বিজিএমইএ : সব স্থলবন্দর দিয়ে ইয়ার্ন আমদানির সুযোগ দাবি

আগের সংবাদ

করের আওতায় আসছেন ব্যাংকের কার্ডধারীরা!

পরের সংবাদ

বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ দুই ঘণ্টা এগিয়ে আনা হলো : সিরিজ নিয়ে সাবেকরা যা ভাবছেন

প্রকাশিত: আগস্ট ১৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শামসুজ্জামান শামস : ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়াকে ৪-১ ব্যবধানে হারিয়ে উজ্জীবিত টাইগাররা এবার নিউজিল্যান্ড বধে মরিয়া। কিউইদের বিপক্ষেও ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে রাসেল ডমিঙ্গোর শিষ্যরা। আগামী ২৪ আগস্ট বাংলাদেশে আসবে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দল। ঢাকায় পা রেখে অতিথিরা ৩ দিনের কোয়ারেন্টাইন করবেন। এরপর অনুশীলনে নামবেন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১০ টি-টোয়েন্টি খেলেছে টাইগাররা। হেরেছে প্রতিটি ম্যাচ। এবার ঘরের মাঠে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বাহিনী সিরিজ জিততে পারলে সিরিজ জয়ের সঙ্গে হারের ব্যবধানও কমে আসবে। কিউইদের বিপক্ষে ম্যাচের সূচি আগেই প্রকাশ করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। সিরিজের সব ম্যাচ হবে মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। প্রথম টি-টোয়েন্টি অনুষ্ঠিত হবে ১ সেপ্টেম্বর। পরের চারটি ম্যাচ ৩, ৫, ৮ ও ১০ সেপ্টেম্বর। বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজের ম্যাচগুলো সন্ধ্যা ৬টায় অনুষ্ঠিত হলেও নিউজিল্যান্ড-বাংলাদেশ ৫ ম্যাচে টি-টোয়েন্টি সিরিজের ম্যাচগুলো ২ ঘণ্টা এগিয়ে আনা হয়েছে। কিউইদের বিপক্ষে টাইগারদের ম্যাচ শুরু হবে বিকাল ৪টায়। এত দিন শোনা গিয়েছিল বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ডের ম্যাচ হবে সন্ধ্যা ৬টায়। হঠাৎ ম্যাচের সময় ২ ঘণ্টা এগিয়ে আনা সম্পর্কে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন জানিয়েছেন, দুই দেশের সময়ের মারপ্যাঁচের কারণে রীতিমতো বাধ্য হয়ে ২ ঘণ্টা এগিয়ে আনা হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে ৬ ঘণ্টা এগিয়ে নিউজিল্যান্ডের সময়। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় ম্যাচ শুরু হলে তখন নিউজিল্যান্ডে বাজবে রাত ১২টা।
সুজনের ব্যাখ্যা, ‘নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে আমাদের সময়ের একটা পার্থক্য আছে। ওদের ভিউয়ারশিপেরও একটা ব্যাপার আছে। আমরা টিম ম্যানেজমেন্টে ও নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেছি।’ বাংলাদেশের বিপক্ষে পাঁচটি টি-টোয়েন্টি খেলার আগে বিকেএসপিতে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার কথা ছিল নিউজিল্যান্ডের। কিন্তু ম্যাচটি তারা বাতিল করেছে।
করোনাকালীন পরিস্থিতিতে বিকেএসপিতে আলাদা জৈব সুরক্ষা বলয় তৈরি করতে হবে। একই সঙ্গে ঢাকা থেকে বিকেএসপির দূরত্বও তাদের চিন্তার কারণ। এজন্য প্রস্তুতি ম্যাচটি খেলতে চাচ্ছে না কিউইরা। তবে বিসিবি শুধু জৈব সুরক্ষা বলয়ের কারণের কথাই বলছে।
বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজন বলেন, ‘নিউজিল্যান্ড প্রস্তুতি ম্যাচটা খেলতে চাচ্ছে না। সূচিতে ২৯ আগস্ট বিকেএসপিতে বিসিবির দলের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার কথা ছিল তাদের। কিন্তু ম্যাচটি আয়োজন করলে জৈব সুরক্ষা বলয় তৈরি করা লাগবে। অতিরিক্ত জৈব সুরক্ষা বলয় এড়িয়ে যেতে চাইছে তারা।’ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সাত দিনে পাঁচ টি-টোয়েন্টি খেলছে টাইগাররা। তবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রতি ম্যাচ শেষে রয়েছে একদিন করে বিরতি। ১০ দিনে হবে পাঁচটি ম্যাচ।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ডানহাতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান এবং ডানহাতি অফ স্পিন বোলার রাজিন সালেহ ১৯৮৩ সালের ২০ নভেম্বর সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৩ সালে করাচিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে তার টেস্ট অভিষেক ঘটে আর একদিনের খেলায় অভিষেক ঘটে একই বছর মুলতানে একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে।
আসন্ন বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড টি-টোয়েন্টি সিরিজ সম্পর্কে গতকাল ভোরের কাগজকে জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার রাজিন সালেহ বলেন, নিউজিল্যান্ড দলটি একেবারে দুর্বল নয়। আমি মনে করি কিউইরা টাইগারদের বিপক্ষে ভালো ফাইট দেবে। বাংলাদেশ সিরিজ জিতবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। ঘরের মাঠে টাইগাররা যে কোনো দলকে হারাতে পারে তা অনেকবার প্রমাণিত হয়েছে। অস্ট্রেলিয়াকে বাংলাদেশ ৪-১ ব্যবধানে হারিয়েছিল। নিউজিল্যান্ডের তারুণ্যনির্ভর দলটি অস্ট্রেলিয়ার মতো বাজে পারফরমেন্স করবে না।
মিরপুরের উইকেট সম্পর্কে রাজিন সালেহ ভোরের কাজকে বলেন, স্লো কিংবা স্পোর্টিং উইকেট এ নিয়ে জল ঘোলা করা উচিত নয়। আমি মনে করি বাংলাদেশ যে উইকেটে অস্ট্রেলিয়াকে ৪-১ ব্যবধানে হারিয়েছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেই উইকেট তৈরি করা উচিত। যে উইকেটে টাইগাররা সিরিজ জিততে পারবে সেই রকম উইকেটই বানানো উত্তম। প্রতিটি দেশই ঘরের মাঠের সুবিধা নিয়ে থাকে। আমরা কেন নেব না। একটি সিরিজ জয় বাংলাদেশ দলকে অনেক উঁচুতে নিয়ে গেছে। টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা এমনিতেই ভালো অবস্থানে নেই। অস্ট্রেলিয়ার পর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জিততে পারলে বাংলাদেশ র‌্যাঙ্কিয়ে এগিয়ে যেতে পারবে।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টাইগার ওপেনিং জুটি নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি। ওপেনিং কি পরিবর্তন জরুরি? এ প্রশ্নের উত্তরে ভোরের কাগজকে জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার রাজিন সালেহ বলেন, আমরা এখনো আরেকটি সাকিব আল হাসান এবং তামিম ইকবাল তৈরি করতে পারেনি। ঘন ঘন পরিবর্তন দক্ষ খেলোয়াড় তৈরির অন্তরায়। একজন খেলোয়াড়কে সুযোগ না দিলে সে নিজেকে কীভাবে মেলে ধরবে? আমি মনে করি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও ওদের সুযোগ দেয়া উচিত। কিউইদের বিপক্ষে ওপেনিং জুটি ভালো করবে।
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে ২০১৩ সালের ২৩ মার্চ হাম্বানতোতায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে মোহাম্মদ জিয়াউর রহমানের। ১০৬তম বাংলাদেশি হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। প্রথম ইনিংসে কোনো উইকেট না পেলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ৪টি উইকেট দখল করে দলকে ১৪৩ রানের ব্যবধানে জয়ী হবার মাধ্যমে সিরিজ ড্র করতে সাহায্য করেন। ১৯৮৬ সালের ২ ডিসেম্বর খুলনায় জন্ম নেয়া মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ডানহাতি ব্যাটসম্যান ও ডানহাতি ফাস্ট মিডিয়াম বোলার হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করেন। ২০০৩-০৪ মৌসুমে আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে দলের পক্ষ হয়ে খেলেছেন। এছাড়াও, ২০০৬-০৭ মৌসুমে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি একাদশ ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড একাডেমি দলের হয়ে খেলেছেন জিয়াউর রহমান।
গতকাল ভোরের কাগজকে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড সিরিজ সম্পর্কে মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান বলেন, বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করবে। টাইগাররা এ মুহূর্তে যে ফর্মে রয়েছে তাতে কিউইরা হার এড়াতে পারবে না। অস্ট্রেলিয়া ভাগ্যের জোরে হোয়াইটওয়াশ এড়াতে সক্ষম হয়েছে। মিরপুরের যে উইকেট এ উইকেটে বাংলাদেশ যে রান তুলবে তা চেজ করতে পারবে না ওয়ানডে বিশ্বকাপে রানার্সআপ নিউজিল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়াকে ৬২ রানে অলআউট করে টাইগাররা যে নজির স্থাপন করেছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও অনেক রেকর্ড হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তামিম ইনজুরির কারণে দলে না ফিরলেও কিউইদের বিপক্ষে মুশফিক এবং লিটন দাস ফিরলে দলের শক্তি আরো বৃদ্ধি পাবে।
মাহমুদউল্লাহ বাহিনীর বোলিং এবং ফিল্ডিং সম্পর্কে জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান ভোরের কাগজকে বলেন, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আমাদের বোলাররা চমৎকার বোলিং করেছে। বিশেষ করে মোস্তাফিজ এবং শরিফুর ইসলাম অজিদের কোমর সোজা করে দাঁড়াতে দেয়নি। অন্যরাও ভালো বল করেছে। নাসুম, সাকিব, সাইফউদ্দিন নামের প্রতি সুবিচার করেছে। টাইগারদের ফিল্ডিং আগের চেয়ে ভালো হচ্ছে। ইদানীং তরুণ ফিল্ডাররা দুর্দান্ত ফিল্ডিং করছে।
২০১৩ সালের পর বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে আসছে নিউজিল্যান্ড। দুই দল ঢাকায় মাত্র একটি টি-টোয়েন্টি খেলেছে। ২০১৩ সালে মিরপুরে অনুষ্ঠিত হওয়া সেই ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছিল ১৫ রানে। তবে ওয়ানডেতে নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা দিয়েছিল বাংলাদেশ। মিরপুরে দুটি এবং ফতুল্লায় একটি ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এর আগে দুই দলের দুটি টেস্টও ড্র হয়েছিল। ২০১০ সালেও বাংলাদেশে এসেছিল কিউইরা। সেবারও ওয়ানডেতে তাদের ৪-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ।
দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলতে ২০০৪ সালে প্রথম বাংলাদেশে আসে নিউজিল্যান্ড। এরপর ২০০৮, ২০১০, ২০১৩ সালেও আসে তারা। এবার দীর্ঘ সময় পর বাংলাদেশে আসছে নিউজিল্যান্ড। বিশ্বকাপের ঠিক আগে শুধু টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবেন তারা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়