×

রাজনীতি

বাংলাদেশি নাগরিকের মৃত্যুতে সরকারকেই দুষছে বিএনপি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৫:৪৩ পিএম

বাংলাদেশি নাগরিকের মৃত্যুতে সরকারকেই দুষছে বিএনপি

মিয়ানমার থেকে আসা মর্টার শেলে বাংলাদেশি নাগরিকের মৃত্যুর জন্য সরকারকেই দুষছে বিএনপি। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, দেশের মানুষের নিরাপত্তা, দেশের নিরাপত্তা, দেশের সার্বভৌমত্ব শক্তিশালী থাকবে– এই ধরনের একটি প্রচেষ্টা আমরা দেখতে চাই। কেন আমাদের দেশের একজন নারী অন্য দেশের মর্টার শেলে মারা যাবে? উপযুক্ত জবাব কোথায়?

বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রিজভী এ কথা বলেন।

সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, একটা রিটেন প্রতিবাদ পর্যন্ত দিতে পারে না। কারণ হচ্ছে দুর্বল সরকার, জনসমর্থনহীন সরকার। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি যাদের কোনো অঙ্গীকার নেই। শুধুমাত্র ক্ষমতাকে আঁকড়ে রাখার জন্য রাষ্ট্রশক্তির ওপর নির্ভর করে যারা ক্ষমতা ধরে রেখেছেন, তারা এটাই করবে। তারা সকল প্রভুদেরকে ভয় করবে আর দেশের জনগণের দিকে বন্দুক দেখাবে, ভয় দেখাবে।

মিয়ানমারে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের তুমুল যুদ্ধ চলছে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে। ওপর থেকে মাঝেমধ্যেই মর্টার শেল ও গুলি এসে পড়ছে বাংলাদেশের বান্দরবান ও কক্সবাজারের সীমান্তবর্তী গ্রামে। এরকম এক ঘটনায় গত মঙ্গলবার বান্দরবনের ঘুমধুমে বসতঘরে মর্টার শেল এসে পড়লে এতে নারীসহ দুজনের প্রাণ যায়।

এ পরিস্থিতিতে আতঙ্কের মধ্যে অনেকেই ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি চলে যান। সরকারিভাবেও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়।

আরো পড়ুন: সর্বোপরি আমরা এদেশের মানুষের কাছে দায়বদ্ধ

মিয়ানমারের বিদ্রোহী আরাকান আর্মি কয়েকটি সীমান্ত চৌকি দখল করে নেয়ায় দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সেওয়া তিনশ সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের ফেরত পাঠাতে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করার কথা বলা হয়েছে সরকারের তরফ থেকে। 

সীমান্তের বিভিন্ন ঘটনায় সরকারের অবস্থানের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, বিএসএফের গুলিতে বিজেবি মারা গেলেও আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিবাদ করার সাহস দেখায় না। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্ত অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। সেখানে বাংলাদেশের নাগরিকরা চরম নিরাপত্তাহীনতায়। সীমান্তে বাংলাদেশি এলাকায় নারী-পুরুষ কেউ নিরাপদ নয়। জীবন যাচ্ছে মর্টারের শেলে। বাংলাদেশের চারিদিকে সীমান্ত এলাকায় এখন রক্তক্ষয়ী খেলা চলছে প্রতিবেশী দেশগুলোর ছোড়া অস্ত্রের আঘাতে। বাংলাদেশের মানুষের জীবন এবং ভূমি এখন অরক্ষিত।

পাশের দেশ থেকে দলে দলে লোক এবং অস্ত্র বাংলাদেশে অনুপ্রবিষ্ট হচ্ছে। আর বাংলাদেশ সরকারের অভিসন্ধিপ্রসূত নীরবতা মূলত দেশের মানুষকে নতজানু করার এক গভীর চক্রান্ত। প্রধানমন্ত্রীর শান্তির বাণী এখন দেশের সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলেছে। আমাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনী প্রতিদিনই পিছু হটছে আর তাতে বাংলাদেশের মানুষ বিপদের সম্মুখীন হচ্ছে।

‘শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ তামাশা’

নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘৭৫ সালের পর এবারের নির্বাচন সবচেয়ে অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে’। ইতোমধ্যে ডামি সরকারের তথ্য প্রতিমন্ত্রী মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও অপতথ্য রোধ জরুরি বলে একটি বক্তব্য দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য যে ডাহা অপতথ্য, সেটি রোধ করার ক্ষমতা কি প্রতিমন্ত্রীর আছে? কারণ তথ্য প্রতিমন্ত্রী তো ডামি নির্বাচনে আওয়ামী ডাহা অপতথ্যের প্রোডাক্ট। কারণ অপতথ্য বিতরণ করেই আওয়ামী দখলদার সরকার ক্ষমতা আঁকড়ে আছে। 

আরো পড়ুন: উন্নত রাষ্ট্র গঠনে সঙ্গি হতে চায় যুক্তরাজ্য

এই বিএনপি নেতা বলেন, গণতান্ত্রিক বিশ্ব কর্তৃক ধিক্কৃত, নিন্দিত ও দেশের জনগণ কর্তৃক ভর্ৎসিত ও প্রত্যাখ্যাত নির্বাচনকে শুধুমাত্র ডামি সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও তার মোসাহেবরা অবাধ ও সুষ্ঠু বলেছেন। শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ তামাশা হচ্ছে ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচন।

‘উনার বক্তব্য যাত্রাপালার সংলাপ’

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য নিয়ে কটাক্ষ করে রিজভী বলেন, রাজনীতি নিয়ে ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য যাত্রাপালার সংলাপের ঢংয়ে সস্তা বিনোদনে ভরপুর। এই ভদ্রলোককে দেখলাম, বর্তমান বিনাভোটের সরকারপ্রধানের কাছে লেখা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেনের একটি চিঠি নিয়ে প্রায় হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছেন। কাদের সাহেব বিএনপির প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেছেন, ‘এখন আপনাদের সাহসের উৎস কোথায়? কে সাহায্য করবে?

কি খুশি! কি উচ্ছলতা ওবায়দুল কাদের সাহেবের। এখানে জনগণ ফ্যাক্টর না, ফ্যাক্টর হচ্ছে উনার কাছে বিদেশে ধন্যবাদ দিলেন, অভিনন্দন দিলেন বিনাভোটের প্রধানমন্ত্রীকে। ওবায়দুল কাদের সাহেব, আপনার এই উল্লাসেই প্রমাণিত হয়, আওয়ামী সরকারের গণভিত্তি ধসে গিয়ে এর নেতারা আত্মমর্যাদা হারিয়ে ফেলেছেন। বিএনপির সকল রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস দেশের জনগণ।”

অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য তাহসিনা রুশদীর লুনা, কেন্দ্রীয় নেতা শামীমুর রহমান শামীম, আবদুল খালেক, বেলাল আহমেদ, আমিনুল ইসলাম, তারিকুল ইসলাম তেনজিং সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App