মাইনুল হোসেন খান নিখিল : রেশনিং সিস্টেমে বিনামূল্যে খাবার দেবে যুবলীগ

আগের সংবাদ

বিশ্ব মিডিয়ার চোখে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’

পরের সংবাদ

কুর্তা টপসে সারাবেলা

প্রকাশিত: জুলাই ১১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ১১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

করছেন। টপে হাতার বদলে ফিতার ব্যবহারও দেখা যাচ্ছে। গলায় ও হাতার ডিজাইনে নতুনত্ব আনা হয়েছে অনেক দোকানে। আবার একটু ভিন্ন রকম লুক আনতে টপের ওপর স্ট্ক্রিন প্রিন্ট, ছাপা নকশা হাতের কাজ এমব্রয়ডারি থাকছে।
বিভিন্ন কাটিং ও প্যাটার্নে তৈরি হচ্ছে টপস। কখনও গলায়, কখনও হাতা অথবা বটম লাইনে আসছে বৈচিত্র্য। টপসের ক্ষেত্রে সিল্ক, সাটিং, জর্জেট, সুতি কাপড়ের ব্যবহার বেশি হচ্ছে। বেসিক প্যাটার্ন ও কামিজ কাটের মধ্যেও বৈচিত্র্য আনা হচ্ছে। টপসগুলো খুব বেশি ফিটিংভাবে তৈরি না করে একটু ঢিলেঢালা রাখা হচ্ছে। বটমে ঝিকমিকসহ বিভিন্ন শেপ করা হচ্ছে। কুচি, প্লিট, ইলাস্টিক, বেল্ট, ইয়োক, পুঁতি- চুমকি, প্যাচওয়ার্কসহ বিভিন্ন অনুষঙ্গ ব্যবহারে যোগ করা হচ্ছে নতুনত্ব।
টপস ছাড়াও কুর্তি, সিঙ্গেল লং কামিজের প্যাটার্নেও এসেছে নতুনত্ব। কুর্তি, টপসে সামনে বেশি ঘের, পেছনে কম বা সামনে দৈর্ঘ্য থাকছে কম, পেছনে লম্বা ঘের নেমে যাচ্ছে গোড়ালি পর্যন্ত। কিছু কুর্তিতে নানা ডিজাইনের কলার ব্যবহারে নতুনত্ব আনা হচ্ছে। তার সঙ্গে রাফ অ্যান্ড টাফ রূপ দিতে জুড়ে দেয়া হচ্ছে নকশাদার কটি। গতানুগতিক জ্যামিতিক, ফ্লোরাল মোটিফেও দেখা যাবে বৈচিত্র্য।

আধুনিক পোশাক হিসেবে পঞ্চ, কেপের চাহিদা বেড়েছে বহুগুণ। জিনস-টপস বা ফতুয়া-স্কার্ট যে কোনো ওয়েস্টার্ন পোশাকের সঙ্গে অনায়াসে পঞ্চ পরা যায়। নতুন ধারায় সোয়ান, আবায়সহ নানা ডিজাইন যোগ হয়েছে পঞ্চে।
আগে শুধু গোল গলার পঞ্চ তৈরি হলেও এখন বিভিন্ন ধরনের নেকলাইন যেমন, রাউন্ড, বোট নেক, হল্টার নেট, ক্রাওল নেক, স্কয়ার, ভি-নেক লাইনের পঞ্চ পাওয়া যাচ্ছে। ইদানীং আবার পঞ্চের দু’পাশের কিছু অংশ সেলাই করে স্পিংভের মতো দুটো আলাদা কাফ জুড়ে দেয়া হচ্ছে। সামনে কাটা পঞ্চ, কেপে জুড়ে দেয়া হচ্ছে বোতাম, ফিতা বা স্টোনের ব্রোঞ্চ।
বিভিন্ন শেপের পঞ্চে নতুনত্ব আনতে সামনের দিকে কেটে স্কার্ফ স্টাইল অথবা চারকোণার বদলে গোল শেপ দেয়া হচ্ছে। উল, ক্রচেট, সিল্ক, জর্জেট, খাদি বা যে কোনো ধরনের কাপড় দিয়ে পঞ্চ, কেপ তৈরি করা হচ্ছে।
হালফ্যাশনে কুর্তি, কেপ, সিঙ্গেল কামিজ, টিউনিক, টপসে ফ্লেয়ার এবং ফ্রিলের ব্যবহার বেড়েছে। প্লিট বা কুচি এসব পোশাকে টপ, বটম, সাইডে নানাভাবে জুড়ে দেয়া হয়েছে। শুধু টপসই নয়, যে কোনো পোশাকেই এখন ডিজাইনাররা রাফলস ব্যবহার করছেন।
কথা হয় জেন্টল পার্কেও চিফ ডিজাইনার ও চেয়ারম্যান শাহাদৎ চৌধুরী বাবু’র সঙ্গে। তরুণীদের ফিউশন পোশাকের ভেরিয়েশন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘গতানুগতিক পোশাকেই এখন প্যাটার্ন, বটম, নেকলাইন বদলে আনা হচ্ছে নতুনত্ব।

শর্ট থেকে শুরু করে সেমি লং এমনকি লং টপসেও বয়স ও স্বাচ্ছন্দ্য মাথায় রেখেই ফেব্রিকস ও ডিজাইনের সমন্বয় করা হয়েছে। প্যাটার্ন ও কাটছাঁটে নতুনত্ব থাকছে। গাঢ় ও হালকা উভয় শেডের রং ব্যবহার হয়েছে। বলা যায়, টপস, কুর্তি, সিঙ্গেল কামিজ, পঞ্চ এগুলো কিন্তু নতুন নয়। তবে নতুন রূপে তৈরি হচ্ছে। এ পোশকগুলোতে সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন আনা হচ্ছে প্যাটার্নে। প্লেইন লম্বা শেপের বদলে সিঙ্গেল কামিজ এখন তিনকোনা, একপাশে শর্ট একপাশে লম্বা, সামনের দিকটায় কোনাকুনি কাটা এমন নানা আঙ্গিকে কামিজ তৈরি হচ্ছে। এমন নকশায় করা হচ্ছে কুর্তিও। প্লিট বসানো কুর্তিও তৈরি হচ্ছে। কুর্তিতে এখন ৭০-৮০ দশকের ডিজাইনগুলো ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। টপস, কুর্তিতে কয়েক লেয়ার কাপড় দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে বিভিন্ন নকশা।’
টপস বা কুর্তা যা-ই হোক, নিচের অংশে কাটে নতুনত্বের প্রয়াস চোখে পড়ার মতো। গোলাকার, নৌকা, ভি ইত্যাদি পুরনো কাটেও বৈচিত্র্য এসেছে। টপস-কুর্তার নিচের অংশে অর্থাৎ বটম লাইনে লেয়ারিং নকশা দেখা যাচ্ছে। সামনের অংশের চেয়ে পেছনের বেশ খানিকটা ঝুল নামানো কাটিংও আছে। কিছু কুর্তিতে বেশ খানিকটা ঘের দিয়ে তাতে অসমঞ্জস্য কাটিং ব্যবহার করা হয়েছে। ঘের ছাড়া টপস বা কাফতান কাটের টপসও মিলবে।

জেন্টল পার্ক, ক্যাটস আই, এক্সট্যাসি, সেইলর, আইকনিক ফ্যাশন গ্যারাজ, লা-রিভ, ইয়োলো বরাবরই সমকালীন ফ্যাশন প্যাটার্ন ও কালার অনুসরণ করে। এসব ফ্যাশন ব্র্যান্ডে নতুন সংগ্রহে টপস, কেপ বা কুর্তিতে কাট-প্যাটার্নের নতুনত্বের পাশাপাশি হালকা এম্ব্রয়ডারি, প্রিন্টের ভ্যালু অ্যাডিশন থাকছে।
হাল ফ্যাশন আর এই আবহাওয়ায় ষোলআনা আরাম পেতে বাছতে পারেন ট্রেন্ডি টপস আর কুর্তা। কাটিং আর প্যাটার্নও আবহাওয়াবান্ধব। ফ্যাশনেবল এসব টপস সব পরিবেশেই মানানসই। গরমকালে অন্যতম জনপ্রিয় হলো টপস। এই টপ জাতীয় পোশাক সাধারণত বিশেষ লম্বা হয় না। বেশিরভাগই কোমর পর্যন্ত। তবে ধরনভেদে এটি বিভিন্ন রকম হতে পারে। অনেক টপ অবশ্য হাঁটু পর্যন্তও হয়, এদের টিউনিক টপ বলে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের টপের দেখা মেলে বাজারে। এর মধ্যে শার্ট কাটিং টপস বেশ জনপ্রিয়। বিভিন্ন ধরনের প্যান্ট বা লেগিংসের সঙ্গে এ ধরনের শার্ট বেশ মানানসই।
যেসব টপ সাধারণত কোমর পর্যন্ত হয়, সেগুলো স্কার্টের সঙ্গেও মানিয়ে যায়। গরমে যেহেতু টপ বেশ আরামদায়ক একটি পোশাক এবং তার তরুণীদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে তাই বেশ কয়েক বছর ধরে হাল ফ্যাশনের সঙ্গে তাল মেলাতে বাংলাদেশের অধিকাংশ ফ্যাশন হাউস টপ নিয়ে কাজ করছে। বিভিন্ন কাটিংয়ের টপ আজকাল বাজারে দেখতে পাওয়া যায়, এর মধ্যে পুরানো ফতুয়া বা কুর্তি স্টাইলটি বেশ পুরোনো হলেও এখনও সমানভাবে জনপ্রিয়। তবে আজকাল টপের বেশ কিছু নতুন সংযোজন দেখা যায়, যার মধ্যে রয়েছে ক্রপ টপ, কাফতান কাটের টপ। এ ধরনের টপ সাধারণত লম্বায় বেশি নয়, হাফশার্ট বা ব্লাউজ ধরনের হয়ে থাকে। পুরোনোর সঙ্গে নতুন কাটিংয়ের সংযোজন করে ও নকশায় এসেছে বৈচিত্র্য। গরমের কথা মাথায় রেখেই বাজারে গরম উপযোগী কাপড়ে করেই করা হচ্ছে টপস।

এই টপসের ধারণাটি যদিও আমাদের দেশে এসেছে পশ্চিমা পোশাকের প্রভাব থেকে, তবে বাঙালি নারী এটিকে নিজের মতো বানিয়ে নিয়েছেন। অনেক সময় শাড়ির সঙ্গে ব্লাউজের পরিবর্তেও পরা হচ্ছে টপ। অনেকে আবার একটি নতুন লুক আনতে টপের ওপরে পরছেন কটি, স্কার্ফ বা ওড়না। রানী ভিক্টোরিয়ার আমলের বিশেষ করে এই বাংলায় ব্লাউজ পরার প্রচলন ছিল না। ইংরেজ আমলে ভারতবর্ষে ব্যাপকভাবে ব্লাউজের ব্যবহার শুরু হয়।
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি যখন উপমহাদেশে ব্যবসা করতে এলো তখন তাদের সঙ্গে যে ইংরেজ মেয়েরাও এ দেশে এসেছিল তাদের কাছ থেকেই বাঙালি নারী প্রথম শেখে ব্লাউজ বা এই টপের ব্যবহার। ইংরেজ মেয়েরা তখন পরত ছেলেদের শার্টের মতো টপ আর নিচে পরত লং স্কার্ট। সেই থেকেই ভারতবর্ষের নারীদের মধ্যে তাদের প্রতি আগ্রহ দেখা যায়। আর আজকাল যেহেতু ফ্যাশন জগতে বিশ্বায়নের প্রভাব ব্যাপক সেখানে প্রতিদিনই যোগ হচ্ছে নিত্যনতুন ধরনের টপের ধরন ও ব্যবহার। অফ শোল্ডার টপ, বুক বা কোমরের কাছে একটু আঁটসাঁট টপও বেশ দেখতে পাওয়া যায়। হাতা থাকা বা না থাকার ব্যাপারটি অবশ্য আজকাল ঐচ্ছিক। অনেকেই আজকাল হাতা ছাড়া টপ পরতে পছন্দ
পোশাক ও ছবি : জেন্টল পার্ক

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়