নলডাঙ্গা : আ.লীগ-বিএনপি নেতাসহ আটক ১১ জুয়াড়ি

আগের সংবাদ

উন্নয়নের ভোগান্তি আর কত : কোনো প্রকল্পই শেষ হয় না নির্ধারিত সময়ে, বছরজুড়েই চলে সেবা সংস্থাগুলোর খোঁড়াখুঁড়ি

পরের সংবাদ

ঢাকায় ২৩৭টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা : কম সময়ে অধিক চাহিদায় ব্যস্ত প্রতিমা শিল্পীরা

প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রকি আহমেদ, জবি প্রতিনিধি : সপ্তাহ পেরোলেই শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আগামী ১১ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে পূজা শুরু হবে এবং ১৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে। এবার দুর্গাপূজার আগে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় পূর্বের ন্যায় বড় পরিসরে উদযাপনের কথা ভাবছে ভক্তরা। তবে পূজা উদযাপনে প্রত্যাশা বাড়লেও সার্বিক প্রস্তুতির সময় কম। এজন্য দেখা দিয়েছে মহাব্যস্ততা। ঢাকায় বিভিন্ন পূজা উদযাপন কমিটি, বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিমা শিল্পীদের যেন হাফ ছাড়ার সময় নেই।
সবচেয়ে বেশি পূজা উদযাপিত হওয়া পুরান ঢাকায় সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, শাঁখারীবাজার, তাঁতীবাজার, ল²ীবাজার, সূত্রাপুর, শ্যামবাজার, প্যারীদাস রোড, কলতাবাজার, মুরগিটোলা, মদনমোহন দাস লেন, গোয়ারনগর, বাংলাবাজার জমিদারবাড়ী, গেন্ডারিয়া, ডালপট্টি এলাকার অলিতে-গলিতে চলছে পূজা উদযাপনের আয়োজন। সেখানে ছোট-বড় বিভিন্ন পূজামণ্ডপে শুরু হয়েছে মঞ্চ, প্যান্ডেল, তোরণ নির্মাণের কাজ। পুরোপুরি প্রস্তুত না হওয়ায় মণ্ডপের পাশে রাখা হয়েছে নির্মাণসামগ্রী। পাশাপাশি দেখা গেছে আয়োজকদের ছুটাছুটি।
এদিকে বিভিন্ন পূজামণ্ডপের জন্য প্রতিমা শিল্পীদের ব্যস্ততার যেন শেষ নেই। সাধারণত পূজার তিন মাস আগে থেকে তাদের প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হয়। কিন্তু এবার পূজার এক মাস আগে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় হঠাৎ প্রতিমার চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই দিন-রাত কাজ করছেন শিল্পীরা।
এ বিষয়ে মৃৎশিল্পে আন্তর্জাতিক পদক পাওয়া শাঁখারীবাজারের প্রাচীন প্রতিমা শিল্পী হরিপদ পাল ভোরের কাগজকে বলেন, করোনার লকডাউনের মধ্যে সবাই মনে করেছিল গত বছরের মতো এবারো সীমিত পরিসরে পূজা করবে। কিন্তু সবকিছু স্বাভাবিক হওয়ায় সবার বড় পরিসরে পূজা করার আবেগ জেগেছে। তাই হঠাৎ করেই প্রতিমার চাহিদা বেড়ে গেছে। কিন্তু একটি প্রতিমা তৈরি করতে ১৫ দিন সময় লাগে। এক মাসে কয়টি করব! এ কাজের কারিগরও কম। এজন্য অনেকে ফিরে যাচ্ছেন। তারা চেষ্টা করছেন তৈরিকৃত প্রতিমা পাওয়া যায় কিনা

বা গ্রাম থেকে প্রতিমা আনা যায় কিনা। তিনি আরো বলেন, পূজার আর বেশিদিন নেই। তাই মাটির কাজ শেষ পর্যায়ে। এখন রং তুলির কাজ চলছে। যারা অতিরিক্ত কাজ নিচ্ছে তারা দিন-রাত কাজ করছে।
হরিপদ পাল সূত্রে জানা যায়, পুরান ঢাকার রিপন পাল, দুলাল সাধু, বাংলাবাজার জমিদারবাড়ীর বলয় পাল, পল্টন পাল, সুমন, সুশীল নন্দী, সুধির গোষ, গোপাল, সুবল পালসহ অনেকে প্রতিমা তৈরি করেন। এছাড়া পুরান ঢাকার বাইরে ঢাকেশ্বরী, কালীমন্দিরেও প্রতিমা তৈরি করা হয়। পরে এসব শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলা হলে তারা একই ব্যস্ততার কথা বলেন।
এদিকে শাঁখারীবাজারের পুরোহিত সুকুমার চক্রবর্তী জানান, পূজা করতে মোট ১০০টি উপকরণ প্রয়োজন পড়ে। শাঁখারীবাজার ও তাঁতীবাজার থেকে এসব উপকরণ জোগার করা হয়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের হিন্দুধর্মাবলম্বীরাও শাঁখারীবাজার থেকে এসব উপকরণ জোগার করেন। সরজমিন শাঁখারীবাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, দুর্গাপূজায় ব্যবহৃত এসব উপকরণ সামগ্রী বিক্রির জন্য রাস্তার ধারে ও গলিতে ছোট ছোট পসরা বসেছে। সেখানে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা মানুষ কিনছেন উপকরণ। দুর্গাপূজার উপকরণ কিনতে বরিশাল থেকে আসা রতন কুমার ভোরের কাগজকে বলেন, পূজার আর ১০ দিন বাকি। তাই শাঁখারীবাজারে এসেছি প্রয়োজনীয় উপকরণ কিনতে।
এদিকে পুরান ঢাকার স্থানীয় বিভিন্ন পূজা উদযাপন সংগঠন থেকে জানা যায়, এবার পুরান ঢাকায় নব কল্লোল, তাঁতীবাজার পূজা কমিটি, শ্রী শ্রী শিব মন্দির, উদীয়মান সূর্য সংঘ, পানিটোলা পঞ্চায়েত, প্রতিদ্ব›দ্বী, সংঘমিত্র, শ্রী শ্রী রাধা মাধব জিউ দেব মন্দির, নবদুর্গা, নববাগী, দুর্গাবাড়ী, নতুন কুঁড়ি, বুড়ি বাঙালি, রমগান্ত গলি, সূর্য তারা, রামকৃষ্ণ মিশন ও গোয়ালনগর পঞ্চায়েত কমিটিসহ আরো বেশ কিছু সংগঠনের মাধ্যমে পূজা উদযাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
রাজধানীতে পূজা উদযাপনের সার্বিক বিষয়ে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সদস্য রজত কুমার সূর ভোরের কাগজকে বলেন, এবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঢাকা মহানগরে মোট ২৩৭টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপন করা হবে। এর মধ্যে সূত্রাপুর থানায় সবচেয়ে বেশি ২৫টি মণ্ডপে, এরপর কোতোয়ালি থানায় ২১টি, ওয়ারীতে ১৬টি, গেন্ডারিয়ায় ১৪টি, হাজারীবাগে ১৩টি, তুরাগে ১২টি, বাড্ডায় ১০টি, বনানীতে ৯টি, মোহাম্মদপুরে ৯টি, দারুসসালাম ও গাবতলীতে ৮টি, ডেমরায় ৮টি এবং তেজগাঁও থানায় ৬টি মণ্ডপসহ বাকি থানাগুলোতে দুর্গাপূজা উদযাপন করা হবে। তিনি আরো বলেন, পূজার আগে প্রস্তুতির জন্য আমরা বেশি সময় পাইনি। তবে আমরা যেন সুশৃঙ্খলভাবে পূজা উদযাপন করতে পারি, এজন্য কাজ করে যাচ্ছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়