×

রাজনীতি

‘আমেরিকার আগ্রহের পেছনে গণতন্ত্র নাকি সেন্টমার্টিন’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৩, ০৮:৫৯ পিএম

‘আমেরিকার আগ্রহের পেছনে গণতন্ত্র নাকি সেন্টমার্টিন’
‘আমেরিকার আগ্রহের পেছনে গণতন্ত্র নাকি সেন্টমার্টিন’
  • আমেরিকা ভারতকে ডমিনেট করতে বাংলাদেশকে খেলার মাঠে নামাতে চায়

জাসদ সভাপতি, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, আমেরিকা যে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে নাক ডুবিয়েছে সে দেশের ধ্বংস শুরু হয়েছে ইতিহাসে তাই বলে। বিশ্ব মোড়ল পদে ভূ-রাজনৈতিক সামরিক স্বার্থে রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধ চাপিয়েছে, চীনের সঙ্গে থাইল্যাণ্ডের যুদ্ধের চেষ্টা করছে, আর বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ামারের যুদ্ধ চাপানোর চেষ্টা করছে। বঙ্গোপসাগরে সামরিক অবস্থান নেয়ার পায়তারা চেষ্টা করছে। আমাদের এখন ভাবার সময় এসেছে আমেরিকার এত উৎসাহের হেতু কি, গণতন্ত্র নাকি সেন্টমার্টিন?

যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে ডমিনেট করতে বাংলাদেশকে খেলার মাঠে নামাতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু। পাশপাশি রাশিয়া-ইউক্রেনের মতো বিশ্ব মোড়ল বাংলাদেশের কাঁধে বার্মা যুদ্ধ চাপানোর চেষ্টা করছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। আর বিএনপি নামক দলটি নিজের পায়ে দাড়াতে না পেরে বিদেশী বিভিন্ন মহলের কাছে গিয়ে খাল কেটে কুমির আনতে চেষ্টা করছে। তারা দেশের শত্রু, রাষ্ট্রের শত্রু জনগণের শত্রু, গণতন্ত্রের শত্রু, নির্বাচনের শত্রু।

সোমবার (১৯ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে হাসানুল হক ইনু এ মন্তব্য করেন। এসময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছিলেন। প্রধানমন্ত্রীও সংসদে উপস্থিত ছিলেন।

ইনু বলেন, জাতীয় সংসদের নির্বাচন এ বছরের ডিসেম্বরে ভোট। সংকটকালে যাতে চক্রান্তকারীরা যাতে হাল পানি না পায় সেদিকে সজর দিতে হবে। এ নির্বাচনকে ঘিরে কতিপয় বিদেশী রাষ্ট্রদূত ঘোট পাকাচ্ছে। আর বিএনপিকে দিকে মনে হচ্ছে এ নির্বাচনের আগে ক্ষমতার প্রশ্নে তারা একটা ফয়সালা করতে চায়। বিএনপি আবারো নির্বাচন বানচাল করতে চায়, দেশে তারা আবারো একটা সামরিক সরকার আনতে চায়। সংবিধান তারা ছিড়ে ফেলতে চাচ্ছে। আবারো রাজনীতির মাঠে জামায়াত-জঙ্গি এবং রাজাকারদের ফিরিয়ে আনতে চাচ্ছে। মনে রাখতে হবে বিএনপি জামায়াত একই হাতের এপিঠ-ওপিঠ।

তারা ‘৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে মিমাংসিত বিষয়কে বিতর্কিত করতে চাচ্ছে। বিএনপি হচ্ছে জঙ্গী, সাম্প্রদায়িকতার উৎপাদনের কারখানা। এভাবে রাজাকার-মুক্তিযোদ্ধাদের বিতর্ক চলতে থাকলে স্থায়ী শান্তি পাবেন না। বিএনপি জামাতকে বাধ্য করতে হবে মিমাংসিত বিষয়কে মানতে, না হলে রাজনীতির মাঠ থেকে বিদায় করতে হবে। রাজাকার ও জামায়াতের সঙ্গে সন্ধি ছাড়তেই হবে।

তিনি বলেন, এবারের বাজেট তাই আত্মমর্যাদা রক্ষার বাজেট। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের পদানত হয়ে যুদ্ধের ক্ষেত্রে পরিণত হবে নাকি নিজের পায়ে দাড়িয়ে স্বাবলম্বীতার পথে এগিয়ে যাবে সেই রাজনৈতিক ফয়সালা এ বাজেটের মধ্য দিয়ে প্রমাণ করতে হবে।

বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে ইনু বলেন, সংবিধান অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন হবে। নির্বাচনের ট্রেন চলতে শুরু করেছে, হয় নির্বাচনী ট্রেনে উঠুন, নয় কলার ভলায় চড়ে সাগরে ভেসে যান। এ ট্রেন থামানোর চেষ্টা করলে ট্রেনের তলায় কাটা পড়ে মারা যাবেন আপনারা। বাংলাদেশে আর ৭৫, ৮৬, ১/১১-এর মতো ভুতের সরকার, অসাংবিধানিক সরকার আর আসবে না।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা আমাদের শক্তিশালী আলোক বাতি। তবে শক্ত হাতে রাজাকার জঙ্গীদের কেউটের ছোবল থেকে দেশ, রাজনীতি বাঁচাতে হবে। আর কোন দরকষা কষি নয়, এ লড়াই দেশ বাঁচানোর লড়াই, সংবিধান বাঁচানোর লড়াই, গণতন্ত্র বাঁচানোর লড়াই, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে বাঁচানোর লড়াই, সবাইকে এই লড়াইয়ে সঙ্গী হবার আহ্বান জানান তিনি।

আমেরিকার আগ্রহীর পেছনে গণতন্ত্র নাকি সেন্টমার্টিন? ইনু এবারের বাজেটে কিছু রদবদল করার কথা বলেন। তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের দাম কমাতে হবে, মুদ্রাস্ফীতি কমাতে হবে, জনগণের ক্রয় ক্ষমতা বাড়াতে হবে, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে হবে, সামষ্ঠিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে হবে। বাজার সিন্ডিকেটের কারণে আজ ক্রেতাদের নাভিশ্বাস, ক্রেতারা জিম্মি।

বাণিজ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে ইনু বলেন, কেন পেঁয়াজের এলসি খুলতে দেরী হলো? এই কদিন উচ্চমূল্যে যে পেঁয়াজ আমাদের কিনতে হলো, তাকে কত কোট টাকা ব্যবসায়ীরা লুট করলো তার ভাগ কে পেয়েছে ? বাজার সিন্ডিকেট ভাঙার কোন পরিকল্পণা নেই কেন? বাজার প্রশাসনের নেই কেন ? আমি বলতে পারি শুধু মুরগির ডিম বাজারের সিণ্ডিকেট করে কাজিফার্ম, প্যারাগান, সিপি ৯৩২ কোটি টাকা লুট করেছে। লুটেরা ব্যবসায়ীরা আর কত মানুষ মারার পিছনে থাকবে। তিনি শুল্ক মাফ করে তদারকি বাড়ানোর তাগিদ দেন।

ইনু বলেন, সরকারের হাত কি সিন্ডিকেটের চেয়ে কম শক্তিশালী? সিন্ডিকেটের নেতাদের এক বারে ধরেন, আমরা জঙ্গিবাদ দমন করেছি, এবার সিন্ডিকেট হোতাদের ধরেন, নির্মূল করুন, ধ্বংস করুন। মানুষকে স্বস্তি দেন। অযোগ্য লোকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App