অশ্রুডানায় সূর্য খোঁজার পালা

আগের সংবাদ

শূন্য অর্থনীতি থেকে উন্নয়নের রোল মডেল

পরের সংবাদ

বঙ্গবন্ধুর চেতনা চলার পথের প্রেরণা

প্রকাশিত: আগস্ট ১৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ তথা ‘মুজিববর্ষ’ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের কালপর্বে এবারের ‘শোকাবহ আগস্ট’ ভিন্ন মাত্রায় জাতীয় জীবনে যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যে পালিত হচ্ছে। যার জন্ম না হলে এ দেশ স্বাধীন হতো না এবং আজো আমরা পাকিস্তানের দাসত্বের নিগড়ে আবদ্ধ থাকতাম, ইতিহাসের মহামানব দুনিয়ার নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের শ্রেষ্ঠবন্ধু জাতির পিতাকে আমরা এই আগস্ট মাসে হারিয়েছি। সেদিনের সেই কালরাতে ঘাতকের নির্মম বুলেটে প্রাণ হারিয়েছেন বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ জাতির পিতার পরিবারের অন্যান্য সদস্যগণ- তাদের সকলকে বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করি।
বঙ্গবন্ধুর কাছে থাকার দুর্লভ সৌভাগ্যের অধিকারী আমি। বঙ্গবন্ধুর কাছেই শুনেছি, তিনি বলেছিলেন, ‘পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর উপলব্ধি করেছি, এই পাকিস্তান বাঙালিদের জন্য হয় নাই। একদিন বাংলার ভাগ্যনিয়ন্তা বাঙালিদেরই হতে হবে।’ সেই লক্ষ্য সামনে নিয়ে জেল-জুলুম, অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছেন। কোনোদিন মাথা নত করেননি। বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা। আরেকটি লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশকে সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করা। গর্ব করে বলতেন, ‘আমার বাংলা হবে রূপসী বাংলা, আমার বাংলাদেশ হবে সোনার বাংলা, আমার বাংলাদেশ হবে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড।’ আজ তিনি টুঙ্গিপাড়ার কবরে শায়িত। আর কোনোদিন ফিরে আসবেন না, দরদি কণ্ঠে ডাকবেন না ‘ভাইয়েরা আমার’ বলে। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি আমাকে আন্দোলিত করে। বঙ্গবন্ধুর চেতনা আমার চলার পথের প্রেরণা। ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা যখন বঙ্গবন্ধুকে কারামুক্ত করে ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) সংবর্ধনা দিয়ে কৃতজ্ঞ জাতির পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞচিত্তে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করেছিলাম, সেই থেকে শেষদিন পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর পাশে ছিলাম। ’৬৯-এর পর বঙ্গবন্ধু যতো রাজনৈতিক সফর করেছেন আমি সফরসঙ্গী হয়েছি। ’৭০-এর নির্বাচনের আগে ভোলাসহ দেশের উপকূলীয় অঞ্চল ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ¡াসে ভেসে গিয়েছিল। ১০ লক্ষাধিক মানুষ মৃত্যুবরণ করেছিল। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়াতে বঙ্গবন্ধু ছুটে গিয়েছেন, অশ্রæসজল চোখে বলেছেন, ‘আমাকে এখান থেকে নিয়ে চল। আমি আর পারি না।’ ভোলা থেকে ফিরে শাহবাগ হোটেলে- ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়’- দুই শতাধিক দেশি-বিদেশি সাংবাদিকের উপস্থিতিতে বলেছেন, ‘প্রতিবছর ঘূর্ণিঝড় প্রাকৃতিক দুর্যোগে লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়, আর আমরা এভাবে মরতে চাই না। আমরা বাঙালিরা বাংলার ভাগ্যনিয়ন্তা হতে চাই।’
আগরতলা মামলার অন্যতম আসামি সাবেক ডেপুটি স্পিকার প্রয়াত কর্নেল শওকত আলী সাহেবের কাছে শুনেছি, যেদিন আগরতলা মামলার বিচার শুরু হয়, সেদিন ওই মামলার আসামিদের সঙ্গে প্রিজন ভ্যানে উঠে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমার সাথে কণ্ঠ মিলাও।’ এই বলে তিনি গেয়েছিলেন দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের সেই বিখ্যাত গান, ‘ধন ধান্য পুষ্প ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা, তাহার মাঝে আছে দেশ এক সকল দেশের সেরা…।’ দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু এই গানটিকে ‘জাতীয় গীত’ হিসেবে অভিহিত করেন। শওকত সাহেব বঙ্গবন্ধুকে বলেন, ‘মুজিব ভাই, আমাদের তো ফাঁসি হবে, আপনি কী করেন।’ বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘ঘাবড়াবার কিছু নাই। ওরা আমাদের ফাঁসি দেয়ার মতো ক্ষমতা রাখে না। এই মামলা আমরা মোকাবেলা করবো। আমাদের বিচার শুরু হবে। দেশের মানুষ এই বিচারের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড আন্দোলন করবে। ছাত্র-জনতা জেগে উঠবে। সেই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা মুক্তিলাভ করবো। মুক্তিলাভের পর দেশে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে আমরা বিজয়ী হবো। কিন্তু বিজয়ের পর ওরা আমাদের ক্ষমতা দেবে না। ক্ষমতা না দিয়ে ওরা আমাদের উপর গণহত্যা চালাবে। তখন বাংলার মানুষ সর্বব্যাপী মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়বে।’ সেদিন তিনি যা বলেছিলেন, পরে তাই ঘটেছিল। তাঁকে ফাঁসিতে হত্যার পরিকল্পনা হয়েছিল। জাগ্রত ছাত্র-জনতা গণআন্দোলন-গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে বঙ্গবন্ধুসহ সকল বন্দিকে কারামুক্ত করেছিল।
মুক্তিযুদ্ধ শেষে ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলে ১৮ ডিসেম্বর প্রিয় মাতৃভূমিতে ফিরে আসি। ২২ ডিসেম্বর মুজিবনগর সরকার দেশে ফিরে আসে। ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করে ১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন এবং ১৪ জানুয়ারি আমাকে মাত্র ২৮ বছর বয়সে প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় তাঁর রাজনৈতিক সচিব করেন। বঙ্গবন্ধুর প্রথম বিদেশ সফর ছিল ’৭২-এর ৬ ফেব্রুয়ারি, ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। সফরসঙ্গী হিসেবে দেখেছি কলকাতায় স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসভা। ২০ লক্ষাধিক মানুষের উদ্দেশে বক্তৃতার শেষে কৃতজ্ঞচিত্তে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘রিক্ত আমি নিঃস্ব আমি দেবার কিছু নাই, আছে শুধু ভালোবাসা দিয়ে গেলাম তাই।’ এরপর রাজভবনে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর বৈঠকে আমার সৌভাগ্য হয়েছিল উপস্থিত থাকার। বৈঠক শেষে শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীকে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমার জন্মদিনে আপনাকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’ ভারতের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধু পুনরায় বললেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার সফরের আগেই আমি চাই ভারতের সেনাবাহিনী আপনি ফিরিয়ে আনুন।’ ইন্দিরা গান্ধী বলেছিলেন, ‘আপনি যা চাইবেন আমি তাই করবো।’ ’৭২-এর ১৭ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে আসেন এবং প্রতিশ্রæতি মোতাবেক ১২ মার্চ বিদায়ী কুচকাওয়াজের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মাটি থেকে ভারতের সেনাবাহিনী ফিরিয়ে নেন। একই বছরের ১ মার্চ বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের আরেক মিত্রদেশ সোভিয়েত ইউনিয়ন সফরে গিয়েছি। মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোতে সোভিয়েত ইউনিয়ন আমাদের সার্বিক সমর্থন জুগিয়েছে। সেদিন সোভিয়েত প্রধানমন্ত্রী আলেক্সেই কোসিগিন বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধুকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন এবং ক্রেমলিনে শীর্ষ নেতৃবৃন্দ- কমিউনিস্ট পার্টির সেক্রেটারি জেনারেল লিওনিদ ইলিচ ব্রেজনেভ, সোভিয়েত প্রেসিডেন্ট নিকোলাই পদগর্নি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রে গ্রোমিকো বঙ্গবন্ধুকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। এটি ছিল বিরল ঘটনা। ’৭৩-এর ২৬ জুলাই ছিল বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে যুগোসøাভিয়ায় রাষ্ট্রীয় সফর। যুগোসøাভিয়ার প্রেসিডেন্ট মার্শাল টিটো ও প্রধানমন্ত্রী জামান বিয়েদিস বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধুকে অভ্যর্থনা জানান। প্রধানমন্ত্রীকে প্রটোকল অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর অভ্যর্থনা জানানোর কথা। কিন্তু বঙ্গবন্ধু ছিলেন প্রটোকলের ঊর্ধ্বে। তিনি তো শুধু প্রধানমন্ত্রী নন, একটি জাতির জনক! প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রীসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধুকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। যুগোসøাভিয়া থেকে ’৭৩-এর ৩ আগস্ট কানাডার রাজধানী অটোয়াতে ৩২টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছিল কমনওয়েলথ সম্মেলন। সকল নেতার মাঝে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন বঙ্গবন্ধু। ’৭৩-এর ৯ সেপ্টেম্বর আলজেরিয়ায় অনুষ্ঠিত জোটনিরপেক্ষ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুসহ ৬ জন নেতার নামে তোরণ নির্মিত হয়েছিল। আলজেরিয়ার মঞ্চে দাঁড়িয়েই বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন, ‘বিশ্ব আজ দুভাগে বিভক্ত। শোষক আর শোষিত, আমি শোষিতের পক্ষে।’ ’৭৪-এর ২২ ফেব্রুয়ারি, পাকিস্তান বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেবার পরদিন তিনি ইসলামিক সম্মেলনে যান। সেদিন লাহোরে দেখেছি মানুষ রাস্তার দু-পাশে দাঁড়িয়ে সেøাগান তুলেছে ‘জিয়ে মুজিব জিয়ে মুজিব’, অর্থাৎ মুজিব জিন্দাবাদ মুজিব জিন্দাবাদ। লাহোরে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন বঙ্গবন্ধু। যতক্ষণ তিনি লাহোরে না পৌঁছেছেন, ততক্ষণ সম্মেলন শুরুই হয়নি। বঙ্গবন্ধুর জন্য সম্মেলন একদিন স্থগিত ছিল। ’৭৪-এর ২৫ সেপ্টেম্বর, জাতির জনক জাতিসংঘে মাতৃভাষা বাংলায় বক্তৃতা করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মহত্তর দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। বঙ্গবন্ধু আত্মমর্যাদাবান নেতা, তাঁর প্রতি বিশ্ব নেতৃবৃন্দের গভীর শ্রদ্ধা। আন্তর্জাতিক রাজনীতির হিমালয়সম উচ্চতায় আসীন ছিলেন তিনি। যেখানে গিয়েছেন মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছেন। স্বাধীনতার পর অল্প সময়ের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর বিচক্ষণ ও দক্ষ কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় ১১৬টি দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে। বঙ্গবন্ধুর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ জাতিসংঘ, কমনওয়েলথ অব নেশনস, ওআইসি, ন্যামসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্যপদ লাভ করে।
’৭৪-এর ১৮ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের দ্বিবার্ষিক কাউন্সিলে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের সভাপতির পদ ত্যাগ করে চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানকে সভাপতি ও জিল্লুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠন করেন। যেমনটা করেছিলেন ’৫৭ সালে, নিজে মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করে গ্রহণ করেছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব। নিজ চিন্তা ও আদর্শ সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, ‘একজন মানুষ হিসেবে সমগ্র মানব জাতি নিয়েই আমি ভাবি। একজন বাঙালি হিসেবে যা কিছু বাঙালিদের সাথে সম্পর্কিত তাই আমাকে গভীরভাবে ভাবায়। এই নিরন্তর সম্পৃক্তির উৎস ভালোবাসা, অক্ষয় ভালোবাসা, যে ভালোবাসা আমার রাজনীতি এবং অস্তিত্বকে অর্থবহ করে তোলে।’ বঙ্গবন্ধুর সমগ্র চিন্তা জুড়েই ছিল দেশ ও দেশের মানুষ। দুখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য তিনি অর্থনৈতিক মুক্তির কাজ শুরু করেন। স্বাধীনতার পর দেশ ছিল ধ্বংসপ্রাপ্ত। গোলাঘরে চাল, ব্যাংকে টাকা ও বৈদেশিক মুদ্রা ছিল না। রাস্তা-ঘাট ধ্বংস করে দিয়েছিল হানাদার বাহিনী। ভৈরব ব্রিজ, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ধ্বংসপ্রাপ্ত। রেললাইন উপড়ে ফেলা হয়েছে। প্লেন, রেল ছিল না। পুরো যোগাযোগ ব্যবস্থা তছনছ। মাত্র ৩ বছর ৭ মাস উদয়াস্ত পরিশ্রম করে অবিশ্বাস্য দ্রুততায় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশটাকে আমরা স্বাভাবিক করি। ভৈরব ব্রিজ, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ যেদিন উদ্বোধন করা হয় সেদিন বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ছিলাম। রাষ্ট্রের যতো প্রতিষ্ঠান তার সবগুলোর ভিত্তি স্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু। এতোসব কিছুর পর যখন দেশটাকে স্বাভাবিক করে দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক দেন, ঠিক তখনই বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। অথচ তখন গোলাঘরে চাল, ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রা এবং দেশে স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছিল।
সুদৃঢ় নীতি, আদর্শ ও সংকল্পবোধ নিয়ে তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ গঠনে অগ্রসর হন। কিন্তু জাতীয়-আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে খুনিচক্র তাঁকে দেশের অভ্যন্তরে সপরিবারে হত্যা করে। জাতির জনককে সপরিবারে হত্যা করেই খুনিচক্র ক্ষান্ত হয়নি। একই বছরের ৩ নভেম্বর আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করার জন্য কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে- বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে যারা বারবার নেতৃত্ব দিয়েছেন- জাতীয় চার নেতাকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য ছিল জাতীয় রাজনীতিতে নেতৃত্ব শূন্যতা তৈরি করা। কিন্তু ঘাতকচক্রের ষড়যন্ত্র আমরা সফল হতে দেইনি। আজ থেকে ৪০ বছর আগে আওয়ামী লীগের রক্তে ভেজা পতাকা দলীয় ও জাতীয় ঐক্যের প্রতীক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার হাতে আমরা তুলে দিয়েছিলাম। জাতির জনক অর্থনৈতিক উন্নয়নের যে ভিত্তিভূমি তৈরি করে দিয়ে গেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধুর চেতনা ধারণ করে, শোককে শক্তিতে পরিণত করেছেন। তিনি নিষ্ঠা, সততা ও সাহসের সঙ্গে সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করতে জাতিকে সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

তোফায়েল আহমেদ : আওয়ামী লীগ নেতা; সংসদ সদস্য; সভাপতি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
ঃড়ভধরষধযসবফ৬৯@মসধরষ.পড়স

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়