×

রাজনীতি

উপজেলার ভোটযুদ্ধ শুরু

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৪, ০৮:২৪ এএম

উপজেলার ভোটযুদ্ধ শুরু

ছবি: সংগৃহীত

উৎসবের পাশাপাশি উৎকণ্ঠার মধ্যে প্রথম ধাপে ১৪০টি উপজেলা পরিষদের ভোটগ্রহণ চলছে। বুধবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়েছে, বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতীহীনভাবে এ ভোট গ্রহণ চলবে। এ নির্বাচন ঘিরে মাঠে যেমন বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ; তেমনি রয়েছে উত্তেজনা-উদ্বেগও। বিভিন্ন স্থানে সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ব্যানার ফেস্টুনে ছিড়ে ফেলাসহ সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। 

এসবের মধ্যেই ভোটের সব প্রস্তুতি শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রথম ধাপে ১৫২টি উপজেলার তফসিল ঘোষণার পর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা , স্থগিত ও ধাপ পরিবর্তনের কারণে কিছু বাদ দেয়ার পর আজ ১৪০টি উপজেলায় ভোট হবে বলে জানিয়েছে ইসি। 

ইতোমধ্যে প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৬ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৭ জন চেয়ারম্যান, ৯ জন ভাইস চেয়ারম্যান ও ১০ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রয়েছেন। 

এদিকে গতকাল মঙ্গলবার রিটানিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মালামাল কেন্দ্রে কেন্দ্রে চলে গেছে। এ নির্বাচনে দুর্গম এলাকার ৪২৪ কেন্দ্রে গতকাল ব্যালট পেপার পাঠানো হয়। আর ১১ হাজার ১৩২ কেন্দ্রে ব্যালট যাবে ভোটের দিন অর্থাৎ আজ সকালে। এ ধাপে মোট ২২টি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএমে) ব্যবহার করা হবে। এদিকে ভোট অবাধ ও নিরপেক্ষ করার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। 

তিনি বলেন, মন্ত্রী-এমপিদের ভোটে প্রভাব বিস্তার প্রতিরোধে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে। কোনো অনিয়ম যাতে না হয়; সে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে নির্বাচন ভবনে প্রথম ধাপের উপজেলা ভোট উপলক্ষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। 

সিইসি বলেন, বিশেষ করে নির্বাচনের দিন কেউ যেন ভোটকেন্দ্রে অনুপ্রবেশ করতে না পারে এবং সেখানে যেন অনিয়ম না হয়; সে বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আজ ভোটের দিন আমরা সতর্ক থাকবো, কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরিং করব। অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। যাতে নির্বাচনটা অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়। আইনশৃঙ্খলা সঠিকভাবে তদারকিতে কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচন ভবনে পরিস্থিতি মনিটরিং করা হবে। 

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন ও টহলের সুবিধার্থে ধাপে ধাপে ভোটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোনো অভিযোগ এলে খতিয়ে দেখা হচ্ছে জানিয়ে সিইসি বলেন, তদন্ত করে কারো কারো প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। সংসদ সদস্য, মন্ত্রীদের অনেককে নিবৃত করতে পেরেছি। হয় তো অনেকেই এলাকায় আছেন। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে। 

তবে স্থানীয় নির্বাচনে উৎসাহ, উদ্দীপনা ও উত্তেজনা বেশি থাকায় কমিশনও সতর্ক রয়েছে। তিনি বলেন, স্থানীয়ভাবে এসব বেশি হয়ে থাকে। এগুলো যেন না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকি যাতে উত্তেজনা থেকে সংঘর্ষ, সহিংসতা না হয়। 

সিইসি জানান, এটা কোনোভাবে নিয়ম রক্ষার ভোট নয়। তিনি বলেন, কে কোন দল করে আমরা জানি না। নির্বাচন আয়োজন করা আমাদের কাজ। কে দাঁড়াল, কে দাঁড়াল না, আমাদের কাছে দেখার বিষয় নয়। আমরা দেখছি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। ভোট অবাধ হচ্ছে কিনা তা দেখব। 

তিনি বলেন, সাধারণ প্রতিটি কেন্দ্রে ১৭ জন করে এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮ জন; আর পার্বত্য এলাকায় সাধারণ কেন্দ্রে ১৯ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে অন্তত ২১ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সদস্য নিয়োজিত থাকবে। ইসি সূত্র জানিয়েছে, আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ১৪১ জন বিচারিক ম্যাজিট্রেটসহ প্রায় ৫শত ম্যাজিট্রেট মাঠে কাজ করছেন। 

আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রথম ধাপে ৪১৮ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া ১ লাখ ৫৯ হাজার ৮৭৪ জন আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী সদস্য মোতায়েন করেছে । সব মিলিয়ে প্রায় ৫ লাখ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ নির্বাচনে নিয়োগ করা হয়েছে। এই ধাপে মোট ১ হাজার ৬৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫৭০, ভাইস চেয়ারম্যান ৬২৫ এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৪০ জন প্রার্থী রয়েছেন। 

উল্লেখ্য, দেশের মোট ৪৯৫টি উপজেলার মধ্যে বর্তমানে নির্বাচনযোগ্য উপজেলা রয়েছে ৪৮৪টি। চার ধাপে ৮ মে থেকে ৫ জুন পর্যন্ত ২৮ দিনে পর্যায়ক্রমে এসব উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য এর মধ্যে ইসির সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণের জন্য প্রায় ৭ লাখ কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষিত করেছে নির্বাচন কমিশন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App