×

রাজনীতি

মঈন খান

ভুয়া নির্বাচনে সংসদকে কুক্ষিগত করেছে সরকার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ জানুয়ারি ২০২৪, ০৫:৩৯ পিএম

ভুয়া নির্বাচনে সংসদকে কুক্ষিগত করেছে সরকার

ছবি: ভোরের কাগজ

ভুয়া নির্বাচনে সরকার সংসদকে কুক্ষিগত করেছে বলে অভিযোগ করেছেন মঈন খান। তিনি বলেছেন, এই সরকার তারা সমস্ত সংসদকে নিজেদের ইচ্ছামতো কুক্ষিগত করে নিয়েছে এই ভুঁয়া প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে এবং এটা আজকে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, ৭ জানুয়ারি কোনো নির্বাচন হয়নি।

বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই অভিযোগ করেন।

মঈন খান বলেন, আজকে জাতীয় সংসদের তিন’শ সিটের মধ্যে ২৯৯ সিটে কে বিজয়ী, কে জয়ী, কে পরাজিত সেগুলো নির্বাচনে নির্ধারিত হয় নাই…, এগুলো সব নির্ধারিত ঢাকার সর্বোচ্চ একটি টেবিলে সেখানে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে আগেই নির্ধারিত করে দেয়া হয়েছে কে কত ভোট পাবে, কে কত শতাংশ ভোট পাবে এবং কোন সিট থেকে কে নির্বাচিত হবে। এটা আর এখন আমাদের কথা নয়, দেশে বিদেশে সমস্ত প্রমাণসহ আজকে এটা বিশ্ববাসীর কাছে উদ্ভাসিত হয়েছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, এই সরকারের সবচেয়ে দুঃখজনক, লজ্জাজনক, কলঙ্কজনক বিষয় হচ্ছে এই যে, মানুষ ভোট চুরি করে গোপনে। এই সরকার ভোট ডাকাতি করেছে প্রকাশ্যে। তারা প্রকাশ্যে আলোচনা করেছে, সিট ভাগাভাগি করেছে…. কে কোন সিটে নির্বাচিত হবে সেটা নির্ধারণ করেছে প্রকাশ্যে। আজকে এই সরকার কোথায় নেমেছে সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

৫৭ দিন পর সকালে নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের প্রধান গেইটে তালা চাবি পুলিশ থেকে না পেয়ে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। গত ২৮ অক্টোবর এই কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশ পুলিশ পণ্ড করে দেয়ার পর পুলিশ কার্যালয়ের নেতা-কর্মীদের বের করে তালা দিয়ে চাবি নিয়ে যায়।

বিকেল তিনটায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসেন। 

সংবাদ সম্মেলনে গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোট কারচুপির ওপর দলের তৈরি সচিত্র তথ্যচিত্র উপস্থাপন করা হয়। সেখানে কিভাবে ভোট কারচুপি করা হয়েছে, কেন্দ্রে ব্যালট পেপারে সিল মারা হয়েছে, ভোটার বিহীন কেন্দ্রে সরকার দলীয় লোকজন কিভাবে ভোট বাক্সে ব্যালট পেপার ঢুকিয়েছে ইত্যাদি সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অপতৎপরতা এবং দেশী-বিদেশী মিডিয়ায় প্রচারিত ও প্রকাশিত রিপোর্টসমূহ তুলে ধরা হয়।

‘কেন্দ্রীয় অফিস বেদখলে ছিলো’

আবদুল মঈন খান বলেন, দীর্ঘ ৫৭ দিন পরে আমাদের নয়া পল্টনের অফিস খোলা হয়েছে। আপনারা জানেন, ২৮ অক্টোবর ক্রাকডাউনের পরে বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসটি সরকার বেদখল করে নিয়েছিলো। আজকে আমরা এখানে এসেছি জনগণের কথা বলার জন্য। আমরা রাজনীতি করি জনগণের জন্য, আমরা রাজনীতি করি জনগণকে নিয়ে এবং আমরা রাজনীতি করি জনগণের মঙ্গলের জন্য।

তিনি বলেন, বিএনপি একটি উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাসী। আমাদের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বলেছেন, জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস, আমরা জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাসী। সেই কারণে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুণঃপ্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আছি। যেভাবে একদিন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছিলেন এবং যেভাবে একদিন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এদেশে পার্লামেন্টারি গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। 

আমরা সেই আদর্শে আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা রাজপথে আন্দোলনে আছি, রাজপথে আন্দোলনে থাকব। ইনশাল্লাহ বিএনপি ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করে না, বিএনপি রাজনীতি করে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যে। ফলে আমরা সেই আন্দোলনে আমরা আছি, আমরা জনগণের ভোটের অধিকার, জনগণের অর্থনীতির সাম্যের অধিকার এবং জনগণের গণতন্ত্রের অধিকার আমরা ইনশাল্লাহ জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেবো এবং ভবিষ্যতে আমরা এমন একটি পরিবেশ বাংলাদেশে সৃষ্টি করব সেখানে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা হয়।

মঈন খান বলেন, দেশের মানুষের কাছে এবং বিশ্ববাসীর কাছে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে এটা প্রমাণিত যে, এই সরকার গণতন্ত্রের বিশ্বাস করে না, সরকার যেটাতে বিশ্বাস করে সেটা হচ্ছে একদলীয় বাকশালী শাসন। আমরা অতীতে বলেছি, এটা হচ্ছে অলিখিত বাকশাল। আজকে নির্বাচনের পরে যা দাঁড়িয়েছে সেটা অলিখিত বাকশাল ওয়ান।

আপনারা জানেন অতীতে সরকার একটি গৃহপালিত অপজিশন তৈরি করেছিলো… এবার তারা চেষ্টা করেছিলো গৃহপালিত অপজিশন তৈরি করতে গিয়ে তাদের নিজেদের মধ্যে একটা বোঝাপড়া করছিলো যে ২৬টি সিট নাকি তারা দিবে তৃতীয় পার্টি… জাতীয় পার্টি রয়েছে। বাস্তবে আমরা দেখেছি তারা বোধহয় ১১টি সিট পেয়েছে। 

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মনিরুল হক চৌধুরী, জয়নুল আবেদিন ফারুক, ফজলুর রহমান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, শিরিন সুলতানা, মীর নেওয়াজ আলী, সেলিম রেজা হাবিব, তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ নেতারা ছিলেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App