কাগজ ডেস্ক : করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় সরকার কর্তৃক হতদরিদ্র মানুষের জন্য বরাদ্দ চাল নিয়ে অনিয়মের খবর পাওয়া গেছে। নড়াইলের লোহাগড়ায় এক ডিলারকে আটক করা হয়েছে, কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় জব্দ করা ৩০০ বস্তা চাল নিয়ে ধূম্রজাল তৈরি হয়েছে এবং কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলা করেছেন আদালত। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
কক্সবাজার : জেলার পেকুয়া উপজেলার টৈটং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীর স্বাক্ষরে তোলা ৩০০ বস্তা চাল বারবাকিয়া ইউনিয়ন থেকে জব্দ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গত রবিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার বারবাকিয়া হোসনে আরা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ভবন থেকে চালের বস্তাগুলো জব্দ করা হয়। তবে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী বলছেন, ইউএনও তার কাছ থেকে একটি স্বাক্ষর নিয়েছেন। এর বাইরে তিনি কিছুই জানেন না।
পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাঈকা সাহাদত জানান, চাল জব্দের বিষয়ে তিনি অবগত নন। যদি চালগুলো সরকারি হয়ে থাকে, তাহলে সেই চাল তিনি ইউএনও হিসেবে নিয়ম মেনে বরাদ্দ দিয়েছেন কি-না সেটাই দেখার বিষয়।
জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, বিষয়টা আমিও শুনেছি। তবে চালগুলো কিসের এবং কত কেজি সেটা এখনো নিশ্চিত নয়। পেকুয়া-চকরিয়ার ত্রাণের বিষয়টি সমন্বয় করেন এডিসি (রাজস্ব)। ওনাকে ঘটনাস্থলে গিয়ে তা খতিয়ে দেখতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
নড়াইল ও লোহাগড়া (নড়াইল) : লোহাগড়ায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজি দরের চাল কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগে আশরাফ আলী নামে এক ডিলারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত রবিবার রাতে লোহাগড়া থানা পুলিশ তাকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। আশরাফ আলীর বাড়ি উপজেলার আড়িয়ারা গ্রামে এবং তিনি জয়পুর ইউনিয়ন খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চালের ডিলার।
জানা গেছে, ১৬ এপ্রিল ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে কালোবাজারে বিক্রি করা ৫০ কেজি চাল জব্দ করে। এ সময় তিন ক্রেতাকে আটক করে প্রত্যেকের কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা আদায় করে। তবে আশরাফ আলী কৌশলে পালিয়ে যান। পরে তার নামে লোহাগড়া থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়। রাতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মিলটন কুমার দেবদাস অভিযান চালিয়ে তাকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেন। লোহগড়া থানার ওসি সৈয়দ আশিকুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কুমারখালী (কুষ্টিয়া) : ‘কুমারখালীতে ইউপি সদস্যের বাড়ি থেকে সরকারি চাল কিনে খাচ্ছে হতদরিদ্ররা’ এমন শিরোনামে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদটি আদালতের দৃষ্টিগোচর হওয়ায় ওই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে স্বপ্রণোদিত মামলা করেছেন আদালত। বিষয়টি তদন্ত করে আগামী ২০ জুনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কুমারখালী থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতের (কুমারখালী) বিচারক সেলিনা খাতুন এই মামলা দায়ের করেন।