ডা. এম ইয়াছিন আলী
আমাদের মেরুদণ্ডকে মেডিকেল পরিভাষায় কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে যেমন- ঘাড়ের অংশটুকু সারভাইক্যাল স্পাইন, পিঠের অংশকে থোরাসিক স্পাইন, কোমরের অংশকে লাম্বার স্পাইন ও কোমরের নিচের অংশকে সেকরাল স্পাইন বলে। আমাদের মেরুদণ্ড সবচেয়ে বেশি নড়াচড়া হয়। দুটি অংশে ঘাড় বা সারভাইক্যাল স্পাইন ও কোমর বা লাম্বার স্পাইন।
যেহেতু লাম্বার স্পাইনে মুভমেন্ট বা নড়াচড়া বেশি হয়, এর ফলে মেরুদণ্ডের এই অংশে হাড়ের ক্ষয়ও বেশি হয়ে থাকে। কোমরের মেরুদণ্ডের এই ক্ষয় হয়ে যাওয়াকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় লাম্বার স্পনডাইলোসিস বলা হয়।
কাদের বেশি হয়?
এটা চল্লিশোর্ধ্ব নারী-পুরুষ উভয়েরই হয়, তবে মেয়েরা এই রোগে বেশি ভুগে থাকে কারণ হরমোনজনিত কারণে চল্লিশের পর মেয়েদের হাড়ের ক্ষয় দ্রুত হয়ে থাকে।
লক্ষণসমূহ :
১. কোমর ব্যথা;
২. ব্যথা কোমর থেকে পায়ের দিকে ছড়িয়ে যায়;
৩. পায়ে ঝিন ঝিন অবশ অবশ অনুভূতি হয়;
৪. পায়ের শক্তি কমে আসে;
৫. অনেক ক্ষেত্রে পায়ে জ্বালাপোড়া অনুভব করেন;
রোগ নির্ণয় :
এক্ষেত্রে বয়স পেশা বা কাজের ধরন ও রোগের ইতিহাসে রোগ নির্ণয়ে সাহায্য করে পাশাপাশি, লাম্বার স্পাইনের এক্সরে ও বোন মিনারেল ডেনগ্রিটি দেখার প্রয়োজন পড়ে।
চিকিৎস ও করণীয় :
এই রোগের যে সমস্যা দেখা যায় তা হলো কোমরের মেরুদণ্ডের হাড় কিছুটা ক্ষয় হয় এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে কশেরুকার প্রান্তগুলোতে নতুন হাড়ের সৃষ্টি হয়। যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় অস্টিওফাইট বলে এবং মেরুদণ্ডের দুই কশেরুকার মধ্যবর্তী স্থানের দূরত্ব বা ডিক্স স্পেস কমে যায়। এই দূরত্ব বাড়ানোই হলো চিকিৎসা যার জন্য চাই সঠিক ‘ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা’ এবং কিছু থেরাপিউটিক বা চিকিৎসা সংক্রান্ত ব্যায়াম যা পরবর্তী সময়ে ডিক্স স্পেস কমে যাওয়া প্রতিরোধ করবে।
কনসালটেন্ট ও বিভাগীয় প্রধান
ফিজিওথেরাপি বিভাগ
ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল,
ধানমন্ডি, ঢাকা।