৯৯৯-এ কলে ৮ কেজি গাঁজা উদ্ধার

আগের সংবাদ

রবীন্দ্রনাথ ও বাঁশির চিত্রকল্প

পরের সংবাদ

চট্টগ্রামে করোনা পরিস্থিতি : হাসপাতালে শয্যা ও আইসিইউ বেডের জন্য হাহাকার

প্রকাশিত: আগস্ট ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামে করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ও করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছেই। প্রতিদিন যে হারে করোনা রোগী বাড়ছে, তাতে পরিস্থিতি সামাল দেয়া যাচ্ছে না। সরকারি-বেসরকারি প্রায় সব হাসপাতালেই খালি নেই কোনো শয্যা। হাসপাতালগুলোতে শয্যা ও আইসিইউ বেডের জন্য হাহাকার। চট্টগ্রামে একদিনে নতুন করে করোনা শনাক্তের সংখ্যা আবার হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এ সময়ে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নতুন করে আরো ১৬ জন মারা গেছে। এ নিয়ে চট্টগ্রামে কোভিডে মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়াল। দফায় দফায় লকডাউন উঠিয়ে, গার্মেন্টসসহ কলকারখানা খোলা রাখায় এবং গণপরিবন চালু করে মানুষের চলাচলের সুযোগ তৈরি করায় সংক্রমণের হার বাড়ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। মানুষের মধ্যে অসচেতনতা সংক্রণের হার বৃদ্ধির কারণ বলছেন তারা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি মাসে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হবে।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, চলতি মাসের প্রথম ৪ দিনের শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ৪৬০ জন আর মারা গেছে ৪৭ জন। কয়েক মাস আগে করোনায় সংক্রমণ হার ছিল ১০ থেকে ১৩ শতাংশ। জুন মাসের সংক্রমণের হার ২০ থেকে ৩০ শতাংশ থাকলেও জুলাই-আগস্টে ৩৪ থেকে ৩৯ শতাংশের বেশি। বর্তমানে নগরের পাশাপাশি উপজেলায় বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। চিকিৎসকরা বলছেন, ভারতীয় ধরনে (ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট) চট্টগ্রামে সংক্রমণ হার বাড়ছে। একই সঙ্গে হাসপাতালেও রোগীর তিল ধারণের জায়গা নেই। হাসপাতালে শয্যার জন্য হাহাকার পড়ে গেছে। আইসিইউ শয্যা ও অক্সিজেন সিলিন্ডারের জন্য মানুষ অপেক্ষা করছে। স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন, টিকা গ্রহণ এবং যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে দেয়া প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন ল্যাবে ৩৬৭৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১২৮৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে নগরে ৮৪৪ জন। উপজেলায় ৪৪১ জন। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় সংক্রমণের হার ৩৪ দশমিক ৯২ শতাংশ। সরকারি হিসেবে চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ৮৬ হাজার ৪২৯ জনের শরীরে। এর মধ্যে নগরে ৬৪ হাজার ৪৫৯ জন। উপজেলায় ২১ হাজার ৯৭০ জন। করোনায় নতুন মৃত্যুর ১৬ জনের মধ্যে ৬ জন নগরে, ১০ জন উপজেলার। এর মধ্যে ১৪ জনই নারী, বাকি দুইজন পুরুষ। এ পর্যন্ত চট্টগ্রামে করোনায় মোট ১০১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৫৯৭ জন নগরের। উপজেলায় মারা গেছেন ৪১৩ জন। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্তদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শনাক্ত হয়েছে হাটহাজারী উপজেলায়, ৮০ জন। এছাড়া রাউজান উপজেলায় ৭৮ জন, সীতাকুণ্ডে ৫১ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ৫৩ জন এবং বোয়ালখালীতে ৪২ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গেছে।
চট্টগ্রামে গত মাসে করোনা সংক্রমণের হার ৩৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ। এই মাসে শনাক্ত হয় ২৩ হাজার ১৯৫ জন। এছাড়া মৃত্যুবরণ করেছে ২৬১ জন। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত মাসে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয় ৬৭ হাজার ৯১০টি। এর মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ২৩ হাজার ১৯৫ জন। এছাড়া মৃত্যুবরণ করেছেন ২৬১ জন। গত ৩০ জুলাই সবচেয়ে বেশি করোনা শনাক্ত হয় চট্টগ্রামে। এ দিন শনাক্ত হয় ১ হাজার ৪৬৬ জন। অন্যদিকে গত ২৭ জুলাই চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়, ১৮ জন।
করোনা চিকিৎসায় নিয়োজিত চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট মো. আবদুর রব বলেন, করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে সংক্রমণ বেশি ছড়াচ্ছে। প্রায় সব হাসপাতালেই রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ। করোনা প্রতিরোধে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে সবকিছুর ঊর্ধ্বে দরকার ব্যক্তি সচেতনতা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে সংক্রমণের লাগাম টানা কষ্টসাধ্য হবে। তিনি বলেন, কোনো ধরনের লক্ষণ দেখা গেলে, বিশেষ করে বয়স্ক রোগীদের শরীরে করোনার লক্ষণ দেখা গেলে কোনোভাবেই অবহেলা করা যাবে না। কারণ যে কোনো সময় অবস্থার অবনতি ঘটতে পারে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়