নলডাঙ্গা : আ.লীগ-বিএনপি নেতাসহ আটক ১১ জুয়াড়ি

আগের সংবাদ

উন্নয়নের ভোগান্তি আর কত : কোনো প্রকল্পই শেষ হয় না নির্ধারিত সময়ে, বছরজুড়েই চলে সেবা সংস্থাগুলোর খোঁড়াখুঁড়ি

পরের সংবাদ

গঙ্গাচড়া : প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে ছুটির দিনে বালু উত্তোলন

প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মজিদ কাজল, গঙ্গাচড়া (রংপুর) থেকে : ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা পেয়ে যেন আরো উৎসাহিত হয়েছে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীরা। তারা বেপরোয়া চালিয়ে যাচ্ছে অবৈধ বালু উত্তোলন ব্যবসা। এমনটি ঘটছে উপজেলার পাইকান বগুলাগাড়ী গ্রামে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নয়ন কুমার সাহা গত ১৪ সেপ্টেম্বর পাইকান গ্রামে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। ওই দিন তিনি ঘাঘট নদের তলদেশ থেকে অবৈধভাবে শ্যালো মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের দায়ে পাইকান ডাক্তারপাড়া গ্রামের মৃত মজিবর রহমানের ছেলে হামিদুল ইসলামের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন। ওই হামিদুল ও তার বালুর ব্যবসায়িক পার্টনার পাইকান দোলাপাড়া গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে টিটুল পানাতি (৩৬)। জরিমানা প্রদানের পর উভয়েই আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে।
অব্যাহত রাখে তাদের যৌথ মালিকানার শ্যালো মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন ব্যবসা। গত ২ দিন ধরে তারা পাইকান বগুলাগাড়ী গ্রামের ঘাঘট নদে শ্যালো মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছে। শুক্র ও শনিবার সরকারি অফিস বন্ধ থাকায় এরা সাধারণত ওই ২ দিন (দিনে-রাতে) বালু উত্তোলন করে থাকে। টাকার বিনিময়ে বাড়ি নির্মাণের জন্য ওই বালু সংগ্রহ করছে পাইকান আজগারপাড়া গ্রামের সহিদার রহমানের ছেলে রবিউল ইসলাম। বালু ব্যবসায়ী টিটুল বলেন, হামিদুলসহ আমরা যৌথভাবে বালু উত্তোলন ব্যবসা করছি। যেখানে কারো অভিযোগ থাকে, সেখানে আমরা বালু উত্তোলন করি না। এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) নয়ন কুমার সাহা বলেন, অবৈধভাবে ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলন বন্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সরজমিন পাইকান বগুলাগাড়ী গ্রামে দেখা যায় ভাঙনের ভয়াল চিত্র। গত ২ বছরে ঘাঘট নদের ওই পয়েন্টে প্রায় এক একর আবাদি ধানের জমি ঘাঘট গর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙন পয়েন্টের মাত্র ২ মিটার দূরেই রয়েছে বরেন্দ্র সেচ প্রকল্পের গভীর সেচ পাম্প। এটিও ভাঙনের ফলে চরম হুমকির মুখে রয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে বালু উত্তোলন বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ঘাঘট গর্ভে বিলীন জমির মালিক পাইকান গ্রামের আবুল কাশেম, একরামুল হক ও মোজাম্মেল হকসহ এলাকাবাসী।

জমির মালিক আবুল কাশেমের ছেলে লাভলু মিয়া বলেন, পাইকান বগুলাগাড়ী এলাকার জমিগুলো ধান চাষের জন্য খুবই উপযোগী। তাই এখানে বরেন্দ্র প্রকল্পের সেচ পাম্প বসানো হয়েছে। এখানকার প্রধান ফসল হচ্ছে ধান। গত ২ বছরে আমার প্রায় ৬০ শতক জমি ঘাঘটে বিলীন হয়ে গেছে। এখানে বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে আমারসহ পার্শ্ববর্তী অনেক মানুষের জমি ঘাঘট গর্ভে বিলীন অব্যাহত থাকবে। রবিউলের বাবা সহিদার রহমান বলেন, আমার মালিকানা জমিতে ঘাঘট নদী। নদীর ওই জমি থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
অপরদিকে বালু পরিবহনে ১৪ চাকার ড্রাম ট্রাম থেকে প্রাক-মাহেন্দ্র ও ট্রলি ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে গ্রামীণ জনপদের রাস্তাগুলো দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে সড়ক যোগাযোগে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে এলাকাবাসী। উপজেলার বড়বিল ইউনিয়নের দক্ষিণ পানাপুকুর ফকিরপাড়া গ্রামের ঘাঘট নদ সংলগ্ন বাগানবাড়ী থেকে অবাধে পরিচালিত হচ্ছে ভূগর্ভস্থ বালুর ব্যবসা। ওই বালু ১৪ চাকার ড্রাম ট্রাক দিয়ে পরিবহন করা হচ্ছে। এতে বাধা দিয়ে প্রভাবশালী মালিক রংপুর মহানগরীর আতিকুর রহমান আতিকের রোষানলে পড়েছেন অনেকেই। প্রতিবাদী এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে মিথ্যে চাঁদাবাজির মামলাও করা হয়েছিল। বর্তমানে ওই এলাকার প্রতিবাদীদের সঙ্গে আতিকের লোকজনের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়