হাইকোর্টের রুল : সরকারি কর্মচারী গ্রেপ্তারে পূর্বানুমতি কেন অবৈধ নয়

আগের সংবাদ

উৎসবের গণটিকায় ভোগান্তিও

পরের সংবাদ

বিলসের গবেষণা প্রতিবেদন : আত্মহত্যার প্রবণতায় ভুগছেন অধিকাংশ বিদেশফেরত নারী

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : এক গবেষণায় দেখা গেছে, মধ্যপ্রাচ্যসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শ্রমিক হিসেবে কাজ করা নারীদের অধিকাংশই দেশে ফেরার পর বেকার হয়ে পড়েছেন। বিদেশ যাওয়ার আগে তাদের যে অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল তার চেয়েও খারাপ অবস্থা বিরাজ করছে দেশে ফিরে আসার পর। এমনকি তাদের সামাজিক মর্যাদা হয়েছে আরো নিচু এবং চরিত্রহীন নারী হিসেবে তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। রাস্তায় বের হলে যেমন তারা ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছেন। পরিবারে স্বামী, সন্তান এমনকি মা-বাবা-ভাই-বোনদের কাছ থেকেও সহানুভূতির পরিবর্তে মিলছে ভর্ৎসনা। স্বামী পরিত্যক্তা হয়ে কেউ কেউ রয়েছেন পরিবার বা নিকটাত্মীয় থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায়। অমানবিক আচরণ ও সামাজিকভাবে বয়কটের কারণে অনেকের মধ্যেই আত্মহত্যার প্রবণতা বিরাজ করছে। ‘দেশে ফিরে আসা অভিবাসী নারী শ্রমিকদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থান’ শীর্ষক এক গবেষণাপত্রে এমন চিত্রই ফুটে উঠেছে। গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে গবেষণায় প্রাপ্ত এসব তথ্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-বিলসের উপপরিচালক (গবেষণা) মো. মনিরুল ইসলাম। রাজধানীর ধানমন্ডিতে বিলস কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনে সূচনা বক্তব্য রাখেন বিলসের নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাকিল আকতার চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন বিলসের উপপরিচালক ইউসুফ আল মামুন, সদস্য মো. আব্দুল ওয়াহেদ, পূলক রঞ্জন ধর, আব্দুল মজিদ, নাজমা ইয়াসমিন প্রমুখ। গবেষণাপত্রে উল্লেখ

করা হয়, ৯ লাখ ৫০ হাজারের মতো বাংলাদেশি নারী সারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। এদের মধ্যে কতজন দেশে ফিরে এসেছেন তার সঠিক তালিকা নেই। তবে ফিরে আসা অধিকাংশ নারীদের অভিজ্ঞতা নেতিবাচক। বিলস কর্তৃক গবেষণায় যশোর, ফরিদপুর ও চট্টগ্রাম জেলার ১২টি উপজেলার ৩২৩ জন বিদেশফেরত নারীদের ওপর ৬ মাসব্যাপী গবেষণা করে এসব তথ্য উপাত্ত ওঠে এসেছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গবেষণাকালে গবেষকরা বিদেশফেরত নারী শ্রমিকের পাশাপাশি তাদের পরিবার, আত্মীয়স্বজন, পাড়াপ্রতিবেশী, সরকারি প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, এনজিওকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে গবেষক দল চিহ্নিত করেছেন বিদেশফেরত নারী শ্রমিকদের মধ্যে অধিকাংশই শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ। আর্থিক অভাবে চিকিৎসা নিতে পারছেন না। বিদেশে অবস্থানকালে প্রতিকুল কর্মপরিবেশের কারণে অনেকে নানান অঙ্গপ্রত্যঙ্গ হারিয়েছেন। শারীরিক ও যৌন নির্যাতন ও কারাভোগের কারণে অনেকের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা কাজ করছে।
এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে গবেষণায় কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হলো, পারিবারিক ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সামাজিক মানসিক পরিস্থিতির পরিবর্তন বা উত্তরণ ঘটানো। খারাপ আচরণ থেকে রেহাই দেয়া, সুদবিহীন ঋণদানের মাধ্যমে আয়ের ব্যবস্থা করা, ফোকাল পারসন নিশ্চিত করা, আইন ও পলিসি সংশোধন করা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়