×

রাজনীতি

 সুনামগঞ্জে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলায় বামদল ও সংগঠনগুলোর তীব্র নিন্দা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২১, ০৭:১৯ পিএম

 সুনামগঞ্জে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলায় বামদল ও সংগঠনগুলোর তীব্র নিন্দা

ফাইল ছবি

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে সংখ্যালঘুদের ওপর হেফাজতীদের আক্রমণ, ভাংচুর, লুটপাটের ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং এই আক্রমণের উস্কানীদাতা হেফাজতী নেতা মুমিনুল হক সহ সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতার ও যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে গণতান্ত্রিক বাম জোট, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পাটিসহ বামপন্থী দলগুলো।

বৃহষ্পতিবার (১৮ মার্চ) পৃথক পৃথক বিবৃতিতে দলগুলো নোয়াগাঁও গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে ধর্মান্ধ মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী হেফাজতে ইসলামীর সন্ত্রাসী হামলায় ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণ, দায়ীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।

এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন, বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ (মার্কসবাদী)’র সাধারণ সম্পাদক মোবিনুল হায়দার চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।

তারা বলেন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করে দেশ স্বাধীন করলেও স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তির আগ মুহূর্তে হিন্দু ধর্মালম্বীদের গ্রামে আক্রমণ প্রমাণ করে গত পঞ্চাশ বছরে শাসকশ্রেণী অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র কায়েম থেকে অনেক পিছিয়ে আছে। ক্ষমতাসীন শ্রেণীর একদল সাম্প্রদায়িক জামাতকে আরেকদল হেফাজতকে প্রশ্রয় দিয়ে দেশে সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতিকে আস্কারা দিচ্ছে। শুধুমাত্র ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার হেফাজতকে তোষামদ করে তাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী রাজনীতিকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। তারা বলেন, কক্সবাজারের রামোতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ওপর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নাসিরনগরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলা, ধর্ম অবমাননার নামে লালমনিরহাটে মানুষ মারার বিচার না হওয়ায় মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক শক্তি একের পর এক অপকর্ম করার সুযোগ পাচ্ছে।

বাংলাদেশ ওয়াকার্স পার্টি বলেছে, মুমিনুল হকের বিরুদ্ধে ওই গ্রামের এক যুবক ফেসবুকে কটুক্তি করায় তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও, দাঙ্গাকারি হেফাজতীদের বিরুদ্ধে পুলিশ এ যাবৎ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। বরং পুলিশের বক্তব্যে হেফাজতীদের আক্রমণের সাফাই গাওয়া হয়েছে।

দলটি বলেছে, এই মুমিনুল হক বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙ্গে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেয়ার হুমকি দিলেও তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অথবা প্রচলিত আইনে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। একই সময় মুজিববর্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা আগমন নিয়ে বিভিন্ন সংগঠনের কর্মসূচি গ্রহণের ব্যাপারে পুলিশ কর্তৃপক্ষ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করলেও পুলিশ মুমিনুল হকসহ হেফাজতী নেতারা বিভিন্ন সভা সমাবেশ, ওয়াজ মাহফিলে যে সাম্প্রদায়িক ও ধর্মীয় উস্কানিমূলক বক্তৃতা দিচ্ছে তাকে আমলে নিচ্ছে না। সরকার ও পুলিশ কর্তৃপক্ষের এই আচরণ চরম বৈপরিত্যমূলক। এ ঘটনায় কর্তৃপক্ষের নিশ্চুপতা দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশের অবনতি ঘটাবে বলে মন্তব্য করেছে দলটি।

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং দায়ীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। তিনি বলেন, একদিকে সরকার ঢাক ঢোল বাজিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করছে অন্যদিকে হিন্দু সম্প্রদায়সহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও আদিবাসীদের উপর নির্যাতন, সম্পত্তি দখল চলছে পাল্লা দিয়ে।

খালেকুজ্জামান বলেন, স্বাধীনতাত্তোর শাসক শ্রেণি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীতে দেশ পরিচালনা করায় আমাদের এ হাল দাড়িয়েছে। এখানে শাসক বুর্জোয়া শ্রেণির একাংশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ব্যবসা অপর অংশ ধর্মের ব্যবসা শুরু করছে। খালেকুজ্জামান মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা শোষণমুক্ত ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক সাম্যের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সকল বাম-প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App