×

রাজনীতি

রিজভী

সরকার দেশে জঙ্গলের শাসন চালাচ্ছে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৪, ০৪:৪৭ পিএম

সরকার দেশে জঙ্গলের শাসন চালাচ্ছে

সরকার দেশে ‘জঙ্গলের শাসন’ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, বর্তমানে প্রত্যেকটি কারাগার হচ্ছে শেখ হাসিনার বন্দিশালা, এখানে আইন-কানুন কোনো কিছুর দরকার নেই। তিনি যদি মনে করেন তাকে কারাগারে রাখতে চান সে কারাগারে থাকবে তার শাসনের বিরুদ্ধে কথা বললেই, তার দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কেউ উচ্চারণ করলে, তাকে কারাগারে থাকতে হবে।

শনিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের-নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।

এদেশে জঙ্গলের শাসন চলছে… বন-জঙ্গলের আইনে দেশ চলছে। এভাবে দেশ চলতে পারে না। এই বন-জঙ্গলের আইন, এই দুঃশাসন শিকড়সহ উপড়ে ফেলতে হবে। এজন্য সবাইকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিতে হবে।

গত ২৮ অক্টোবর নয়া পল্টনে বিএনপি মহাসমাবেশ পুলিশ হামলায় পন্ড হওয়ার পর দলের মহাসচিবসহ নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, ‘‘এক দেশে দুই আইন। একই মামলায় মহাসচিবসহ শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার হয়েছেন।

আরো পড়ুন: কারাবন্দী নবীর বাসায় বিএনপি নেতারা

কি দেখা গেলো? শাহজাহান ওমর তিনি তলে তলে হাসিনার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তিনি কারাগার থেকে বেরিয়ে এসে আওয়ামী লীগের টিকেট নিয়ে এমপি হয়েছেন। আর একই মামলায় কারাগারেই থাকলেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ বিএনপির নেতারা। এই হচ্ছে আইন, এই হচ্ছে কানুন।

নয়া পল্টনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের উদ্যোগে দলের শ্রমিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক হুমায়ুন কবির খানের মুক্তির দাবি এই সমাবেশে হয়।

‘নিত্যপণ্যে দাম বাড়াচ্ছে কারা?’

রিজভী বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়াচ্ছে কারা? সিন্ডিকেট করছে কারা? আপনার সাবেক বানিজ্য মন্ত্রীই (টিপু মুন্সি) তো বলেছিলেন, সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কিছু করা যাবে না। প্রধানমন্ত্রীকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিলেন বানিজ্যমন্ত্রী এটা বলেছেন… প্রধানমন্ত্রী এর কোনো সঠিক জবাব দিতে পারেননি।

সিন্ডিকেটে তো আপনাদেরই লোক, এই কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেন না। আপনি পদ্মাসেতু দেখিয়ে, ফ্লাইওভার দেখিয়ে সাধারণ মানুষের পেটের আহার কেড়ে নিচ্ছেন সেটা কি মানুষ বুঝে না? মানুষ ঠিক মতোই বুঝে। শ্রমজীবী মানুষের কথা বলতে গিয়ে আজকে হুমায়ুন ইসলাম খান কারাগারে। কেউ সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলেই তাকে কারাগারে যেতে হচ্ছে।

‘ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রসঙ্গে’

রিজভী বলেন, আজকে ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন যে, ৭ জানুয়ারির ডামি যে নির্বাচন আমরা বলি সেই নির্বাচনে ভারত পাশে ছিলো বলে অন্যান্য দেশ কারসাজি করতে পারেনি।

আপনি সত্যি কথাই বলেছেন। কারণ আপনাদেরই সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী (একে এম আবদুল মোমেন) বলেছেন, দুই দেশের সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক। স্ত্রীর আবদার, অন্যায় আবদার, বিনাভোটে ক্ষমতায় থাকার আবদার স্বামী কেনো সেটাকে প্রত্যাখান করবে? স্বামী তো পাশেই থাকবে। ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনাদের ভাষাতেই আমি সেটি বললাম। এই আবদার তো ফেলতে পারে না। ভারত শুনি গণতান্ত্রিক দেশ… কিন্তু সে তো আওয়ামী সরকারের স্বামী… তো স্বামী স্ত্রীর কথাই শুনবে।

আরো পড়ুন: সংগ্রামের মাধ্যমে জনগণ তার অধিকার ফিরে পাবেই

জনগণের ভোটাধিকার, জনগণের নাগরিক অধিকার, জনগণকে বন্দি করা, ভোটের আগেই ২৫ হাজার বিএনপির নেতা-কর্মীকে কারাগারে পাঠানো …এরকম একটা নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে ভোটার শূণ্য নির্বাচন করে ওবায়দুল কাদের আপনার এতো বড় বড় কথা, এতো চিৎকার… প্রলাপগুলো তো মিথ্যা হয়নি সমাজে। চোরের মায়ের বড় গলা যারা ভোট চুরি করে তারা প্রকারান্তরে তারা যে চুরি করে সেটাই জানিয়ে দেয়… ওবায়দুল কাদের সাহেবের আজকের এই বক্তব্য এটা চুরিরই বক্তব্য। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের কারণেই একটা অবৈধ নির্বাচন, ভোটারশূণ্য নির্বাচন, গণধিকৃত নির্বাচন জনগনের বর্জিত নির্বাচন সেই নির্বাচনকে ভারত সমর্থন দিয়েছে সেই কথাটাই তিনি প্রকারান্তরে বললেন।

শনিবার সকালে ঢাকেশ্বরী মন্দির প্রাঙ্গনে পূজা উদযাপন কমিটির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ভারতের মান্যবর রাষ্ট্রদুত, আমাদের দু:সময়ে আমাদের পাশে ছিল, আজকে শত অপপ্রচারের মধ্যেও আমাদের নির্বাচন আমরা করেছি। বলুক কেউ ভারত হস্তক্ষেপ করেছে? কেন হস্তক্ষেপ করবে? অন্যান্য দেশের রাষ্টদূতরা যে পরিমান ছুটাছুটি করেছে। আমরা সেই ভুমিকায় ভারতকে দেখিনি। ভারতের হাইকমিশনার এই ধরনের ভুমিকায় যান নি।

তারা বলেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন বাংলাদেশ করবে, অন্য কারও হস্তক্ষেপ করার অধিকার নাই। সত্যি বলতে কি ভারত আমাদের পাশে ছিলো বলে দুনিয়ার অনেক শক্তিধর দেশ এখানে যে অশুভ খেলা খেলতে চেয়েছিলো, সেখানে ভারত আমাদের পাশে ছিল বলে অনেকে সাহস পাননি। নির্বাচন নিয়ে অশুভ খেলা খেলতে।

শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, আবদুস সালাম আজাদ, ফিরোজ উজ-জামান মামুন, মহানগর বিএনপি দক্ষিনের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, শ্রমিক দলের খন্দকার জুলফিকার মতিন, ফরিদ আহমেদ, হাজী বাহার উদ্দিন নোবেল, মিনার উদ্দিন, মোসলেম উদ্দিন বাবলু, মন্টু মেম্বার প্রমুখ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। 

এই সমাবেশ উপলক্ষে নয়াপল্টনে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন থাকতে দেখা যায়। যানবাহন চলাচল খোলা রেখেই এই সমাবেশ সড়কের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ফুটপাতের সামনে হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App