আজ ভোরে যখন দুচোখে আসিয়া লাগিল সূর্যালোক
দেখিলাম চতুর্দিকে কেমন যেন শুধু কুয়াশা ভেজা আলো আলো আলো
বুঝিলাম হেমন্ত চারিদিকে
কুয়াশার মতো আলোছায়ার মতো অন্ধকারের শরীর বেয়ে
সে নেমে এসেছে গ্রামের পথে প্রান্তরে।
আমাদের এই শহরে কি হেমন্ত আসে?
কুয়াশা হালকা চাদরের মতো
ছড়িয়ে পড়ে জানালার খোলা বাতাসে
ভেজা ভেজা চৌকাঠে কার্নিশে
মাকড়সার ধূসর এলোমেলো জালে
শিশিরের কণা আন্দোলিত হতে থাকে শূন্যতায়।
হঠাৎ দেখিলাম
আমাদের গলিটার বিষণ্ন শরীরে
কারসাজি থেকে যেন ঝরিয়াছে
অসংখ্য ফুল আর পাতার সংলাপ
চেয়ে দেখিলাম দেয়ালের পাশে
নীরবে দাঁড়িয়ে একা শেফালিকা।
শরৎ চলিয়া গেছে
ভাবিলাম আশ্বিনেরা কেন চলে যায়
কেন আলো ঝলমল দিনগুলো সব
নিয়ে আসে গহন গভীর কার্তিকের সন্ধ্যা
আনে ক্রমাগত হেমন্তের ছায়া
কেন হেমন্ত বিছিয়ে দেয়
পথে পথে ঝরা ফুলদল!
দেখিলাম আরো দুটি ফুল
ঝরিয়া পড়িল অঞ্চল থেকে পথে।
হেমন্ত চলিয়া যাবে
এই ভেবে ফিরিলাম গ্রামের বাতাসে
দেখিলাম খালের ওপারে এখনো রয়েছে বাঁধা ধর্মজাল
শীর্ণকায় জলস্রোত, ওপরেই স্থির উড়িতেছে মাছরাঙা;
আমার শৈশব ওই ধর্মজালে ঝুলে থাকা মাছের মতন
বেরিয়ে আসতে চাইছে বিস্মৃতির শূন্যতা কেটে
ঠিক তখনি বিকেলের পড়ন্ত রোদে স্থির
মাছরাঙাটির মতো অঘ্রাণ
ঝুপ করে নেমে এসে
ঠোঁটে তুলে নিলো আমার শৈশব।
সহসা প্রান্তরে দেখিলাম শন আর সরিষার ক্ষেতে হলুদ পতাকা
তারপর মাইল মাইল ঘন সবুজের বুকে নীল ফুল।
ধান কাটা শেষ হয়ে গেছে
মাঠে জ্বলিতেছে নাড়া
স্থির ধোঁয়ার কুণ্ডলি মন্থর বাতাসে
দিগন্তের দিকে উড়ে যেতে যেতে সন্ধ্যাকে ডেকে আনিতেছে
মনে হলো হেমন্তের পাখিরা সব ধীরে চলে যাচ্ছে
চারিদিকে শীতের পাখিরা
গাছে গাছে পাতা ঝরার শব্দ।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।