নলডাঙ্গা : আ.লীগ-বিএনপি নেতাসহ আটক ১১ জুয়াড়ি

আগের সংবাদ

উন্নয়নের ভোগান্তি আর কত : কোনো প্রকল্পই শেষ হয় না নির্ধারিত সময়ে, বছরজুড়েই চলে সেবা সংস্থাগুলোর খোঁড়াখুঁড়ি

পরের সংবাদ

জামালদের সাফ মিশন জয়ে শুরু

প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। মালের জাতীয় ফুটবল স্টেডিয়ামে ডিফেন্ডার তপু বর্মনের পেনাল্টি থেকে করা গোলে এগিয়ে যায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। পরবর্তী সময়ে দুই দলের কেউ আর গোল করতে পারেনি। ফলে জামালরা পায় ১-০ গোলের জয়। পেনাল্টি থেকে গোল করে দলের জয়ে ভূমিকা রাখায় তপু বর্মনের হাতে তুলে দেয়া হয় ম্যাচসেরার পুরস্কার। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এ ম্যাচের আগে বাংলাদেশের সাবেক কোচ জেমি ডে বলেছিলেন জামালরা ম্যাচটি ২-০ গোলের ব্যবধানে জিতবে। জেমি ডের করা ভবিষ্যদ্বাণী পুরোপুরি সঠিক না হলেও বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত ঠিকই জয় তুলে নিতে সক্ষম হয়েছে।
ম্যাচ শেষে কথা বলতে গিয়ে তপু জানান, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এতে জয় পাওয়ায় দল অনেক খুশি। দলের সবাই সাফের জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে। এখন তাদের নজর পরবর্তী তিন ম্যাচে। পরবর্তী ম্যাচে ৪ অক্টোবর শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে নামবে বাংলাদেশ। এরপর ৭ ও ১৩ অক্টোবর খেলবে মালদ্বীপ ও নেপালের বিপক্ষে।
এদিকে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার ম্যাচের প্রথমার্ধে দুই দলের কেউ গোল করতে পারেনি। তবে আক্রমণে শ্রীলঙ্কার চেয়ে অনেক এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। অবশেষে কাক্সিক্ষত গোলটি আসে ম্যাচের ৫২ মিনিটে। শ্রীলঙ্কা ডি বক্সের ভেতর হ্যান্ডবল করলে পেনাল্টি থেকে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় বাংলাদেশ। এটি কাজে লাগাতে ভুল করেননি তপু বর্মন।
গতকালের ম্যাচসহ বাংলাদেশ লঙ্কানদের বিপক্ষে সব মিলিয়ে ম্যাচ খেলেছে ১৭টি। এর মধ্যে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা জয়ই তুলে নিয়েছে ১১টিতেই। হেরেছে চারটি ম্যাচে।
আর বাকি দুটি ম্যাচ ড্র হয়। গতকালের ম্যাচের আগে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা সর্বশেষ ২০১৮ সালে মুখোমুখি হয়েছিল। সেবার লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা ম্যাচটিতে হেরে যায় ১-০ গোলের ব্যবধানে। অবশ্য এটি ছিল একটি প্রীতি ম্যাচ। দীর্ঘ প্রায় তিন বছর পর মুখোমুখি হয়ে সেই হারের প্রতিশোধও নিয়ে নিল বাংলাদেশ।
এই ম্যাচের আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ লড়ে সর্বশেষ ২০০৯ সালে। সেবার লঙ্কানদের বাংলাদেশ হারিয়েছিল ২-১ গোলের ব্যবধানে। গতকালের ম্যাচ’সহ সাফে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ সব মিলিয়ে ম্যাচ খেলেছে পাঁচটি। এর মধ্যে জয় পেয়েছে চারটিতে। বাকি একটি ম্যাচে হেরেছে। সেই হারটি এসেছিল ২০০৮ সালে।
ফিফার সর্বশেষ প্রকাশিত র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ১৮৯। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার অবস্থান ২০৫ নম্বরে। দক্ষিণ এশিয়ান ফুটবলে বাংলাদেশের অবস্থান হলো পঞ্চম। আর শ্রীলঙ্কা আছে সপ্তমে। মানে একদম তলানিতে। সবদিক বিবেচনা করে বাংলাদেশই ছিল ফেবারিট। তার প্রমাণও মাঠে রেখেছেন জামালরা। তবে ম্যাচে বাংলাদেশের ফিনিশিংয়ে যে ঘাটতি রয়েছে, তা আবার চরমভাবে ধরা পড়েছে। অনেকগুলো আক্রমণ করেও বাংলাদেশ সাধারণভাবে গোল তুলে নিতে পারেনি।
তবে জয় যেভাবেই আসুক, সেটি জয়ই। সাফে যেহেতু এবার পাঁচটি দেশ খেলছে। ফলে প্রতিটি ম্যাচের ফলাফল বেশ গুরুত্বপূর্ণ। পাঁচটি দল গ্রুপ পর্বে প্রতিটির বিপক্ষে একটি করে ম্যাচ খেলবে। এরপর পয়েন্ট টেবিলের সেরা দুই দল ফাইনালে শিরোপার জন্য লড়বে।
এখন পর্যন্ত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ১১টি আসর হয়েছে। এর মধ্যে একবারই শিরোপা জয় করতে সমর্থ হয় বাংলাদেশ।
সেটি ২০০৩ সালে। সেবার ঘরের মাঠে দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে খেলতে নামে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এরপর আর কখনো জেতা হয়নি শিরোপা। শিরোপা জয়ের আগে ও পরের দুই আসরেও ফাইনালে খেলে বাংলাদেশ। সেটি ১৯৯৯ ও ২০০৫ সালে। কিন্তু দুবারই তাদের রানার্সআপের শিরোপা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল।
এর মাধ্যমে সাফের টানা তিনটি আসরে বাংলাদেশ ফাইনালে খেলে। পরবর্তীতে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় আর নিজেদের দাপট ধরে রাখতে পারেনি। ২০০৫ সালে ফাইনাল খেলার পর বাংলাদেশ সাফের সেমিতে জায়গা করে নিতে সমর্থ হয় ২০০৯ সালে। সেবার ঢাকার মাঠে হয় প্রতিযোগিতাটি।
এখন বাংলাদেশ চাইছে সাফে নিজেদের শিরোপার খরা কাটাতে। এ মিশন নিয়েই দেশ ছেড়েছেন জামালরা। মালদ্বীপের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া জানিয়ে গেছেন আশার কথা। এ লক্ষ্যে গত মাসে সাবেক কোচ জেমি ডেকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। তার জায়গায় দায়িত্ব দেয়া হয় অস্কার ব্রুজনকে। এখন তিনি শুধু সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব পালন করবেন।
গতকাল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটির মাধ্যমে অস্কার ব্রুজনের বাংলাদেশ দলের কোচ হিসেবে অভিষেক হয়েছে। আর অভিষেক ম্যাচেই শিষ্যরা তাকে জয়ের স্বাদ এনে দিয়েছেন। এখন দেখার বিষয় কোচ বদলের সঙ্গে বাংলাদেশ দলের ভাগ্য পরিবর্তন হয় কিনা।
বাংলাদেশ সাফের শেষ চারটি আসরের গ্রুপ পর্বের বাধা পার হতে পারেনি। আর সাফে এমন ভরাডুবির কারণে বাংলাদেশের ফুটবল আরো নিচের দিকে গেছে। এখন বাংলাদেশ যদি এবার গ্রুপ পর্বের বাধা টপকে ফাইনালেও জায়গা করে নিতে পারে, এটিও দেশের ফুটবলের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে। আর শিরোপা জয় করতে পারলে তো সূচনা হবে নতুন দিগন্তের।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়