হাসেম ফুডে অগ্নিকাণ্ড : ৩ মাস পর দগ্ধ ছেলের মরদেহ পেলেন বাবা

আগের সংবাদ

রোহিঙ্গাদের অস্ত্র-অর্থের উৎস কী

পরের সংবাদ

আইপিএলের সেরা দশে মোস্তাফিজ

প্রকাশিত: অক্টোবর ১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ আইপিএলে নজর কাড়া সব পারফরম্যান্স করে যাচ্ছেন কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে গত ম্যাচে ২০ রান দিয়ে ২ উইকেট শিকার করার পাশাপাশি অসাধারণ ফিল্ডিংয়ে বাঁচিয়েছেন নিশ্চিত ওভার বাউন্ডারি। টাইগার পেসার তার পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখলেও জয়ের ধারায় নেই তার দল রাজস্থান রয়্যালস। ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে ম্যাচটিতে তারা হেরেছে ৭ উইকেটের ব্যবধানে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে টানা তিন ম্যাচ হেরে এলিমেনেটর পর্ব থেকে একটু করে করে দূরে সরে যাচ্ছে স্যাঞ্জু স্যামসনরা। তবে বাকি থাকা তিন ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াতে পারলে মোস্তাফিজদের সুযোগ আছে দ্বিতীয় পর্বে পৌঁছানোর। রাজস্থান প্রতিযোগিতায় জায়গা করতে পারুক আর নাই পারুক, মোস্তাফিজ জায়গা করে নিয়েছেন সেরা দশের প্রতিযোগিতায়। আইপিএলের চলতি আসরে ১১ ম্যাচ থেকে ১৩ উইকেট নিয়ে বোলারদের তালিকায় সেরা নয়ে স্থান করে নিয়েছেন দ্য ফিজ। তার সমান সংখ্যক ম্যাচে ২৬ উইকেট নিয়ে তালিকার শীর্ষে আছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সের হার্শাল প্যাটেল।
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ আইপিলে বাংলাদেশের হয়ে খেলছেন টাইগার অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ও কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। চলতি আসরে সাকিব কলকাতার হয়ে মাঠে নামতে না পারলেও রাজস্থানের জার্সি গায়ে দলের সব ম্যাচে ছিলেন মোস্তাফিজ। পারফরম্যান্সও করে যাচ্ছেন ধারাবাহিকভাবে। নিজেদের শেষ ম্যাচে বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে ২ উইকেট নিয়ে ফিজ স্থান করে নিয়েছেন আইপিএলের সেরা ১০ বোলারের তালিকায়। ৭ উইকেট ব্যবধানে দল হারার দিনে তিনি ৩ ওভার করে দিয়েছেন ২০ রান। অবশ্য বিরাট কোহলির দলকে খুব একটা চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্যমাত্রা দিতে পারেননি স্যামসনরা। ১৫০ রানের লক্ষ্যমাত্রায় অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার গেøন ম্যাক্সওয়েল ঝড়ে ১৭ বল হাতে রেখেই পৌঁছে যায় বিরাট কোহলির দল। ফলে মোস্তাফিজের বোলিং বা ফিল্ডিং কোনো কিছুই এদিন রাজস্থানের ভাগ্য বদল করতে পারেনি।
আইপিএলের চলতি আসরে মোস্তাফিজদের রয়েছে আরো তিনটি ম্যাচ। ম্যাচগুলোতে ভালো করতে পারলে ফিজের সামনে সুযোগ আছে সেরা পাঁচে জায়গা করে নেয়ার। দল টুর্নামেন্টের শেষ পর্যন্ত খেলতে পারলে সেরা বোলার তালিকায় সেরা তিনে পৌঁছে যেতে পারেন তিনি। আইপিএলের চলতি আসরে ফিজের সেরা বোলিং ফিগার ২০ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট। সানরাইজার্সের বিপক্ষে ম্যাচটিতে রাজস্থান জয় পেয়েছিল ৫৫ রানে। চলতি আসরে ফিজের উইকেট সংখ্যা ১১ ম্যাচে ১৩টি। এর মধ্যে তিন ম্যাচে ২ উইকেট করে ৬টি, চার ম্যাচে এক উইকেট করে ৪টি, এক ম্যাচে ৩ উইকেট নিয়ে মোট ১৩ উইকেট তার ঝুড়িতে। বাকি তিন ম্যাচে ছিলেন উইকেট শূন্য। চলতি আসরে তার বোলিং ইকোনমি রেট ৭.৭৫।
এদিকে আইপিএলের দ্বিতীয় অংশে রাজস্থান রয়্যালস খেলেছে চারটি ম্যাচ। এক ম্যাচে ফিজ, ত্যাগী ঝলকে পঞ্জাবের বিপক্ষে ২ রানে জয় পেলেও বাকি তিন ম্যাচে ছিল না জয়ের ধারায়। ফলে ভারত অংশে খুব ভালোভাবে প্রতিযোগিতায় থাকলেও ধীরে ধীরে ছিটকে পড়ছে দলটি। তবে টুর্নামেন্ট থেকে এখনো আশা হারিয়ে যায়নি মোস্তাফিজদের। চেন্নাই সুপার কিংস ১০ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ও ১১ ম্যাচে সমান পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে দিল্লি ক্যাপিটালস। দল দুটির দ্বিতীয়পর্ব অনকটাই নিশ্চিত প্রায়। এখনো দ্বিতীয় পর্বের জায়গা করে নেয়ার সুযোগ রয়েছে দুইটি দলের সামনে।
১১ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর অবস্থান টেবিলের তিনে। তারাও প্লে অফের জন্য অনেকটা টিকেট কেটে রেখেছে। তবে টেবিলের চারে থাকা কলকাতা নাইট রাইডার্স ও পাঁচে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স আছে পয়েন্ট টেবিলের পাঁচে। দুই দলের ঝুলিতেই সমান ১১ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট করে। আইপিএলের সেরা চার দল সুযোগ পায় দ্বিতীয় পর্বে খেলার। মোস্তাফিজের দলের সুযোগ আছে এই কলকাতা ও মুম্বাইকে পেছনে ফেলে সেরা চারে জায়গা করে নেয়ার। সেক্ষেত্রে ফিজদের শেষ তিন ম্যাচের সবকটিতে জিততে হবে। অন্যদিকে কলকাতা ও মুম্বাইয়ের শেষ তিন ম্যাচের দুইটিতেই হার প্রার্থনা করতে হবে স্যামসনদের।
অবশ্য দল দুটির সঙ্গে সমান পয়েন্ট হলেও একটা সুযোগ থাকবে যদি রাজস্থান রান রেটে এগিয়ে থাকেন। দুই দলের সঙ্গেই অবশ্য ফিজদের দেখা হবে গ্রুপ পর্বের বাকি থাকা তিন ম্যাচে। আগামী ৫ অক্টোবর মুম্বাই আর ৭ অক্টোবর কলকাতার বিপক্ষে মুখোমুখি লড়াইয়ে মাঠে নামবে ফিজের দল। তার আগে আগামীকাল তাদের লড়াই করতে হবে ধোনির চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে।
দলকে জয় এনে দিতে মোস্তাফিজ অবশ্য নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিন্তু ব্যাটিংয়ে ধার কমায় রাজস্থান দল হিসেবে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে। অথচ আইপিএলে মোস্তাফিজকে রাজস্থান অতটা মূল্যায়ন করে দলে ভেড়ায়নি। আসরের শুরুতে রাজস্থানের বোলিংয়ের মূল অস্ত্র ছিল ইংল্যান্ডের গতিদানব জোফরা আর্চার।
ফলে আগের দুই আসরে খারাপ করা মোস্তাফিজের একাদশে থাকা নিয়েও ছিল সংশয়। কিন্তু আর্চার ইনজুরির কারণে ক্রিকেটের বাইরে থাকায় ফিজ নিজেকে প্রমাণের সুযোগ পেয়ে যান। পারফরম্যান্স ঝলকে তিনি হয়ে ওঠেন দলের সবচেয়ে কার্যকর বোলার। অথচ রাজস্থান তাদের সবচেয়ে কার্যকরী এ বোলারকে দলে ভিড়িয়েছে মাত্র ১ কোটি রুপি খরচে। যেখানে দক্ষিণ আফ্রিকান অলরাউন্ডার ক্রিস মরিসকে কিনতে দলটি খরচ করে ১৬ কোটি ২৫ লাখ রুপি। অর্থের ব্যবধানে মরিস থেকে ফিজ পিছিয়ে আছেন ১৬ গুণ। কিন্তু পারফরম্যান্সে ফিজের ধারেকাছেও নেই এ অলরাউন্ডার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়