×

রাজনীতি

মান্না

সরকার পতনে আবারো ঢাকার রাস্তায় ‘জনতার মিছিল’ হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৬:৩৯ পিএম

সরকার পতনে আবারো ঢাকার রাস্তায় ‘জনতার মিছিল’ হবে

সরকার পতনে আবারো ঢাকার রাস্তায় ‘জনতার মিছিল’ হবে বলে মন্তব্য করেছেন মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেছেন, এই সংসদ কাজ করতে পারবে না। হতাশা ওদের মধ্যে, আমাদের নয়। মানুষ আমাদেরকে বলছে, আপনারা বলেছেন আমরা ভোট দিতে যাইনি। নিরীহ জনগণ সর্বাত্মক সমর্থক আমাদের জানিয়েছে। 

সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি এই মন্তব্য করেন। 

এসময় মান্না বলেন, আমরা এখন মানুষকে বলছি, সাহস করে রাজপথে মিছিলে আসেন। একদিন দেখবেন এই ঢাকা নগর মিছিলে মিছিলে সয়লাব হয়ে যাবে তখন আওয়ামী লীগের লোকদের খুঁজে পাবেন না। খুব বেশি দিন নেই। আমরা সেই লড়াই চালাচ্ছি, আমাদের মধ্যে ৭ জানুয়ারি কোনো হতাশা নাই। 

মান্না বলেন, ৭ জানুয়ারি তারা (আওয়ামী লীগ) কোনো ভোট করতে পারে নাই, ৭ জানুয়ারি সরকার পক্ষের কোনো অবস্থার পরিবর্তন হয়নি, বরঞ্চ অবস্থা আরো খারাপ হয়েছে। আমাদের অবস্থা ভালো হয়েছে কারণ আমরা জেনেছি, ৯৫ ভাগ মানুষ আমাদের পক্ষে আছে, তারা লড়াই করবে, লড়াই করছে। আগামী দিনে সেই লড়াই সংগঠিত করে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাবো। আমরা জয়যুক্ত হবো, সবাইকে আমাদের সাথে চাই। 

আরো পড়ুন: দুই মামলায় বিএনপি নেতা স্বপনের জামিন

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনে’র উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুসহ সকল রাজবন্দীর মুক্তির দাবিতে এই মানববন্ধন হয়।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, বাইডেন (যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট) সাহেব উনাকে চিঠি লিখেছেন, অত গুলগুলা ভাব হবার দরকার নাই। ও বলেছে, তোমাকে এশিয়া প্যাসিফিকের সঙ্গে যুক্ত করে আমরা সম্পর্ক রাখতে চাই। তার মানে আমার কথামতো চলতে হবে এবং আমার টাকা (যেসব প্রকল্পে বিনিয়োগ অর্থ) দিয়ে দিতে হবে। 

কিন্তু পিটার হাস (রাষ্ট্রদূত) বলেন, তারা বলছেন, ভোট কিন্তু ভালো হয় নাই। আর এই যে এতো বেশি গল্প করেন, চামচামি করেন দালালি করেন ভারত-রাশিয়া-চীন আমাদের পক্ষে আছে। কি রকম পক্ষে আছে বলেন তো। ভারত আর চীনের মধ্যে প্রতিযোগিতা তিস্তা যে কখন কাকে দিয়ে দেয় এই ভয়ে চীনের দিকে তাকিয়ে থাকে ভারত। ভারতের দিকে তাকিয়ে থাকে চীন। আর শেখ হাসিনার সরকার নিজেরাও খুব চালাক-চতুর তো দুই দিকে খেলার চেষ্টা করে। আমরা বলছি, খেলতে খেলতে এই খেলা শেষ হয়ে যাবে।

তার প্রমাণ হিসেবে বিদেশীরা ঋণের অর্থ শোধ করার তাগাদা দিচ্ছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিদেশ থেকে ঋণ করেছে ১০০ বিলিয়ন ডলার এই টাকা শোধ করতে পারবে কত দিনে, শোধ দেবার সময় হয়ে গেছে। এখন সবাই টাকা চাচ্ছে। আমেরিকা-ইউরোপ ওতো চাপ দেয় নাই কিন্তু চীন-রাশিয়া বলেছে, তোমার সাথে দোস্তি বন্ধুত্ব যাই থাকে টাকা দাও, সংবাদপত্রে এসেছে ওরা টাকা চায়।

আরো পড়ুন: শেখ হাসিনাকে বাইডেনের চিঠি, যা বললেন রিজভী

আপনাদের মনে আছে, আজ থেকে ৭ বছর আগে চীনের প্রেসিডেন্ট আমাদের দেশে এসেছিলেন তখন তিনি ২০ বিলিয়ন ডলার দিতে চেয়েছেন। ৭ বছরে কত দিয়েছেন, ৪ বিলিয়ন। এরপরও অনেক জায়গা থেকে আমেরিকা বলেন, জাপান বলেন, সব জায়গা থেকে বলছে এই সরকারের এখন কোনো বন্ধু নাই।

মান্না বলেন, আমি আপনাদের বলি, হতাশ হবার মতো কিছু নাই। হতাশ ওরা হবে কারণ ওরা ভোট করে হতাশ কারণ এরকম ভোট দুনিয়ার কেউ স্বীকার করেনি। ওরা ভোট করে হতাশ কারণ পুলিশ বুঝেছে, ব্যুরোক্রেসি বুঝেছে, পার্টি বুঝেছে এই ভোট ভোট নয়। এই ভোট করবার পরে জোট ভেঙেছে, এই ভোট করবার পরে নিজের দলের মধ্যে আম-জাম-ডাব গাছ সব এক… যেটা নৌকা, সেটাই ঈগল, সেটাই আবার ট্রাক দল আছে আর?

‘স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও নৌকার মার্কেট নাই’

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর বলেন, এখন বলছে, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নৌকা প্রতীকে করবে না সেজন্য স্থানীয় সরকারে প্রতীক তুলে দেয়া হচ্ছে। কেনো? আপনারা যখন স্থানীয় সরকার নির্বাচন করেছেন তখন আমরা বার বার বলেছিলাম এটা গ্রাম-ইউনিয়ন পর্যায়ে সহিংসতাকে নিয়ে যাবে। এখন তারা তুলে দিচ্ছে প্রতীক। কারণ নৌকা এখন মার্কেট পাচ্ছে না।

এতটা ঘৃণিত প্রতীকে পরিণত হয়েছে যে, নৌকা থাকলে মানুষ এখন ভোট কেন্দ্রে যাবে না। তাই তারা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নৌকা প্রতীক তুলে দিয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা বার বার বলেছি, আমাদের দেশের পরিবেশে দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। অনতিবিলম্বে রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার বিল পাস করুন, সুষ্ঠু নির্বাচন দিন। তারা গায়ের জোরে ক্ষমতা ধরে রেখেছে, তাদের জনভিত্তি নাই। সেই নির্বাচনে (৭ জানুয়ারি) প্রমাণিত র‌্যাব-পুলিশ-সেনাবাহিনীসহ সমস্ত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, টাকা পয়সার ছড়াছড়ি, ভারতের মন্ত্রী, রাষ্ট্রদূত, এদেশীয় ভারতীয় দালাল-এজেন্ট তাদের প্রচার-প্রচারণা সব মিলিয়ে তারা ১০% ভোটার ভোট কেন্দ্রে নিতে পারেনি। মানুষ এই সরকারকে ৫% সরকার বলে থাকেন, এটা একটা ফোরটোয়েন্টি সরকার।

সরকারকে বলতে চাই, এই ৫% জনসমর্থন নিয়ে ৯৫% গণতন্ত্রকামী জনতার নেতৃবৃন্দকে আপনারা কারাগারে আটকিয়ে রাখতে পারবেন না। আপনারা যদি কারাগারে আটকিয়ে রাখেন আপনারা করুণ পরিণতি নিয়ে আসবেন খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দুয়ারে পাঠিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদসহ আমাদের ছাত্র নেতা পীর আমিন মোল্লা, মাওলানা মামুনুল হক, জামায়াতের আমীর শফিকুর রহমানসহ সকল রাজবন্দীদের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। জেলখানায় অমানবিক আচরণ করছেন তাদের সাথে।

আরো পড়ুন: আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু মঙ্গলবার

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী নির্যাতিত হওয়ার ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুর বলেন, চিন্তা করতে পারেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা একটা হলে একজন নারীর স্বামীকে আটকিয়ে পাশের জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করে। এই সাহস হয় কিভাবে যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র লীগের নেতা যা ইচ্ছা তাই করবে। কিন্তু তারা করছে তো? তাদের বাধা দেয়ার কেউ নেই। এটা শুধু জাহাঙ্গীরনগর নয়, এরকম ঘটনা বাংলাদেশে অহরহ ঘটছে। 

আমরা রিসেন্ট পড়াশুনা শেষ করে এসেছি আমরা তো দেখেছি, হলের প্রোভোস্ট, হাউজ টিউটর, শিক্ষক কার্যত তারা ছাত্রলীগের নেতাকে সালাম দিতো এরকম একটা পরিবেশ। কারণ দেশ স্বাধীনের পর পর সেসময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ছিলেন, ছাত্ররা অটো প্রমোশনের জন্য ভাইস চ্যান্সেলরকে ঘেরাও করেছিলেন, বঙ্গবন্ধু যেটা শুনে তিনি ভাইস চ্যান্সেলরের কাছে ছুটে এসেছিলেন কথা বলার জন্য। তখন শিক্ষকদের মর্যাদা ছিল। আর আজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলররা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নোবেল বাতিলের দাবিতে রাস্তায় নামে, আজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলররা সংবাদপত্র বন্ধের দাবিতে শহীদ মিনারে দাঁড়ায় এই হচ্ছে আজকে ভাইস চ্যান্সেলর ও শিক্ষকদের লেভেল তো ছাত্রদের লেভেল কি করবে?

সংগঠনের সভাপতি কেএম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) আহসান হাবিব লিংক, লেবার পার্টির ফারুক রহমান, এনডিপির আবু তাহের, জাগপার রাশেদ প্রধান, বিএনপির আবদুস সালাম আজাদ, কাজী রওনুকুল ইসলাম টিপু, অন্যান্য সংগঠনের গিয়াস উদ্দিন খোকন, মিয়া মো. আনোয়ার, সারোয়ার রহমান সরকার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App