×

রাজনীতি

গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

এই সরকার ভারত-চীন-রাশিয়ার সরকার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ০৫:৫৫ পিএম

এই সরকার ভারত-চীন-রাশিয়ার সরকার

বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশের সরকার নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, এই সরকার ভারত, চীন ও রাশিয়ার সরকার। চীন, রাশিয়ায় তো গণতন্ত্রের বালাই নেই। আর ভারতে এখন যা চলছে, সেই আগের রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্য নেই।

মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ কারাবন্দি পেশাজীবী ও বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও ডামি সংসদ বাতিলের দাবিতে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি) এ মানববন্ধনের আয়োজন করেন।

গয়েশ্বর আরো বলেন, এই সরকার এবং জনগণের নিরাপত্তার জন্য যারা প্রজাতন্ত্রের বেতন নেয় আর সচিবালয়ে যারা বসেন প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-এরা একটি সম্মিলিত সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেট ১৮ কোটি মানুষের অধিকার হরণে এবং তাদের নাগরিক অধিকার বলতে যা আছে, সব অধিকার খর্ব করে একটি কর্তৃত্ববাদ চায়। এই কর্তৃত্ববাদী সরকারের চরিত্র কখনো গণমুখী হয় না। কর্তৃত্ববাদীরা কখনো মানুষের চোখের ভাষা, মনের ভাষা বুঝতে রাজি না। কারণ কর্তৃত্ববাদীরা কখনোই জনগণ কর্তৃক সমর্থিত হয় না। সে কারণে জনগণের প্রতি তাদের কোনো মায়া, মমতা অথবা সাংবিধানিক দায়িত্ববোধ কখনো জন্মায় না। এদের কর্তৃতবাদ মানেই হলো দেশের অর্থ-সম্পদ লুটপাট করা।

তিনি আরো বলেন, আজ সরকার এমনভাবে সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতিবাজ বানিয়েছে যে, এখন তারা দুর্নীতি না করলে চাকরি যায় অথবা দুর্নীতিতে সহায়তা না করলে চাকরি যায়। সুতরাং, আজ সংসদ সদস্য আর দুর্নীতিবাজরা যখন একাকার হয়ে যায়, তখন বাংলাদেশের অর্থনীতির বর্তমান চিত্র এটাই হওয়া স্বাভাবিক। বাংলাদেশের কোষাগার কেন শূন্য? ব্যাংকগুলোতে কেন টাকা নেই? উন্নয়নের মধ্যে এত স্বাদ কেন? উন্নয়নের অপর নাম দুর্নীতি-লুটপাট।

বিএনপি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মধ্যদিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন করে যাচ্ছে এবং করে যাবে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, আমরা রেকর্ড করতে পারিনি, এক সরকারের মেয়াদে ১৭৩ দিন হরতাল দেওয়ার। আমরা রেকর্ড করতে পারিনি, গানপাউডার দিয়ে শেরাটনের সামনে বাসে মানুষ মারার। আমরা এখনো দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারিনি চলমান পথিককে বিবস্ত্র করার। আমরা এখনো পারিনি লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ মেরে তার ওপর নাচ-গান করার। এসবের সংস্কৃতি কাদের মনে? যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। এই রাজনৈতিক সংস্কৃতি কাদের মনে, যারা জোর করে ক্ষমতায় থাকে।

৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরো বলেন, টুঙ্গিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর আসনে দুটি না তিনটি কেন্দ্রে ১০০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। তার মানে টুঙ্গিপাড়ায় মানুষ মরে না, অথবা গত পাঁচ বছরে কেউ মারা যায়নি, বিদেশে যায়নি, অসুস্থ হয়নি। আপনারা (সরকার) কিন্তু আপনাদের ফাঁদে পড়েছেন, আপনাদের কথার ফাঁদে পড়েছেন।

গয়েশ্বর বলেন, আজ আপনারা (সরকার) সংসদে বসবেন, বসেন। আপনাদের কাজ আপনারা করেন। আমাদের (বিরোধীদল) গণতান্ত্রিক অধিকার (বাস্তবায়ন) করতে দেন। আমাদের তো প্রতিবাদ জানানোর অধিকার আছে। আপনি শোনেন বা না শোনেন সেটি আপনার বিষয়। কিন্তু আজ আমাদের কোথাও কালো পতাকা মিছিল করতে দেবেন না, দেশের মানুষ ভালোর ভালো, খারাপের খারাপ, তাই মানুষকে খারাপ করার চেষ্টা করবেন না। আমরা শান্তিপ্রিয়, শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ জানাতে চাই।

বিএসপিপির আহ্বায়ক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সদস্যসচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আব্দুল কুদ্দুস, এ্যাবের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম রিজু, প্রফেসর ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমীন গাজী, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটের মহাসচিব রফিকুল ইসলাম, সিনিয়র অ্যাডভোকেট আবেদ রেজা, কৃষিবিদ শফিকুর রহমান, মৎস্যজীবী দলের সভাপতি মাহতাব, ন্যাবের সভাপতি বেগম জাহানারা সিদ্দিকী, ড্যাবের সাবেক মহাসচিব ডা. ওবায়দুল কবির খান, ডিইউজের সভাপতি শহীদুল ইসলাম, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ইদ্রিস আলী, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম প্রমুখ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App