হাসেম ফুডে অগ্নিকাণ্ড : ৩ মাস পর দগ্ধ ছেলের মরদেহ পেলেন বাবা

আগের সংবাদ

রোহিঙ্গাদের অস্ত্র-অর্থের উৎস কী

পরের সংবাদ

চোরাচালান রোধে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ জরুরি

প্রকাশিত: অক্টোবর ১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১, ২০২১ , ১২:২৫ পূর্বাহ্ণ

চোরাচালান রোধে নানা ব্যবস্থা নেয়া হলেও কার্যকর কিছু হয়নি। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি-রপ্তানি ও চোরাচালান বন্ধে মূলত দুই দেশের শুল্ক মহাপরিচালক পর্যায়ে একাধিক বৈঠক হলেও ফলপ্রসূ হয়নি। গতকাল ভোরের কাগজের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে আসা চোরাচালান পণ্যে এখন দেশের বাজার সয়লাব। রাজধানীসহ দেশের সর্বত্রই মিলছে চোরাইসামগ্রী। স্থল, নৌ ও আকাশপথেও আসছে চোরাচালানের পণ্য। বিজিবি, কাস্টমস, কোস্ট গার্ডসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে চোরাই মালের চালান আটক হলেও থামছে না এর দৌরাত্ম্য। যশোর, সিলেট, কুমিল্লা, সিলেট, সাতক্ষীরা, বগুড়া, দিনাজপুরসহ ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা পয়েন্টগুলো দিয়ে নির্বিঘেœ ঢুকছে চোরাচালান পণ্য। মিয়ানমারের টেকনাফ সীমান্ত দিয়েও ঢুকছে চোরাই পণ্য। দেশে গাঁজা থেকে শুরু করে আইস, এলএসডি, হেরোইন, ইয়াবাসহ সব ধরনের মাদকের সহজলভ্যতার অন্যতম কারণ হচ্ছে চোরাচালান। এখনি যদি এদের নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, তাহলে দ্রুত এই অপরাধ অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দুর্বলতার সুযোগে সমাজে এসব অপরাধ উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে চলেছে। সীমান্তে চোরাচালানের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের অধিকাংশই দরিদ্র। এদের রাঘববোয়ালরা কাজে লাগিয়ে অর্থলিপ্সতায় অন্ধ করে দিয়েছে। সীমান্তবাসীদের মধ্যে যারা চোরাচালান প্রতিরোধে আন্তরিক তাদের অধিকাংশই কথিত দালালদের দাপটের কাছে দুর্বল। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক সোনা চোরাচালানকারীদের জন্য অত্যন্ত লাভজনক ও অপেক্ষাকৃত নিরাপদ রুটে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। কিছুদিন পরপর দু-একটি করে চালান ধরা পড়ছে বটে, কিন্তু বড় অংশই ধরা পড়ছে না। ঢাকা ও চট্টগ্রামের দুই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসা সোনার একটি অংশ প্রায়ই বিমানবন্দরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। এই সোনা চোরাচালান দেশের অর্থনীতিতে সরাসরি ফেলছে নেতিবাচক প্রভাব। একে ঘিরে গড়ে উঠছে একশ্রেণির অপরাধী, যা আইনশৃঙ্খলার প্রতি হুমকিস্বরূপ। দেশের প্রধান ও আন্তর্জাতিকমানের বিমানবন্দর হওয়ায় দেশের ভাবমূর্তিও প্রশ্নবিদ্ধ হয় বৈকি। সোনার বিনিময়ে অস্ত্র ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে কিনা- এমন প্রশ্ন সামনে চলে এসেছে। বাংলাদেশ থেকে সোনা পাচারের ওপর ভারতের জুয়েলারি শিল্প নির্ভরশীল। বাংলাদেশেও সোনা আসে চোরাচালানের মাধ্যমে। দেশের বিমানবন্দরগুলো সোনা চোরাচালানিদের প্রতি উদার হওয়ায় মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশ থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে যে সোনা আনা হয় তার বৃহৎ অংশ পাচার হয় ভারতে। এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে চীনের পর ভারতই হচ্ছে দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। উভয় দেশ চায় বাণিজ্য বাড়াতে। এক্ষেত্রে বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধান করা করা জরুরি। চোরাচালান রোধে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের গুরুত্ব অপরিসীম। তা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে হোক কিংবা আলাদা কোনো সংস্থার ব্যবস্থাপনায় হোক। তারা সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডও পরিচালনা করতে পারে। অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকে সাফল্য থাকলেও চোরাচালান প্রতিরোধে আমাদের দুর্বলতাই স্পষ্ট হচ্ছে। মোটাদাগে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। দেশের স্বার্থেই সরকার চোরাচালান রোধে শূন্য সহনশীলতায় কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলেই প্রত্যাশা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়