হাসেম ফুডে অগ্নিকাণ্ড : ৩ মাস পর দগ্ধ ছেলের মরদেহ পেলেন বাবা

আগের সংবাদ

রোহিঙ্গাদের অস্ত্র-অর্থের উৎস কী

পরের সংবাদ

বালু তোলার পাইপ নিয়ে সংঘর্ষ : সন্ত্রাসী হামলায় সাত কৃষক গুলিবিদ্ধসহ আহত ১৫

প্রকাশিত: অক্টোবর ১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় নদী ড্রেজিংয়ের বালু তোলার পাইপ নেয়াকে কেন্দ্র করে কৃষকদের ওপর গুলি চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় ৭ জন কৃষক গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। জামায়াতের সাবেক নেতা মুমিনুল হক চৌধুরীর ছেলে রুহুল্লা চৌধুরীর নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলার চরতী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের তুলাতলি শঙ্খ নদীর পাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতরা চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনার খবর পেয়ে সাতকানিয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে উঠে।
গুলিবিদ্ধসহ আহতরা হলেন- আবদুল মালেক, কায়সার, রুবেল, আবু তাহের, ফয়েজ আহমদ, নুরুল হাসান, হাফেজ আহমদ, মানিক,

ইয়াকুব হোসেন, শাহেদুল ইসলাম, রিপন, জিয়াউর রহমান, রুহুল আমিন, ইব্রাহীম ও ফারুকসহ আরো অজ্ঞাত ৩ জন। এদের মধ্যে নুরুল হাসান ও আবদুল মালেকের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা যায়।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, চরতী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের তুলাতুলি নামক স্থানের শঙ্খ নদী হতে দীর্ঘদিন ধরে নদী ড্রেজিং করে বালু উত্তোলন করে আসছে এসএস ড্রেজার নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ড্রেজিংয়ের বালু স্তূপ করে রাখা ও কৃষকের চাষাবাদের জায়গার উপর দিয়ে বালু তোলার পাইপ চালানোর কারণে এলাকার কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। এতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বিভিন্ন সময় তাদের ফসলি জমির উপর দিয়ে পাইপ না চালানোর জন্য বাধা দেন। কৃষকরা প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে লিখিত অভিযোগ দিলে তিনি আপাতত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বালু না তুলতে মৌখিকভাবে নিষেধ করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বালু উত্তোলনের জন্য কৃষকের জমির উপর দিয়ে পাইপ চালানোর প্রস্তুতি নিলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনকে কৃষকরা বাধা দেন। এ সময় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হয়ে জামায়াত নেতার ছেলে রুহুল্লা চৌধুরীর নেতৃত্বে ১০-১৫ জনের একটি সন্ত্রাসী দল কৃষক ও স্থানীয়দের ওপর গুলি ছুড়ে। এতে ৭ জন গুলিবিদ্ধসহ ১৫ জন আহত হয়।
গুলিবর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত রুহুল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ভোরের কাগজকে বলেন, ‘এই ঘটনায় তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। সরকারি কাজে বাধা দিতে এলাকার কয়েকজন লাঠিসোটা নিয়ে এসেছিল। পরে নিজেদের গুলিতে নিজেরা আহত হয়েছেন। আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে আমার বিরুদ্ধে অপ্রপচার চালানো হচ্ছে’।
গোলাগুলির ঘটনা স্বীকার করলেও বালু তোলাকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটেনি দাবি করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসএস ড্রেজারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যানেজার মেহেদী হাসান বলেন, ড্রেজিংয়ের বালু রাখার স্থান পেতে স্থানীয়ভাবে আমরা রুহুল্লাহর কাছে সহযোগিতা চেয়েছি। পাইপ চালানোর প্রস্তুতি সময় সকালে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এটি সামনে ইউপি নির্বাচন ও এলাকার আধিপত্য বিস্তারের জেরে হয়েছে। গোলাগুলির ঘটনাটি বালু তোলাকে কেন্দ্র করে হয়নি।
সাতকানিয়া থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, নদী ড্রেজিংয়ের বালু তোলার স্থানে সকালে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) যাওয়ার কথা ছিল। সকালে ড্রেজিংয়ের কাজ পাওয়া ঠিকাদারদের লোকজন ফসলি জমির উপর দিয়ে বালু তোলার পাইপ চালানোর চেষ্টা করলে এলাকার কিছু কৃষক ওই কাজে বাধা দেন। এ ঘটনায় মারামারিতে ও গুলিতে গুলিবিদ্ধসহ ৮-১০ লোক আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত পুলিশ গেলে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায়। এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়