বাংলাদেশে নিযুক্ত কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সাথে প্রথম সাক্ষাত করেছেন। 

বুধবার (২০ মার্চ) দুপুরে ঢাকার সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ বৈঠকে অর্থনৈতিক কূটনীতির বিষগুলো প্রাধান্য পায়।

বিশেষ করে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধি, কোরিয়া পরিচালিত প্রকল্প, চুক্তি, প্রযুক্তি বিনিময়সহ দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রচুর বাংলাদেশি পণ্যকে অগ্রাধিকারমূলক বাজার প্রবেশে অনুমতিদান ও দু'দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশকে সাতটি বিলাসবহুল গাড়ি প্রদানের জন্য দক্ষিণ কোরিয়া সরকারকে ধন্যবাদ জানান। 

ড. হাছান বলেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তির (ইপিএ) মতো দ্বিপাক্ষিক উপকরণকে সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে। বাংলাদেশের 'এলডিসি' থেকে উত্তরণের পর ধারাবাহিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য নতুন ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির গুরুত্ব নিয়েও আলোচনা করেন মন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী দক্ষিণ কোরিয়াকে বাংলাদেশে অন্যতম প্রধান বিদেশি বিনিয়োগকারী হিসেবে বর্ণনা করে দেশের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির ওপর আলোকপাত করেন এবং হালকা প্রকৌশল, ইলেকট্রনিক্স, হোম অ্যাপ্লায়েন্সেস, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিসহ নানা ক্ষেত্রে আরো বিনিয়োগকে স্বাগত জানান।

চট্টগ্রামে মেট্রোরেল প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শুরু করার জন্য হাছান মাহমুদ দক্ষিণ কোরিয়ার আন্তুর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা কোইকাকে ধন্যবাদ জানান ও প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল দ্রুত সরবরাহের ব্যবস্থার অনুরোধ করেন।

কোরিয়ায় জনশক্তি রপ্তানি নিয়ে আলোচনায় কোরিয়ার এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেম (ইপিএস) স্কিমের অধীনে বাংলাদেশি দক্ষ কর্মীদের জন্য কোটা বাড়ানোর জন্য কোরিয়াকে ধন্যবাদ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ সময় কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত জানান, ভাষা শেখার সমস্যার কারণে বাংলাদেশ গত বছর ১০ হাজার ২০০ জনের কোটা পূরণ করতে পারেনি। তবে বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বিষয়টির সমাধানে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশে দুইটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) মনোনীত করেছে, যেখানে ভাষা ও প্রযুক্তির প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিতে পারবেন কোরিয়ার প্রশিক্ষকরা।

পাশাপাশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রদূত বৈঠকে ম্যান-মেইড ফাইবার (MMF) এবং দক্ষতা এবং প্রযুক্তি বিনিময়, দ্বৈত কর পরিহার, বিমান পরিষেবা চুক্তির সংশোধন, উচ্চ-পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক সফর এবং সরাসরি ও যৌথ  বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশের শিল্পখাত বিশেষ করে তৈরি পোষাকশিল্পের আরও আধুনিকায়নের মাধ্যমে দু'দেশের সম্পর্ককে আরো এগিয়ে নেয়ার বিষয়ে ঐক্যমত প্রকাশ করেন।