হাসেম ফুডে অগ্নিকাণ্ড : ৩ মাস পর দগ্ধ ছেলের মরদেহ পেলেন বাবা

আগের সংবাদ

রোহিঙ্গাদের অস্ত্র-অর্থের উৎস কী

পরের সংবাদ

সংস্কারের অভাবে বেহাল গুরত্বপূর্ণ সব সড়ক : ঝিনাইদহ

প্রকাশিত: অক্টোবর ১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রোকনুজ্জামান মিলন, ঝিনাইদহ থেকে : শহরের মুজিব মোড়, হামদহ, আরাপপুর থেকে শেখপাড়া বাজার, কালীগঞ্জ শহরের গোল চত্বর থেকে রেললাইন পর্যন্ত, কালীগঞ্জ কলারহাট থেকে নিমতলা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত যেন মরণফাঁদ। এখন সেখানে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় খানাখন্দের। এসব সড়কে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন যাত্রীরা। বৃষ্টি হলে পানি জমে দুর্ভোগ চরমে পৌঁছায়। ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগ ও এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে মোট সড়ক রয়েছে ২ হাজার ৩৭৬টি, যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৬ হাজার ৫৯ কিলোমিটার। শহরের যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক রয়েছে, এর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আরাপপুর থেকে কুষ্টিয়া মহাসড়কে শেখপাড়া বাজার। প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষ এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন। প্রায় ২৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে সড়কটি সর্বশেষ সংস্কার হয় ২০১২ সালে।
গত সোমবার সরজমিন দেখা যায়, সংস্কারের অভাবে সড়কের পুরোটাই খানাখন্দে ভরে গেছে। ছোট-বড় গর্ত এড়িয়ে যানবাহন চলছে এঁকেবেঁকে। গর্তের অনেক জায়গায় পানি জমে আছে। আবার অনেক জায়গায় গাড়ি চলার সময় আশপাশ ধুলাময় হয়ে যাচ্ছে। গাড়াগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে বিশাল গর্তে গাড়ি আটকে গিয়ে যানজটের সৃষ্টি হতে দেখা যায়।
গাড়াগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইব্রাহিম খলিল বলেন, কয়েকশ গড়াই ও রূপসা গাড়ি কুষ্টিয়া, খুলনা এবং ঢাকাগামী পরিবহন এই সড়ক দিয়ে যাওয়া-আসা করে। এছাড়াও হাজার হাজার ট্রাক উত্তরবঙ্গে প্রবেশ করে এ মহাসড়ক দিয়ে। আর সেই সড়কের বিপজ্জনক অবস্থা। চলাচলের একেবারে অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে।
আরাপপুর মহাসড়ক দিয়ে প্রচুর যানবাহন চলাচল করে। খুলনা-কুষ্টিয়া রুটে চলাচলরত গড়াই পরিবহনের একটি বাস আরাপপুর মোড় থেকে টার্মিনাল রাস্তার দিকে না গিয়ে ভিন্নপথে খুলনার দিকে বেরিয়ে যাচ্ছিল। বাসচালক রমজান আলী বলেন, রাস্তা খুবই খারাপ হয়ে পড়েছে। তারপরও যাত্রীদের গালমন্দ আর গাড়ির ক্ষতি মেনে ওই পথ দিয়েই গাড়ি চালাতেন। তবে মাস দুই ধরে এতটা খারাপ হয়েছে, ওই পথে আর পরিবহনের গাড়ি চলছে না। সড়কের সবচেয়ে খারাপ অবস্থা মুজিব মোড় ফায়ার সার্ভিসের অফিস পর্যন্ত। মাঝে মাঝে এত বেশি ভাঙা যে, এক লেনের সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে। এরপর প্রায় ১০০ মিটার জায়গাজুড়ে পানি জমা হয়ে রয়েছে। সামনে এগিয়ে যেতেই দেখা গেল কাপড় দিয়ে গর্ত চিহ্নিত করে দিয়েছেন স্থানীয়রা।
ঝিনাইদহ সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি সাইদুল ইসলাম বলেন, সড়কে ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে যারা আছেন, বিশেষ করে প্রকৌশলী, ঠিকাদার, এমপি, মেয়র যদি সুন্দরভাবে তদারকি করেন তাহলে সড়কের বেহাল দশা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ঝিনাইদহের সভাপতি আমিনুর রহমান টুকু বলেন, ঝিনাইদহ শহরের বেশির ভাগ সড়কের অবস্থা এখন বেহাল। প্রকৌশলীদের নানা গাফিলতি আছে। তারা ঠিকমতো সড়কে তদারকি করেন না, যে কারণে কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে। তখন সংস্কার ব্যয় বেড়ে যায়।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আনোয়ার পারভেজ বলেন, সড়কটি সংস্কারের জন্য প্রায় অধিকাংশ টেন্ডার হয়েছে, বাকিগুলো শেষ পর্যায়ে। সপ্তাহখানেকের মধ্যে সড়কটির জন্য দরপত্র আহ্বান করা হবে। সড়কে প্রতিদিন বিভাগীয় মেরামত অব্যাহত আছে।
এলজিইডির সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হলো পাগলাকানাই থেকে চণ্ডিপুর বাজার হয়ে কোটচাঁদপুর পর্যন্ত। ৩০ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে পাগলাকানাই থেকে চণ্ডিপুর বাজার পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার রাস্তা কাঁচা না পাকা, বুঝে উঠতে অনেক সময় লাগবে। কোথাও পিচ আছে, কোথাও পিচ নেই, পুরোটাই জরাজীর্ণ। সম্পূর্ণ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
শৈলমারী মাদ্রাসার গণিত শিক্ষক বেলাল হোসেন জানান, আমি এ সড়ক দিয়ে ১৫ বছর আসা-যাওয়া করছি, এই সড়ক দিয়ে কোটচাঁদপুর, মহেশপুর, জীবননগর, দর্শনা, চার উপজেলার মানুষ যাতায়াত করে। জনবহুল এ সড়কটি অনুমান করা হয় ৮-১০ বছর আগে টেন্ডার করে কাজ সম্পন্ন করেছিল। এরপর আর কাজ করা হয়নি।
ঝিনাইদহ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনোয়ার উদ্দিন জানান, পাগলাকানাই থেকে চণ্ডিপুর বাজার পর্যন্ত সড়কের টেন্ডার হয়েছে। খুব দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়