বিমানের পাইলটদের কর্মবিরতির হুমকি

আগের সংবাদ

ইভ্যালি হাওয়া, বিপাকে গ্রাহক

পরের সংবাদ

আংশিক পরীক্ষা ও মূল্যায়নের মাধ্যমেই ফলাফল : সহসা খুলছে না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

প্রকাশিত: জুলাই ১৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ১৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আংশিক পরীক্ষা, আংশিক মূল্যায়নের মাধ্যমে চলতি বছরের এসএসসি, এইচএসসি ও সমমানের ফলাফল দেয়া হবে। কোভিড পরিস্থিতি অনুকূলে এলে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা এবং ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এইচএসসির আংশিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে আয়োজিত ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, এসএসসি ও সমমান এবং এইচএসসি ও সমমান পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের আবশ্যিক বিষয়ের পরীক্ষা নেয়া হবে না। আবশ্যিক বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ গণিত, আইসিটি ও ধর্ম। সাবজেক্ট ম্যাপিং ও অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে এগুলোর মূল্যায়ন হবে। এর বাইরে মানবিক, বিজ্ঞান ও বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থী এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের নৈর্বাচনিক যেসব বিষয় রয়েছে সেগুলোর গ্রুপভিত্তিক তিনটি বিষয়ের (ছয় পত্রে) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া চতুর্থ বিষয়েরও পরীক্ষা নেয়া হবে না। অর্থাৎ বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক তিনটি গ্রুপের শিক্ষার্থীরা যার যার গ্রুপের বিশেষায়িত তিনটি করে সাবজেক্টের ওপর সীমিত পরিসরে, সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা দেবেন। পরীক্ষার সময় ও নম্বরও কমিয়ে আনা হবে।
সবমিলিয়ে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি এবং সমমানের পরীক্ষা সব বিষয়ে না নিয়ে শুধু গ্রুপভিত্তিক নৈর্বাচনিক তিন বিষয়ে নেয়া হবে। তবে পরীক্ষা নেয়ার সময় ও নম্বর অর্ধেক কমে যাবে। একই সঙ্গে প্রশ্নপত্র থেকে উত্তর দেয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন বাছাইয়ে বেশি সুযোগ পাবে। অর্থাৎ নমনীয়তা দেখানো হবে। প্রশ্নের ধরন ও পরীক্ষার সময় উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, অর্ধেক সময়ে পরীক্ষা নেয়া হবে অর্থাৎ তিন ঘণ্টার পরীক্ষা হবে দেড় ঘণ্টায়। আর প্রশ্নপত্র এখন যেভাবে বহুনির্বাচনী ও রচনামূলক হয়, সেভাবেই হবে। তবে এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন বাছাই করার ক্ষেত্রে বেশি সুযোগ পাবে। যেমন আগে যেখানে ১০টি প্রশ্নের মধ্যে থেকে ৮টির উত্তর দিতে হতো, সেখানে এখন হয়তো সেই ১০টি প্রশ্নই থাকবে। তবে তার মধ্যে তিনটি বা চারটির উত্তর দিতে বলা হতে পারে। অর্থাৎ শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন বেছে নেয়ার সুযোগ বেড়ে যাবে। আর প্রতি বিষয়ে মোট নম্বর ১০০ এর বদলে ৫০ নম্বর করা হবে। পরে এই ৫০ নম্বরকে ১০০ তে রূপান্তর করে পরীক্ষার ফল দেয়া হবে বলে জানান দীপু মনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বিবেচনায় ২০২১ সালের এসএসসি ও সমমান এবং এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের জন্য সংক্ষিপ্ত

পাঠ্যসূচির (সিলেবাস) ভিত্তিতে যথাক্রমে ৬০ দিন এবং ৮৪ দিন শ্রেণি কার্যক্রম শেষ করে পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু করোনার বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় গ্রুপভিত্তিক তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে হবে শিক্ষার্থীদের। এর মধ্যে এসএসসি ও সমমানের অ্যাসাইনমেন্ট ১৮ জুলাই থেকে দেয়া শুরু হবে। ১২ সপ্তাহে মোট ২৪টি অ্যাসাইনমেন্ট দেয়া হবে। তিনটি নৈর্বাচনিক বা নৈর্ব্যক্তিক বিষয়ে প্রতি সপ্তাহে ২টি করে মোট ২৪টি অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেবে শিক্ষার্থীরা। প্রতিটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে মোট আটটি করে অ্যাসাইনমেন্ট করতে হবে। এর মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি সম্পন্ন হবে। এছাড়া এইচএসসি ও সমমানের অ্যাসাইনমেন্ট ২৬ জুলাই শুরু হবে। ওই স্তরের শিক্ষার্থীদের ১৫ সপ্তাহে মোট ৩০টি অ্যাসাইনমেন্ট দেয়া হবে। তাদেরও গ্রুপভিত্তিক তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে মোট ছয়টি পত্রে (প্রথমপত্র ও দ্বিতীয়পত্র) এই অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে হবে। প্রতি পত্রে পাঁচটি অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে হবে। তাদেরও সপ্তাহে দুটি করে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে হবে। এভাবে তাদেরও সংক্ষিপ্ত সিলেবাস সম্পন্ন হবে। বাংলা, ইংরেজিসহ আবশ্যিক বিষয়ে এবং চতুর্থ বিষয়ে কোনো অ্যাসাইনমেন্ট করতে হবে না শিক্ষার্থীদের। আবশ্যিক বিষয়ের নম্বর জেএসসি, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ‘বিষয় ম্যাপিং’ করে নম্বর নির্ধারণ করা হবে। অর্থাৎ শুধু নৈর্বাচনিক তিনটি বিষয়ের মূল্যায়ন হবে।
শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, যদি পরীক্ষা নেয়া সম্ভব না হয়, তাহলে অ্যাসাইনমেন্ট ও ‘বিষয় ম্যাপিংয়ের’ মাধ্যমে অথবা শুধু ‘বিষয় ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে’ মূল্যায়ন হতে পারে। সেটি পরে জানানো হবে। মনোযোগ দিয়ে অ্যাসাইনমেন্ট সম্পন্ন করে শিক্ষণ ফল অর্জনের জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, এসব অ্যাসাইনমেন্ট ভালো করে করতে পারলে শিক্ষার্থী ভালো করে পরীক্ষা দিতে পারবে এবং ভালো ফল করতে পারবে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে কবে : করোনা সংক্রমণের হার কিছুটা কমে এলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হবে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, গত দেড় বছরের মধ্যে যাদের স্কুলে ভর্তি হওয়ার কথা ছিল হতে পারেনি, তাদের জন্যও আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। কীভাবে এ ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হবে সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে চাই না বলে দীর্ঘদিন স্কুল-কলেজ বন্ধ রেখেছি। এ জন্য বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে টেলিভিশনে ক্লাস সম্প্রচার, অনলাইনে ক্লাস ও অ্যাসাইনমেন্ট কাজ দেয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সিলেবাস শেষ করা হচ্ছে। বিকল্প কার্যক্রমে যারা যুক্ত হতে পারেনি তাদের নিয়েও ভাবা হচ্ছে। এ জন্য বেশ কিছু পরিকল্পনা হাতে নেয়া হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরি, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, মাদ্রাসা ও কারিগরি বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ গোলাম ফারুক, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়