৯৯৯-এ কলে ৮ কেজি গাঁজা উদ্ধার

আগের সংবাদ

রবীন্দ্রনাথ ও বাঁশির চিত্রকল্প

পরের সংবাদ

ঠাকুরগাঁওয়ের বাঁশ যাচ্ছে বিভিন্ন জেলায়

প্রকাশিত: আগস্ট ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৫, ২০২১ , ৩:১১ পূর্বাহ্ণ

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : বাঁশ আমাদের সবার কাছে একটি অতি পরিচিত উদ্ভিদ। বাঁশ বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই, মাগো আমার শোলক বলা কাজলা দিদি কই, বাগচির কবিতার এ লাইন দুটো কালের স্মৃতিতেই আছে জাগরূপ। সব ধরনের গুণের সঙ্গে হয়তো পরিচয়ও নেই আমাদের। উদ্ভিদতত্ত্ব মতে বাঁশ ফাঁপা কাণ্ডবিশিষ্ট একটি ঘাস জাতীয উদ্ভিদ। এর বিস্তৃতি অতিব্যাপক। পৃথিবীর সব দেশে কম-বেশি বাঁশ পাওয়া যায়। এরই ধারাবাহিকতায় ঠাকুরগাঁও থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাঁশ রপ্তানি হচ্ছে। এতে করে লকডাউন ও বিধিনিষেধে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা আর্থিক দিক থেকে লাভবান হচ্ছেন। সর্বোপরি এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে অনেক বেকার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে।
ঠাকুরগাঁও জেলা ও দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাঁশের গুরুত্ব অপরিসীম। গৃহনির্মাণ, মঞ্চ নির্মাণ, মই, মাদুর, কুলা, চালনি, পালি, পলো, পানঢালা, মাছ ধরার ঝুড়ি, বিভিন্ন ধরনের সাধারণ ঝুড়ি, শিশুর খেলনা, কলমদানি, ফুলদানি, বাঁশি, সানের কাঠি, ফাঁদ, হস্তশিল্প, বিভিন্ন আসবাবপত্রসহ নিত্যদিনের ব্যবহার্য বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরির কাজে বাঁশের রয়েছে বহুল ব্যবহার। বাঁশ চাষ পরিবেশবান্ধব ও বার্ষিক নবায়নযোগ্য। পরিপক্ব একটি বাঁশ প্রতি বছর নতুন শুট গজানোর মাধ্যমে নতুন বাঁশের জন্ম দেয়। তাই মূল উদ্ভিদটিকে ধ্বংস করা ছাড়াই স্বতন্ত্রভাবে এর থেকে প্রয়োজনীয় বাঁশ নিয়মিতভাবে সংগ্রহ করা যায়। বাঁশ জাতীয় উদ্ভিদ মাটি এবং পানি থেকে ধাতু এবং অন্যান্য বিষাক্ত পদার্থ নিজের শেকড়ের মধ্যে শোষণের মাধ্যমে বিশুদ্ধায়নের বিষয়ে খুব কার্যকরী বলে জানা যায়।
ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে বাঁশ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হচ্ছে। এছাড়া দেশের বাইরে রপ্তানি করার পরিকল্পনাও রয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। ঢাকা, কুমিল্লা, মানিকগঞ্জ, রাঙ্গামাটি, গোপালগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এখানকার ব্যবসায়ীরা ট্রাকে ট্রাকে বাঁশ সরবরাহ করেন। গত মঙ্গলবার সদর উপজেলার সালন্দর সিংপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ২ জন ব্যবসায়ী কয়েকজন শ্রমিক নিয়ে ট্রাকে বাঁশ তুলছেন। তাদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, এই বাঁশের ট্রাকটি গোপালগঞ্জ জেলায় পাঠাবেন। ট্রাকটিতে প্রায় লাখ টাকার বাঁশ পাঠানো হচ্ছে। প্রতি পিস বাঁশ বাগানে শ্রমিক দিয়ে ৩০-৩৫ টাকায় কেটে নেয়া হয়। পরে ভ্যানে করে ফাঁকা স্থানে ট্রাক ভিড়িয়ে সেখানে প্রতি পিস ৩-১০ টাকায় ট্রাকে উঠিয়ে দেন শ্রমিকরা। এতে করে হাজারো বেকার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে।
সদর উপজেলার নারগুণ ইউনিয়নের মণ্ডলপাড়া গ্রামের কৃষক তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বাঁশ বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বাগান থেকেই নিজ উদ্যোগে বাঁশ কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। এতে করে আমাদের তা বাজারে নিয়ে যেতে হচ্ছে না। ফলে আমরা বাড়ি থেকেই বাঁশ বিক্রি করতে পারছি।
সদর উপজেলার সালন্দর পাবনাপাড়া গ্রামের বাঁশ ব্যবসায়ী আমজাদ আলী ও সানোয়ার আলী জানান, এই ট্রাকটিতে প্রায় ১ লাখ টাকার বাঁশ ৪৫ হাজার টাকা ট্রাক ভাড়া করে গোপালগঞ্জে পাঠাচ্ছেন। অন্যান্য সময় ট্রাক ভাড়া ২০-২৫ হাজার টাকা হলেও করোনার বিধিনিষেধ থাকায় বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছে। বাগান থেকে বাঁশ ক্রয় করা, শ্রমিক দিয়ে সেগুলো কেটে নেয়া, ট্রাকে উঠানো এবং গোপালগঞ্জে পাঠানোর পর সবমিলে ১০-১৫ হাজার টাকা লাভ হতে পারে। তবে কোনো কোনো সময় লোকসানও গুনতে হয় বলে জানান তারা।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রামকৃষ্ণ বর্মণ বলেন, বাঁশবাগান ও ব্যবসায়ীদের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। এ ব্যবসার প্রসারে তাদের কোনো সহযোগিতা প্রয়োজন হলে এমনকি ব্যাংকঋণের ব্যাপারে যাবতীয় সাহায্য করবে জেলা প্রশাসন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়