কাগজ ডেস্ক : পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজ দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে সফরকারীদের হারের লজ্জায় ডুবাল ক্যারিবীয়রা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ঘরের মাঠ কিংস্টনে রবিবার ক্যারিবীয় বোলার কেমার রোচের ব্যাটিং নৈপুণ্যে হেরেছে এক উইকেটের ব্যবধানে। এর আগে ক্যারিবীয় বোলারদের বিপক্ষে পাক বাহিনীর ব্যাটিং ব্যর্থতায় পাঁচ দিনের ম্যাচ চার দিনেই শেষ হয়ে যায়। পাক বাহিনীর স্কোয়াডকে একাই ধসে দেন ১৯ বছর বয়সি ক্যারিবিয়ান বোলার জেডন সিলস।
এর আগে চতুর্থ দিনে জয়ের জন্য স্বাগতিকদের প্রয়োজন ছিল মাত্র ১৬৮ রান। এই অল্প সংখ্যক রান তাড়া করতে নেমেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৫১ রানে হারিয়ে ফেলে ৯ উইকেট। শেষ জুটিতে কেমার রোচ ও জেডেন সিলস যখন ক্রিজে, তখনো প্রয়োজন ছিল ১৭ রান। এ সময় পাকিস্তানের বোলাররা বেশকিছু সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি। ফলে শেষ পর্যন্ত রোচ-সিলসের কল্যাণেই এক উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এর আগে ১৬৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানরা। ২, ৪, ৫ রানে যখন ক্যারিবীয় তিন ব্যাটসম্যান ক্রেইগ ব্রাথওয়েট, কিরন পাওয়েল, বোনাররা বিদায় নেন তখন এক প্রান্ত ধরে রাখেন জার্মেইন ব্লাকউড। তাকে কিছুটা সঙ্গ দিয়ে দলকে ২২ রানের ইনিংস উপহার দেন রস্টন চেস। এরপর আবার ব্লাকউডকে ৫৫ রানে বিদায় দিয়েই ম্যাচে ফিরেছিল পাকিস্তান। কাইল মায়ার্স ও জেসন হোল্ডারকেও দ্রুত ফিরিয়ে ম্যাচের ফলাফল নিজেদের দিকে করে নেন পাক বাহিনী। কিন্তু টপ ও মিডল অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের বিদায় করলেও গলার কাটা হয়ে বাঁধেন কেমার রোচ। শেষ পর্যন্ত ক্যারিবীয় পেসার রোচ ৫২ বলে ৩০ রানে অপরাজিত থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে এক নাটকীয় জয় উপহার দেন।
তার সঙ্গী সিলস অন্য প্রান্তে ২ রানে অপরাজিত ছিলেন। এর আগে পাকিস্তানের পক্ষে লড়াইটা ভালোই চালিয়েছিলেন বোলাররা। শাহিন শাহ আফ্রিদি ও হাসান আলী পাকিস্তানকে জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন শেষ পর্যন্ত। আফ্রিদি ৫০ রান দিয়ে তুলে নেন ৪ উইকেট। হাসান আলী ৩৭ রানে তুলে নেন ৩ উইকেট। উইন্ডিজের ৯ উইকেটের বাকি ২ উইকেট নেন ফাহিম আশরাফ।
এদিকে ম্যাচে দুই ইনিংস মিলে ৮ উইকেট নিয়ে জ্যামাইকার কিংস্টোন টেস্টের ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন তরুণ পেসার জেডন সিলস। ম্যাচসেরা হওয়ার দিনে ১৯ বছর বয়সি সিলস ভেঙেছেন ৭১ বছরে রেকর্ড। ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম বোলার হিসেবে ২০ বছর বয়স হওয়ার আগেই ফাইফার নেয়ার কীর্তি গড়েছেন ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর এ পেসার। যার সুবাদে তিনিই এখন ক্যারিবীয়দের পক্ষে সর্বকনিষ্ঠ ৫ উইকেট শিকারি বোলার। এতদিন ধরে রেকর্ডটি ছিল আলফ ভ্যালেন্টাইনের দখলে। প্রায় ৭১ বছর আগে ১৯৫০ সালে নিজের অভিষেক ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৮ উইকেট নিয়েছিলেন ভ্যালেন্টাইন। তখন তার বয়স ছিল ২০ বছর ৪১ দিন। এবার তার ৭০ দিন কমে ১৯ বছর ৩৩৬ দিন বয়সে ফাইফার নিলেন সিলস। তবে টেস্ট ক্রিকেটে সর্বকনিষ্ঠ ফাইফারের বিশ্ব রেকর্ড থেকে বেশ দূরেই রয়েছেন সিলস। ১৯৫৮ সালে মাত্র ১৬ বছর ৩০৩ দিন বয়সে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন পাকিস্তান নাসিম উল গণি। সেই রেকর্ড টিকে রয়েছে এখনো। এদিকে নিজ দেশের হয়ে রেকর্ড গড়ার ম্যাচে দুঃসংবাদও পেয়েছেন ১৯ বছরের সিলস। ম্যাচের প্রথম ইনিংসে হাসান আলিকে আউট করার পর অতিরিক্ত আগ্রাসী উদযাপনের কারণে তাকে তিরস্কৃত করেছে আইসিসি, পাশাপাশি দেয়া হয়েছে একটি ডিমেরিট পয়েন্ট।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।