই চলে সেবা সংস্থাগুলোর খোঁড়াখুঁড়ি

পরের সংবাদ

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন অব্যাহত : সেই শিক্ষিকাকে বহিষ্কারের দাবিতে অবরুদ্ধ ভিসি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. আব্দুল কুদ্দুস, শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) থেকে : সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের (রবি) ১৬ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেয়ার ঘটনায় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে রেজিস্ট্রার সোহরাব আলী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের পরীক্ষা এবং একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমও অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে সিন্ডিকেট সভায়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও তদন্ত কমিটির কাজ চলবে। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর সাময়িক বরখাস্ত ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এদিকে ওই শিক্ষককে স্থায়ীভাবে অপসারণের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। তারা ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যসহ কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে রেখেছেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ওমর ফারুক বলেন, আমরা অভিযুক্ত শিক্ষকের স্থায়ী অপসারণের দাবি জানিয়ে আসছি। কিস্তু তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করাটা একটা যড়যন্ত্র মনে হচ্ছে। আমরা এখনো প্রশাসনিক ভবনের সামনে আন্দোলন করছি এবং সবাইকে অবরুদ্ধ করে রেখেছি। অবরুদ্ধদের খাবারসহ প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি আমরা নিজেরাই সরবরাহ করছি। তদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। একই দাবিতে বুধবার থেকে অনশন চালিয়ে আসা ১৪ শিক্ষার্থীর মধ্যে পাঁচজন অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাদের স্থানীয় একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রধান লায়লা ফেরদৌস হিমেল বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে সাময়িক বরখাস্ত ও ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণার পরও শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষিকার স্থায়ী বরখাস্তের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া তারা গতকাল থেকে ভেতরে প্রশাসনিক ভবনে উপাচার্যসহ কয়েকজনকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। তারা হয়তো ভাবছে- যেহেতু ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, তাহলে হয়তো এই প্রতিবেদন আর জমা হবে না বা ব্যবস্থা নেয়া হবে না।
তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে একটি সিসি ক্যামেরা লাগানো ছিল। ওই ক্যামেরার ফুটেজে কাঁচি হাতে

শিক্ষার্থীদের চুল কাটার সত্যতা মিলেছে। আমরা তদন্ত কমিটির সদস্যরা মিলে ইতোমধ্যে একাধিক বৈঠক করেছি। আশা করছি আগামীকালের (শনিবার) মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন জমা দিতে পারব।
প্রসঙ্গত, সহযোগী অধ্যাপক ফারহানা বাতেন সম্প্রতি ক্লাস চলাকালে চুল বড় রাখায় ছাত্রদের বকাঝকা করেন। গত রবিবার পরীক্ষার হলের দরজার সামনে তিনি কাঁচি হাতে দাঁড়িয়েছিলেন। কক্ষে ঢোকার সময় শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাদের চুল মুঠোর মধ্যে ধরা গেছে, তাদের মাথার সামনের খানিকটা তিনি কেটে দেন। সেই শিক্ষার্থীদের একজন আত্মহত্যার চেষ্টা করলে ক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়। এ পরিস্থিতিতে গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিন প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন সহযোগী অধ্যাপক ফারহানা ইয়াসমিন, যদিও তিনি শিক্ষার্থীদের চুল কেটে দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০০০-২০০১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফারহানা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেয়ার পর কিছু দিন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছিলেন। ২০১৮ সালে রাষ্ট্রায়ত্ত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়